আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বেশ কয়েকমাস ধরে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া এবং চলাফেরার স্বাধীনতার বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দোহা চুক্তির বাধ্যবাধকতা উপেক্ষা করায় তিরস্কারও করেন কাবুলকে।
সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তান প্রতিবেশী হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করছে না, যা দোহা শান্তি চুক্তির পরিপন্থী।
খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান ৪০-৫০ বছর ধরে পাঁচ-ছয় মিলিয়ন আফগান শরণার্থীদের তাদের সমস্ত অধিকার অক্ষুণ্ন রেখে আশ্রয় দিয়েছে। উল্টোদিকে যে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে রক্তপাত করেছে তারা আফগানিস্তানের মাটিতে নিরাপদ আশ্রয়ে লালিত হচ্ছে।
মন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, চলমান পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। পাকিস্তান তার ভূখণ্ড এবং নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সম্ভাব্য সংস্থান এবং ব্যবস্থা ব্যবহার করবে।
কয়েকদিন আগে পাক বাহিনী আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত নিষিদ্ধ সংগঠন টিটিপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে টিটিপির আস্তানা রয়েছে। তারা আশা করছে, আফগান সরকার তার ভূমি অন্য দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অনুমতি দেবে না।
ইতোমধ্যে আফগান প্রশাসনকে দোহা চুক্তির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বলেছেন পাক সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইংয়ের মুখপাত্র। এছাড়াও পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় আফগান নাগরিকদের জড়িত থাকার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমে খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশ। দীর্ঘদিন ধরে আফগান-পাক সীমান্তের এ অঞ্চলে উভয় দিকে সক্রিয় জঙ্গিদের কেন্দ্রস্থল। তবে পাকিস্তানি তালিবানরা এলাকাটিতে তাদের অবস্থান সুসংহত করে রেখেছে। জানা গেছে, বেশ কয়েকটি সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত টিটিপি। তবে তারা আফগানিস্তানের তালিবান থেকে আলাদা।
এদিকে গত বছর শুরু হওয়া শান্তি আলোচনায় ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অচলাবস্থার পরে টিটিপি জঙ্গিরা পাকিস্তানের উপজাতীয় জেলাগুলোতে ধীরে ধীরে প্রত্যাবর্তন করছে। এদের দমন করতে পাক বাহিনী অঞ্চলগুলোতে অভিযান বাড়িয়েছে। তবে এত কিছুর মধ্যেও চলতি বছরের জানুয়ারিতে পেশোয়ার পুলিশ সদর দপ্তরের অভ্যন্তরে একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় টিটিপি জঙ্গিরা। এতে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
এর মধ্যেই পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির রাওয়ালপিন্ডিতে আফগানিস্তানের তালিবান নেতৃত্বাধীন সরকারের অন্তর্বর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে দুই দেশের সীমান্ত এলাকা নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু কার্যত এতে কোনও ফল আসেনি।
কিউএনবি/অনিমা/২৫ জুলাই ২০২৩,/রাত ৯:৫১