রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
পরিবারে সুখ ফেরাতে বিদেশে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শার্শার রনি শার্শায় গৃহবধূকে গনধর্ষণের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু মনিরামপুর প্রেসক্লাবের দাতা সদস্যের বোনের ইন্তিকাল মনিরামপুরে রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা আটোয়ারীতে কিন্ডারগার্টেনের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ পাঁচদোনা টু ডাঙ্গা চারলেন সড়ক অপরাধীদের অভয়ারণ্যে  চৌগাছায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত দৌলতপুরে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন চৌগাছায় ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপি নেতাকে পিটিয়েছে প্রতিবেশী পুলিশ সদস্য

লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকেই সমর্থন জানাতে পারে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘুরা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৩৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ভারতের লোকসভার নির্বাচন। এদিন প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হচ্ছে গোটা ভারতের ১০২ টি লোকসভা কেন্দ্রে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিন কেন্দ্র কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি। 

মোট সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন নেয়া হবে। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম ও শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন। পশ্চিমবঙ্গের মোট ৪২ টি আসনেও সাত দফায় নির্বাচন নেওয়া হবে। 

কিন্তু চলমান লোকসভার নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের মতো একটি ধর্মনিরপেক্ষ বিকল্প শক্তি থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যটির শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকেই সমর্থন জানাতে পারে রাজ্যটির মুসলিম সম্প্রদায়। বিজেপির উত্থান ঠেকাতে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দলের উপরই ভরসা রাখতে চাইছে প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটার।  

সংখ্যালঘু নেতাদের অভিমত বেশ কয়েকটি লোকসভা আসনে রাজ্যের মুসলিমরা মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছে বাম-কংগ্রেস জোটের চেয়েও একটি বিশ্বাসযোগ্য শক্তি হিসাবে দেখে তৃণমূলকে। রাজ্যটির মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং উত্তর দিনাজপুরের মতো মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলিতে এই প্রবণতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। 

চলমান লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে এককভাবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুসলিম রাজনৈতিক দল ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট’ (ISF)। এর ফলে সংখ্যালঘুদের কাছে পাওয়াটা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে। অন্যদিকে রাম মন্দিরের উদ্বোধন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু সহ কয়েকটি ইস্যুতে সংখ্যালঘুদের ভোট পাওয়াটা বিজেপির কাছেও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

ভারতে কাশ্মীর এবং আসামের পর দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলিম ভোটারের বাস এই পশ্চিমবঙ্গে। বর্তমান কয়েকটি কারণে তৃণমূল সরকারের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ থাকলেও ধর্মীয় সংখ্যালঘু নেতারা বিশ্বাস করেন তৃণমূলকে ভোট দেওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘু ভোট যাতে ভাগ না হয়ে যায় তা নিশ্চিত করতে ইমামরা তাদের সম্প্রদায়ের সদস্যদের কাছে এ ব্যাপারে আবেদনও রাখতে পারেন। কারণ এই সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হওয়ার কারণে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আখেরে লাভ হয়েছিল বিজেপির। 

কলকাতার রেড রোডে ঈদের নামাজের নেতৃত্ব প্রদানকারী ইমাম কাজী ফজলুর রহমান জানান, ‘সংখ্যালঘু ভোটে যাতে কোনো বিভাজন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। লোকসভার বেশিরভাগ আসনেই আমাদের সেরা পছন্দ তৃণমূল। আবার উত্তরবঙ্গের কিছু আসনে আমাদের পছন্দ বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীরা।’ 

পশ্চিমবঙ্গ ইমাম সমিতির সভাপতি মহম্মদ ইয়াহিয়ার অভিমত ‘মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে বাম-কংগ্রেস জোট ও তৃণমূলের প্রার্থীদের মধ্যে পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেওয়াটা সংখ্যালঘুদের কাছে খুবই কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে।’ 

তিনি আরো জানান ‘এই জেলাগুলিতে, সংখ্যালঘু ভোটের বিভাজনের ফলে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুর মালদা জেলাতে ভালো ফল করে বিজেপি। উত্তরবঙ্গের মালদা উত্তর এবং রায়গঞ্জ আসন দুইটিতে জয়লাভ করে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীরা। এই দুটি আসনেই মুসলিম ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪৫ শতাংশ। কিন্তু সংখ্যালঘু ভোগ ভোট ভাগের কারণেই ফায়দা লোটে গেরুয়া শিবির। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মত এবারও সংখ্যালঘুদের সমর্থন তৃণমূলের সাথেই থাকবে।’ 

প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটারের বাস পশ্চিমবঙ্গে ১৬-১৮টি লোকসভার আসন রয়েছে। যেখানে সংখ্যালঘুরা ফ্যাক্টর। স্বভাবতই এই সংখ্যালঘু ভোটকে কাছে টানতে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলেরই একটা মরিয়া প্রচেষ্টা থাকে। 

রায়গঞ্জ, কোচবিহার, বালুরঘাট, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, মুর্শিদাবাদ, ডায়মন্ড হারবার, উলুবেড়িয়া, হাওড়া, বীরভূম, কাঁথি, তমলুক এবং জয়নগরের মতো উত্তর বঙ্গ ও দক্ষিণ বঙ্গের বেশ কয়েকটি সংসদীয় আসনগুলিতে উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে।

রাজ্যের মুসলিম যুবকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করা ‘অল বেঙ্গল মাইনরিটি ইয়ুথ ফেডারেশনে’র সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান জানান  ‘বাংলায়, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে তৃণমূল সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য শক্তি।’ 

নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনের প্রতীচী ট্রাস্টের গবেষক সাবির আহমেদ মনে করেন যে মমতা সরকারের জনমুখী প্রকল্পগুলির কারণেই সংখ্যালঘুদের সমর্থন আদায় করতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। 

সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেসের দাবি জীবিকা, কর্মসংস্থান, দুর্নীতি, প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া (anti-incumbency), ধর্মীয়-জাতিগত ভাবাবেগ বৃদ্ধি- সহ বিভিন্ন ইস্যুর কারণে সংখ্যালঘুদের কাছ থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে তৃণমূল। আর তার ফলে ২০২৩ সালে সাগরদিঘী বিধানসভা উপনির্বাচনে হারতে হয়েছিল তৃণমূলকে। ওই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। যেটা তৃণমূলের কাছে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হয়। যদিও পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগদান করেন বাইরন। 

এ ব্যাপারে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম বলেন ‘সংখ্যালঘু ভোট আবার বাম এবং কংগ্রেসে ফিরে আসছে এবং সেটাই তৃণমূল এবং বিজেপিকে আতঙ্কিত করেছে।’ 

কিউএনবি/অনিমা/১৯ এপ্রিল ২০২৪,/রাত ৯:১১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit