শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
স্বামীর মৃত্যুর ১২ মিনিট পর স্ত্রীর মৃত্যু স্বামীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্ত্রীর মৃত্যু যশোর শিক্ষা বোর্ডে এসএসসিতে মেধাবৃত্তি পেল ২৭৮০ শিক্ষার্থী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানে ত্রাণ পাঠালো বাংলাদেশ লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে পুরস্কার ঘোষণা করলো পুলিশ ভাতিজা তামিমের জন্য ‘মাঠ’ ছাড়লেন চাচা আকরাম ঢাকার তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস কিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে উচ্ছ্বাস প্রকাশ শি জিনপিংয়ের লালমনিরহাটে বহুল আলোচিত একাধিক ক্লুলেস ছিনতাই মামলার আসামি রানা গ্রেপ্তার বৃষ্টি হবে কবে জানাল আবহাওয়া অফিস আফগানিস্তানে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প

আমলে সালেহ কী?

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৭৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। ইবাদত কী? ইবাদতের প্রথম শর্ত হলো ইমান। আল্লাহর একাত্মবাদে বিশ্বাস করা। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় মানা ও অন্তরে বিশ্বাস করা এবং রসুল (সা.)-এর আদর্শ মেনে জীবন পরিচালনা করা। মুখে মুখে ইমানদার দাবি করলে হবে না, হৃদয়ের গভীরতা দিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং পাশাপাশি ইমানি আকিদাগুলো নিজ জীবনে অনুসরণ করতে হবে। আমরা যদি জানতে চাই, আমল কি ইমানের অংশ? 

আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আসলে মোমেন হচ্ছে সেসব লোক, যখন আল্লাহর নাম নেওয়া হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে এবং যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতগুলো তেলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ইমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের মালিকের ওপর ভরসা করে।’ (সুরা আনফাল-২)

পরবর্তী আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং তাদের অর্থ, সম্পদ থেকে তারা তা আল্লাহর পথেই ব্যয় করে।’ (সুরা আনফাল-৩)। সুতরাং এ আয়াত দুটির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো কী আমল করলে আমলে সালেহ হবে বা নেক আমলই বা কী? মনে রাখতে হবে, যিনি যত বেশি নেক আমল করেন, তার ইমানের সঙ্গে তত বেশি নুর বা আলো যোগ হয়। ইমানের মূল দাবিই হলো বেশি বেশি নেক আমল। কেউ যদি ইমান আনার পর আমলে সালেহ না করে, তাহলে বুঝতে হবে তার ইমানের মধ্যে দুর্বলতা আছে। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ইমান আনে এবং নেক কাজ করে, আল্লাহ তাদের সবাইকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাদের জন্য তাঁর কাছে রয়েছে বিশেষ ক্ষমা ও বড় পুরস্কার।’ (সুরা মায়েদা-৯)

আমলে সালেহ বলতে কী বুঝি? আমলে সালেহ হলো আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের জন্য কোরআনে যেসব নেক আমল সহিহ ও শুদ্ধভাবে পালন করার জন্য বলেছেন এবং পাশাপাশি রসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণের তাগিদ দিয়েছেন, সেটাই হলো আমলে সালেহ। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে যে আমল গ্রহণীয় এবং সঠিক পদ্ধতিতে যা আমল করা হয়। আমরা যদি নেকি হাসিলের জন্য মনগড়া পদ্ধতিতে শুধু আমল করি তাহলে তা নেকির পরিবর্তে গুনাহ হাসিলের আশঙ্কাই বেশি। তাই আমাদের নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, দান-সদকা সব আল্লাহ ও রসুলের আদেশ-নিষেধ মেনে করতে হবে। তাহলেই তা হবে নেকি হাসিলের সহজ পথ। এবং এর মাধ্যমে আমরা জাহান্নামের শাস্তি থেকে নাজাত পেতে পারি। তাহলে এখন মনে প্রশ্ন জাগে, কোন আমল করলে আল্লাহ অধিক খুশি হন? 

সাধারণভাবে যদি আমরা চিন্তা করি এ পৃথিবীতে যখন কোনো সরকারপ্রধান নিজ দেশ থেকে অন্য দেশ সফর করেন কিংবা অন্য দেশের সরকারপ্রধান ভ্রমণে বা সরকারি সফরে আসেন তখন সেই সরকারের সবাই অতিথিবরণে কী না পেরশান হয়। কোথাও যেন কোনো ত্রুটি না থাকে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকে, এমনকি তিনি কী খেতে পছন্দ করেন, কী ভালোবাসেন তা জানার জন্য সচেষ্ট থাকেন এবং সে আলোকে সবকিছুর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ঠিক তেমনি আল্লাহ আমাদের ভালোবাসেন বলেই তিনি কোরআনে আমাদের জন্য সবকিছু স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিস আমরা সঠিকভাবে পড়ে ও বুঝে যদি জীবন পরিচালিত করতে পারি, তাহলেই আমরা আল্লাহকে খুশি করতে পারব। আল্লাহ আমাদের সবার ওপর দয়াপরবশ হবেন, যেহেতু আল্লাহ পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল। 

কোরআনে আল্লাহ বলেন, যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত আদায় করে, আল্লাহ ও শেষ দিনের ওপর ইমান আনে মূলত এরাই হচ্ছে সেসব সৌভাগ্যবান মানুষ, যাদের অচিরেই আমি বড় পুরস্কার দেব।’ (সুরা নিসা-১৬২)। 

আমলে সালেহর ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, ‘পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যে যে ব্যক্তিই কোনো নেক কাজ করবে, এ অবস্থায় যে, সে হবে একজন যথার্থ মোমেন, তাহলে অবশ্যই তাকে আমি দুনিয়ার বুকে পবিত্র জীবনযাপন করাব এবং আখেরাতের জীবনেও আমি তাদের দুনিয়ার জীবনের কার্যক্রমের অবশ্যই উত্তম বিনিময় দান করব।’ (সুরা আন নহল-৯৭)

আমাদের মনে রাখতে হবে, ইমান হচ্ছে আল্লাহ রব্বুল আলামিনের দেওয়া বুনিয়াদি বিধিবিধানের ওপর পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা আর আমলে সালেহ হচ্ছে সেই বিধানাবলি অনুসারে আমল করা ও এগুলোর বাস্তবায়ন করা। সুরা আল আসরে আল্লাহ বলেন, ‘প্রকৃতই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততার মাঝে নিমজ্জিত, কিন্তু তারা ছাড়া, যারা ইমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে।’ (আয়াত ২-৩)।

ইসলামবিষয়ক গবেষক ও চিন্তাবিদদের মতে, যে উত্তম বিষয়গুলো সঠিকভাবে পালন করলে আমলে সালেহর অন্তর্ভুক্ত তা হলো ১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা ২. সঠিকভাবে নামাজ আদায় করা ৩. রোজা পালন করা ৪. জাকাত দেওয়া ৫. আর্থিক সংগতি থাকলে আল্লাহর ঘর কাবায় হজ করা। সুতরাং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি, আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা লাভ, দীনি শিক্ষা অর্জন করাই হলো আমলে সালেহর পূর্বশর্ত। বেশি বেশি নেক আমল বা সৎ কাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের ইমান যদি মজবুত করতে পারি তাহলে আমলে সালেহর ভিত্তি হবে মজবুত ও দৃঢ়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দান করুন।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার

কিউএনবি/অনিমা/২৫ ডিসেম্বর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৭:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit