শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন

এক দেশের বর্ণে আরেক দেশের ভাষা

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৮৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কিশোরীদের লম্বা লাইন। মাথায় স্কার্ফ, পরনে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। হাতে মস্ত বড় বোর্ড। রং-বেরঙের কালিতে লেখা কোরিয়ান শব্দ। অক্ষরগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার হলেও ভাষা ইন্দোনেশিয়ার। আশ্চর্যজনক হলেও এটিই সত্যি! নিজেদের ভাষা বাঁচাতে কোরিয়ান বর্ণের আশ্রয় নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার এই উপজাতি গোষ্ঠী।

ইন্দোনেশিয়ার সিয়া-সিয়া উপজাতির নিজস্ব ভাষার নাম ‘বাওবাও’। তাদের এ ভাষাটি ল্যাটিন বর্ণমালায় অনুবাদ করা যায় না। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ভাষাটি কোরিয়ান হাঙ্গুললিপির সঙ্গে মিলে যায়। ১৫ শতকে বিকশিত হাঙ্গুললিপিতে এমন একটি অস্বাভাবিক হাতিয়ার রয়েছে, যা ‘বাওবাও’ ভাষাটিকে সংরক্ষণ করতে পারে। দুই দেশের ভাষাতত্ত্বের এই যোগসূত্র বের করেন কোরিয়ান ভাষাতাত্ত্বিকরা। তারা হাঙ্গুলের শব্দভিত্তিক সিস্টেমকে ভালোভাবে গবেষণা করার পর বাওবাও-এর সঙ্গে মিল খুঁজে পান।

এরপরই ইন্দোনেশিয়ার একদল শিক্ষক এবং ছাত্রকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানো হয়। উদ্দেশ্য- তাদের নিজস্ব ভাষাটি লেখার এবং শেখানোর একটি আদর্শ উপায় বের করা। হাঙ্গুলের ওপর প্রশিক্ষণ নিতে শিক্ষক আবিদীন (৪৮) দক্ষিণ কোরিয়ায় ছয় মাস কাটিয়েছে। হাঙ্গুল এবং বাওবাও-এর যোগসূত্র দেখাতে তিনি বলেন, ‘উদাহরণস্বরূপ ল্যাটিন শব্দে ‘ফা’ বা ‘টা’ ধ্বনি উচ্চারণের কোনো সম্মত উপায় নেই। কিন্তু কোরিয়ান ভাষা শেখার পর দেখা গেল ভাষাটির জন্য কোরিয়ান অক্ষর আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা (ভাষাগুলো) ঠিক একই নয়, তবে তারা একই রকম।’

প্রশিক্ষণ নেওয়া এক ছাত্র সারিয়ান্টো বলেন, ‘সিয়া-সিয়াদের ভাষার সংরক্ষণের জন্য নতুন এক মাধ্যম তৈরি হয়েছে। হাঙ্গুল প্রবর্তনের আগে সিয়া-সিয়া জনগোষ্ঠীর অনেকে আনুষ্ঠানিক পরিবেশে স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করার বিষয়ে কিছুটা দ্বিধাবোধ করত। তবে হাঙ্গুল বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বলছে- আমাদের সিয়া-সিয়ানদের ভাষা বিশ্বব্যাপী হয়ে গেছে।’ বর্তমানে দেশটির ৮০,০০০ উপজাতি নিজেদের ঐতিহাসিক ভাষাটিকে রক্ষা করতে পেরে আনন্দিত।

ইন্দোনেশিয়ার সানাতা ধর্ম ইউনিভার্সিটির ভাষাবিদ দালান মেহুলি পেরাঙ্গিন-অঙ্গিনের (৫০) মতে উপজাতিদের ভাষা সংরক্ষণের বিষয়টি তাদের তীব্র আকাক্সক্ষাকে চিত্রিত করেছে। তিনি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ান এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার প্রভাবের কারণে অনেক শব্দ হারিয়ে গেছে। এটি প্রায় ২০ বছর ধরে হচ্ছে। হাঙ্গুল ব্যবহার করার জন্য ইন্দোনেশিয়ায় বাওবাওই একমাত্র জায়গা। ভাষায় আমাদের পূর্বপুরুষদের স্মৃতি, ইতিহাস, নৈতিকতা এবং প্রজ্ঞা রয়েছে। একটি ভাষার লিপি একটি উত্তরাধিকার।’

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৫ ডিসেম্বর ২০২৩,/রাত ১১:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit