মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন

সব সংঘাতের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিতের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৬১ Time View

ডেস্ক নিউজ : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমেই সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব। সকল ধরনের সংঘাতের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিতকরণ এবং নির্যাতিত ও নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান তিনি।

আজ রোববার মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর একটি হোটেলে আলোচনা সভায় ভাষণদানকালে এ আহ্বান জানান তিনি।

সম্প্রতি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নির্বিচারে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, শিশু হত্যা ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সংঘাতের ঘটনায় চরম দুঃখ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইসাথে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান।

বিশ্বের যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে সেখানেই দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল দেশ, মানবাধিকার সংস্থা ও মানবাধিকার কর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হবেন বলেও আশা করেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মানবাধিকার শাশ্বত ও সর্বজনীন অধিকার কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটা সত্য যে, বিরাজমান বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি বিবেকবান যে কোনো মানুষকেই ব্যথিত করবে। অনেক দেশ ও সংস্থা মানবাধিকারের নামে দ্বিচারিতায় লিপ্ত হচ্ছে।’

রাষ্ট্রপ্রধান সকল মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে মানবাধিকার রক্ষায় সদা সজাগ থাকার ও পরামর্শ দেন। দেশের যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে সেখানেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপস্থিতি নিশ্চিত করারও জোর তাগিদ দেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র ও দলমত নির্বিশেষে কমিশনকে নির্যাতিতদের পক্ষে এবং নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র সহ সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে মানবাধিকার চর্চা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, কমিশন যাতে শোষিত ও নির্যাতিতদের কাছে আস্থা ও ভরসার প্রতীকে পরিণত হতে পারে সে লক্ষ্যে কমিশনকে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং নির্যাতনকারীদের শাস্তি দানে সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।  

বাংলাদেশে মানবাধিকার সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা ও প্রকাশনা বৃদ্ধি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের উপরে সার্বক্ষণিক নজরদারি বৃদ্ধি, মানবাধিকার বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি ও অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কমিশনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার কথাও বলেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন,‘মানবাধিকার সুরক্ষায় পারস্পরিক সংলাপ, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ শিক্ষা ও প্রচারসহ সহযোগিতা বৃদ্ধির সকল কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, সমাজের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ও মতাদর্শের ব্যক্তি, যেমন-মসজিদের ইমাম, ধর্মগুরু, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে মানবাধিকার প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত করা গেলে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।

রাষ্ট্রপতি আশা করেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সকল মানবাধিকার কর্মী, সংস্থা ও অংশীজনদের নিয়ে একযোগে কাজ করে গণমানুষের আকাক্সক্ষা পূরণে শক্তশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মহান ব্রত নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমৃত্যু আন্দোলন করেছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক ও মহানায়কের মানবাধিকার সংগ্রামের ফসল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাস, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ বিস্তার, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক নানা সূচকে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষ করে, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি সংকট মোকাবেলায় দূরদর্শী নেতৃত্ব ও মানবিকতার জন্য বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে প্রশংসিত হয়েছে। 

তিনি বলেন, শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও বাংলাদেশ মানবাধিকার সুরক্ষায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল হক এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মোঃ সেলিম রেজা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

কিউএনবি/অনিমা/১০ ডিসেম্বর ২০২৩/বিকাল ৩:০৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit