আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিউজউইকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তি অনুসারে নিরাপত্তাখাতে এখন পর্যন্ত আমেরিকা থেকে প্রায় ১৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য পেয়েছে ইসরাইল। এর মধ্যে শুধুমাত্র সামরিক খাতেই এসেছে ১২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা মোট সহায়তার প্রায় ৭৮ শতাংশ।
চলমান ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন ও কংগ্রেসের সদস্যরা হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ইসরাইলকে সমর্থন করছে। গত ৮ নভেম্বর জো বাইডেনের কাছে পাঠানো সিনেট সদস্যদের এক চিঠির সূত্রে জানা যায়, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে নির্ধারিত অর্থের সঙ্গে আরও ১৪ বিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার।
এদিকে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিচালনা করতে প্রতিদিন ইসরাইল সরকারকে ২৬০ মিলিয়ন ডলার খরচ করতে হচ্ছে বলে সম্প্রতি বার্তাসংস্থা ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। যেভাবে অর্থ ব্যয় হচ্ছে তাতে করে শিগগিরই এর নেতিবাচক প্রভাব দেশের মানুষের ওপর পড়বে। ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিক জানিয়েছেন, দেশটি চলতি বছরের বাকি সময়ের জন্য আলাদা বাজেট প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এছাড়া ২০২৪ সালের বাজেট প্রণয়নে এখন থেকেই যুদ্ধের বিষয়টি মাথায় রাখতে হচ্ছে তাদের।
আর হামাসের সঙ্গে চলমান এ যুদ্ধ ২০২৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে ইসরাইলের প্রায় ৫৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। এমনটাই পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক অব ইসরাইল জানায়, এই অর্থের অর্ধেকেরও বেশি ব্যয় হবে প্রতিরক্ষা খাতে। পাশাপাশি কর রাজস্ব হারানোরও আশঙ্কা করছে তারা। গত ২৭ নভেম্বর ব্যাংক অব ইসরাইলের গভর্নর আমির ইয়ারন জানিয়েছেন, নিরাপত্তা ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকারের ব্যয় বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে বাড়বে সুদহার।
এদিকে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। দীর্ঘ দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে হামলা চালানোর পর মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর দুই দফায় মোট তিন দিন বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। যুদ্ধবিরতির মধ্যে চুক্তি মেনে মোট সাতবার বন্দি বিনিময় হয়েছে। এরপর ১ ডিসেম্বর এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আবারও গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করেছে ইসরাইলি সেনারা।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ হজার ২০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।আর আহত হয়েছেন ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের মহাপরিচালক বলেছেন, ‘গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।’উত্তর গাজা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার পর এবার দক্ষিণ গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গত দুদিন ধরে গাজার মসজিদ, ঘরবাড়ি ও হাসপাতাল লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। মূলত পুরো গাজাজুড়েই হামলা চালানো হচ্ছে।
কিউএনবি/আয়শা/০৪ ডিসেম্বর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৭:২১