শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

কেন বাড়ছে আত্মহত্যা? কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৩৩ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, প্রিয়জনকে হারিয়ে ফেলা, আর্থিক বা আইনগত ঝামেলা, দীর্ঘস্থায়ী ব্যর্থতা বা মানসিক চাপে পড়ার মতো সমস্যায় পড়লে মানুষের জীবনের নেমে আসে চরম হতাশা। আর সেই হতাশা মারাত্মক পর্যায়ে গেলে মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকে।

যেকোনো কারণে প্রচণ্ড মানসিক আঘাত পেলে কিংবা কোনো মারাত্মক শারীরিক সমস্যা ধরা পড়লেও অনেক ক্ষেত্রে আত্মহত্যার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া কিছু মানসিক সমস্যাতেও এ প্রবণতা দেখা দেয়।

আত্মহত্যার কারণ

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের প্রায় সবাই (৯০ শতাংশ) বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত থাকেন। বিশেষ করে বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশনে ভোগা রোগীরা বেশীরভাগ আত্মহত্যা করেন।

এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে মারাত্মক শারীরিক সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল রোগ, ক্যান্সার বা শরীরের অঙ্গহানি থেকে সৃষ্ট মানসিক সমস্যার কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী-পুরুষের আত্মহত্যার কারণ অনেক সময় আলাদা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বেশীরভাগ নারী যৌন বা শারীরিক নির্যাতনসহ পারিবারিক সহিংসতার ভুক্তভোগী হয়ে আত্মহত্যা করে থাকে।

এ ছাড়া শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয় হতাশা এবং মানসিক চাপের কারণে। শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের ইতিহাস, অ্যালকোহল বা মাদকে আসক্ত, অতিরিক্ত সামাজিক চাপ (পড়াশোনা বা বিয়ে) ইত্যাদির কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়।

আত্মহত্যার লক্ষণ

যে ব্যক্তি আত্মহত্যার কথা ভাবছেন বা পরিকল্পনা করছেন, তাদের কথাবার্তা, অনুভূতি এবং আচরণে পরিবর্তন দেখা যায়। নিচে এমন কিছু পরিবর্তন দেয়া হল,

১. বার বার আত্মহত্যা সম্পর্কে কথা বলা বা আগ্রহ প্রকাশ করা।

২. সামাজিক যোগাযোগ থেকে সরে আসা এবং বেশীরভাগ সময় একা একা থাকা।

৩. মন-মেজাজের ঘন ঘন পরিবর্তন। কখনো মন খারাপ থাকা বা কখনো অতিরিক্ত রেগে থাকা ইত্যাদি। অনুভূতির উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা।

৪. অ্যালকোহল সেবন বৃদ্ধি

৫. দৈনন্দিন খাওয়া বা ঘুমের নিয়মের স্বাভাবিক রুটিন পরিবর্তন হওয়া। খাওয়া ও ঘুম অস্বাভাবিক মাত্রায় কমে যাওয়া।

৬. ঝুঁকিপূর্ণ বা আত্ম-ধ্বংসাত্মক কাজ করা, যেমন ড্রাগ সেবন করা।

৭. নিজেকে অন্যের বোঝা মনে করা।

৮. মৃত্যুর নানা উপায় নিয়ে গবেষণা বা চিন্তা করা। বার বার মৃত্যুর কথা বলা।

৯. প্রিয় জিনিস অন্যকে দিয়ে দেন কেউ কেউ। কেউ আবার পরিচিতজনদের থেকে বিদায় নিয়ে নেন।

১০. নিজে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। অথবা গুরুত্বপূর্ণ দলিলগুলিতে স্বাক্ষর করে রাখা।

তবে আত্মহত্যার লক্ষণ বা চিহ্ন সবসময় সুস্পষ্ট হয় না। এগুলো ব্যক্তি ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু মানুষের মধ্যে এসব লক্ষণ পরিষ্কার বুঝা গেলেও অনেকের ক্ষেত্রে আত্মঘাতী চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি গোপন থাকে।

আত্মহত্যা প্রতিরোধ কীভাবে

আত্মহত্যা নিশ্চিতভাবে প্রতিরোধ না করা গেলেও লক্ষণ বুঝে সময়মত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আত্মহত্যার ঝুঁকি কমানো যায়।

১. তাদের সাথে একান্তে শান্তভাবে কথা বলা এবং যত্ন প্রকাশ করা।

২. তারা যা বলে তা গুরুত্ব সহকারে শোনা ও তাদের আশ্বস্ত করা যে জীবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

৩. বন্দুক এবং মাদকের মতো বিপজ্জনক বস্তু তাদের নাগালের থেকে সরিয়ে দেয়া।

৪. পরিবারের কোন সদস্য পড়ালেখা বা কোন কাজে ভালো ফল না করলে তাকে তিরস্কার করা উচিত নয়। বরং সামনে আরও ভালো করতে হবে বলে উৎসাহিত করা উচিত।

৫. একজনকে কখনোই অন্যের সঙ্গে তুলনা করা উচিত না। মনে রাখতে হবে প্রত্যেক মানুষ আলাদা আলাদা ব্যক্তিত্ব নিয়ে আসে।

৬. বন্ধু বা আত্মীয় কাউকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

৭. এ ছাড়া মানসিক চাপ এড়াতে কোথাও থেকে ঘুরে আসা বা প্রিয়জনের সাথে বেশি বেশি করে সময় কাটানো উচিত।

৮. অনেক সময় পোষা প্রাণী মানসিক চাপ বা বিষণ্ণতা কমাতে সহায়তা করে থাকে।

সূত্র: মায়োক্লিনিক

কিউএনবি/অনিমা/১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/সকাল ১০:৪২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit