বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন

তেতো করলায় কৃষকের মিষ্টি সুদিন

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪
  • ৪৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে করলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা আসছেন এ করলা গ্রামে। পাইকাররা এ গ্রাম থেকে করলা কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন। এদিকে উপজেলায় চাষকৃত করলা প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার মতো বিক্রি করা যেতে পারে বলে জানান স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের পাড়ের টং গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রামজুড়ে করলার মাচা। সবুজ পাতায় ঘেরা এ মাচার নিচে ঝুলছে করলা। কৃষকরা মাচা থেকে করলা সংগ্রহ করছেন। শুধু তাই নয়, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ গ্রামের করলা পাইকারদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে সারা দেশে।

স্থানীয় করলা চাষি মুহিবুর রহমান বলেন, সিজন অনুযায়ী টিয়া সুপারের করলা চাষ করে লাভবান হয়েছি। করলা চাষের কারণে এ গ্রামের নাম এখন করলা গ্রাম দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমরা সবাই লাভবান হয়েছি। বেকারদের কর্মসংস্থানের জায়গা হয়েছে। দেশের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। আমরা চাই দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে বিক্রি করতে। প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার কেজির মতো করলা বিক্রি হয়েছে। গাছ এখনও ভালো রয়েছে। আশা করছি আরও ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার করলা বিক্রি করতে পারবো। ৫ বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছি। আমার ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

হবিগঞ্জের বাহুবল থেকে আসা পাইকার মো. মাসুক মিয়া বলেন, আমরা প্রতিবছরই এখান থেকে করলা কিনি। ঢাকা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি। গত বছর থেকে এ বছর ফলন ভালো। বাজার দরও ভালো রয়েছে। রমজান হওয়াতে দাম কিছুটা কম। রমজান ছাড়া ভালো দামেই বিক্রি হয় করলা।  

করলা চাষি নুরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে লালতীরের হাইব্রিড টিয়া ও সুপার টিয়া জাতের করলা চাষ করছি। এ করলা চাষ করলে লাভবান হওয়া যায়। কোনো ক্ষতি হয় না। আর এগুলোর ফসলও ভালো। করলার ওজন অনেক ভালো হয়। এবার টিয়া সুপার চাষ করেছি। কিছু বিক্রি করেছি। আরও কিছু বিক্রি করা বাকি রয়েছে। গেছে বছরের তুলনায় এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি এ করলা গ্রামটি দিন দিন দেশের একটি রোল মডেল হয়ে যাবে। এটা দেখে অন্য গ্রামেও করলা চাষ বাড়বে। এখানে মূলত দুটি জাতের করলা চাষ হয়। একটি টিয়া ও আরেকটি টিয়া সুপার। ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফলন সংগ্রহ করা যায়। যার জন্য করলা চাষে অতি আগ্রহ এখানকার কৃষক। দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এখানে ছুটে আসেন। বিভিন্ন আড়ৎদাররা এখানে এসে করলা সংগ্রহ করে সরাসরি ঢাকা ও চট্টগ্রামে নিয়ে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পাড়ের টং গ্রামটি মূলত কৃষি অধ্যুষিত এলাকা। এ গ্রামটিতে কৃষকরা ১০ থেকে ১২ বছর ধরে লালতীরের হাইব্রিড টিয়া ও টিয়া সুপার করলা চাষ করছেন। এ বছর বৃষ্টি একটু কম হয়েছে। তারপরও অন্যান্য বছর থেকে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। টিয়া একটি দিবস নিরপেক্ষ হাইব্রিড জাত। এটা মূলত আগাম মৌসুমে এ এলাকার কৃষক চাষ করেন। অধিক লাভবান হন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন বলেন, চলতি বছর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে করলা চাষ করা হয়েছে। করলা চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এর উৎপাদন বাড়ছে। আমরাও প্রান্তিক কৃষকদের পরামর্শসহ নানা কৃষি উপকরণ দিয়ে সহায়তা করে থাকি।  

মৌসুম এখন আরও দেড় থেকে দুমাস বাকি রয়েছে। যদি কালবৈশাখি ঝড় না হয় তাহলে আনুমানিক দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার মতো করলা বিক্রি করা যেতে পারে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩১ মার্চ ২০২৪,/দুপুর ১২:৪৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit