শহিদ আহমেদ খান সাবের,সিলেট প্রতিনিধি : গত ৩১ মার্চ রাত সোয়া ১০টায় সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সর্বত্র ঘরবাড়ির চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ধনী-গরীব সবার টিনের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বই-পুস্তক, পড়ার ঘর, গবাদি পশুর ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও শিলাবৃষ্টির সময় অনেক মুসল্লি মসজিদ থেকে যাওয়ার পথে শিলার আঘাতে মাথা ফেটে আহত হয়েছেন। খোলা আকাশের নিচে অনেক পরিবার দিন যাপন করছেন। নি¤œবিত্তরা টিন কিনতে পারছেন না। মধ্যবিত্ত পরিবারের স্ত্রীর সোনা বিক্রি করে টিন কিনছেন। গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা সদরে সাড়ে ৪ হাজার টাকা টিনের বান ৭ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। এ দুই উপজেলায় প্রায় এক হাজার পরিবারের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের টিনের চাল ফুট হয়েছে। এই টিনগুলো কোন কাজে লাগানো যাবে না। কিন্তু নি¤œবিত্তরা টিন ক্রয় করে লাগানের সাধ্য তাদের নেই। আগামী ঈদুল ফিতরের খুশির কথা কেউ চিন্তা করছেন না। বরং ক্ষতিগ্রস্তরা নিজের জীবন বাঁচানোর সংগ্রামকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সরকার নির্ধারিত মূল্যে এই দুই উপজেলায় ব্যবসায়ীগণ নির্ধারিত মূল্যে টিন বিক্রি না করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। টিন কিনতে দোকানে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ লাইন ধরছেন। শিলার আঘাতে ফুটো টিনের ঘরে বৃষ্টির মধ্যে জীবনযাপন করছেন। কারো কারো বাড়ির টিনের চাল উড়ে গেছে। এমন ভয়াবহ চিত্র গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার উপজেলায় দেখা যাচ্ছে। এ কারণে হাজার খানিক পরিবার কষ্ট-দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। বিশেষ করে নি¤œ মধ্যবিত্তদের এসব ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। শিলা বৃষ্টির আঘাতে শত শত মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুই উপজেলায় ঘুরে ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা এই স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টির ফল দেখে বলেছেন, আগামীতে দেশে দুর্যোগ পরিবেশ সহনীয় টেকসই গৃহ নির্মাণ আবশ্যক হয়ে পড়েছে। বর্তমানে যে সব শিলাবৃষ্টি দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে, এ তুলনায় দেশের নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের বসতঘরগুলো দুর্বল।স্থানীয় পরিবেশ আন্দোলন কর্মী আব্দুল লতিফ সরকার বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্তরা নিরূপায় হয়ে গেছেন। তাদের সাহায্য সহযোগিতা করা হয়নি। সেজন্য অবিলম্বে সরকারি ভাবে এই দুই উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৭নং রনিখাই এলাকার ৯৫% বসত পরিবারের ৮০% মানুষ গরীব। গত দিনের শিলা বৃষ্টিতে তাদের ৮০ ভাগ ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আর বিয়ানীবাজার উপজেলার নি¤œ ও মধ্যবিত্তদের ঘরবাড়ির চালা ফুটো হয়েছে প্রায় ৭০ ভাগ।
কিউএনবি/অনিমা/০৩ এপ্রিল ২০২৪/রাত ৮:৫৫