রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন

রোজা থাকা অবস্থায় সন্তানকে দুধ পান করানো যাবে কি?

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪
  • ১০৭ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : ইসলামে সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এমনকি মাতৃদুগ্ধের ওপর সন্তানের অধিকারের কথাও বলা হয়েছে। সামনে আসছে পবিত্র রমজান মাস। এ সময় অনেক মা প্রশ্ন করেন, রোজা থাকা অবস্থায় সন্তানকে দুধ পান করানো যাবে কি না? এর উত্তর হলো, নিশ্চয় যাবে এবং এতে রোজা বা মায়ের শরীরের কোন ক্ষতি হবে না।

* নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন

রোজায় সুস্থ থাকার জন্য নিজেকে হাইড্রেটেড রাখার কোন বিকল্প নেই। অনেকেই শুধু সেহরিতেই বেশি করে পানি পান করেন। এটা না করে ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। মায়ের শরীর ডিহাইড্রেড হলেই কেবল শিশুর জন্য দুধের সরবরাহ কম হতে পারে। ইফতারের পর থেকেই তাই অল্প অল্প করে পানি পান করা শুরু করা দরকার। শুধু পানি খেতে ভালো না লাগলে শরবত, ডাবের পানি বা ফলের রসও পান করতে পারেন।

* সেহরিতে মনোযোগ দিন

স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য সেহরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোন ভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। ধীরে ধীরে হজম হবে এবং শক্তি বাড়াবে এমন খাবার যেমন-গমের আটার রুটি, লাল চালের ভাত, ওটস ইত্যাদি খাওয়া যায়। কিছু প্রোটিন ও সঙ্গে শাকসবজি এবং ফলও সেহরিতে খাওয়া দরকার।

* স্বাস্থ্যকর ডায়েট

বেশি ভাজা খাবার ইফতারে পরিহার করুন। স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য ইফতার অন্যদের তুলনায় আলাদা হওয়া বাঞ্ছনীয়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বছরের অন্য সময়ে যে স্বাভাবিক খাবার যেমন-দুপুরে খাবার খেতেন তেমন খাবারই ইফতারে খাওয়ার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ ভাত, সঙ্গে বিভিন্ন রকমের শাকসবজি ও কিছু মাছ অথবা মাংস খেতে পারেন। পানির চাহিদা পূরণের জন্য পান করুন পানি, শরবত এবং ফলের রস। ইফতারিতে এমন সব খাবার নির্বাচন করুন যা দিয়ে সব ধরনের খাদ্য উপাদানের চাহিদা পূরণ হয়। একই সঙ্গে অবশ্যই বেশি ভাজা ও মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন সঙ্গে অতিরিক্ত মাত্রায় ডেজার্ট খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। এভাবে ইফতারির খাবার নির্বাচন করলে মায়ের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে আর শিশুও পর্যাপ্ত দুধ পাবে।

* ল্যাকটোজেনিক খাবার

কিছু ল্যাকটোজেনিক খাবার স্তনে দুধ বৃদ্ধিতে কার্যকর। যেমন মেথি, মৌরি, ওটমিল, কালিজিরা, ল্যাক্টেশন চা, বার্লি ওয়াটার, বাদামি চাল, কাজু, বাদাম ইত্যাদি। এ খাবার মায়ের খাদ্য তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যাতে দুধ সরবরাহ বজায় থাকে।

* খাবারের তালিকায় খেজুর রাখতে পারেন

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়াম রয়েছে এবং এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীরে শক্তি দ্রুত বাড়াতে পারে। তাই ইফতার এবং সেহরির সময় খাবারের তালিকায় খেজুর রাখা যেতে পারে।

* পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন

সারাদিন রোজা থাকার পর স্বাভাবিকভাবেই সন্ধ্যায় মা ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। তাই সাংসারিক কাজগুলো বিকালে বা সন্ধ্যায় না করে সকালের দিকেই করে ফেলার চেষ্টা করুন। যদি স্তন্যদানকারী মা নাও হন তারপরেও চেষ্টা করুন গৃহস্থালির কাজগুলো সকালের দিকে করার।

স্তন্যদান অব্যাহত রাখুন

মায়ের শরীরে চাহিদার ওপর নির্ভর করে দুধের সরবরাহ। তাই শিশুকে বারবার স্তন্যদান অব্যাহত রাখুন। সন্তান পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে কি না তা লক্ষ রাখুন। শিশু যদি দিনে ৬/৭ বার প্রশ্রাব করে তাহলে ধরে নেওয়া যায়, সে পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে। তবে শিশু লাগাতার কান্না করলে, ওজন কমতে থাকলে এবং ২৪ ঘণ্টায় ৬/৭ বারের কম প্রশ্রাব করলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে শিশুর খাবার চাহিদা পূরণ করতে হবে।

* চা-কফি এড়িয়ে চলুন

রোজা রেখে দুধ চা বা কফি না খাওয়া ভালো। কারণ, এ খাবারগুলো তরল হলেও শরীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তবে একান্তই চায়ের তৃষ্ণা জাগলে হালকা লিকারের রঙ চা খেতে পারেন। সেসঙ্গে নিয়ম করে এক গ্লাস দুধ অবশ্যই পান করুন। সবকিছুর পর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ঘুম। ইবাদত ও সন্তান লালন পালনের পাশাপাশি নিজের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা করুন।

লেখক : গাইনী ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, হার্টবিট ফার্টিলিটি ক্লিনিক, গ্রীণ রোড, ঢাকা

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৯ মার্চ ২০২৪,/দুপুর ২:১৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit