বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৫ অপরাহ্ন

সন্তানের মুখ দেখা হলো না ১০ বছর অপেক্ষায় থাকা বাবার

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩
  • ৩৪৪ Time View

ডেস্ক নিউজ : বিয়ের ১০ বছরে জন্ম নেয়নি কোনো সন্তান। এরপর বাবা হওয়ার জন্য যখন অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন ঠিক সেই মুহূর্তে সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল হতভাগ্য এ পিতার জীবন। শনিবার সকালে ঝালকাঠি সদর উপজেলায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের মধ্যে একজন এই অনাগত সন্তানের বাবা শাহীন মোল্লা।

প্রায় ১০ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী গ্রামের আব্দুল মজিদ খানের মেয়ে নাজমার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ভাণ্ডারিয়া গ্রামের ছালাম মোল্লার ছেলে শাহীন মোল্লার। তবে গার্মেন্টস কর্মী নাজমা এবং গাড়িচালক শাহীন দম্পতির ঘরে কোনো সন্তান ছিল না। বিয়ের এ দীর্ঘ সময় পর নাজমা বর্তমানে ৭ মাসের গর্ভবতী। আর এতে আনন্দের কোনো সীমা ছিল না তাদের পরিবারে। তবে সন্তানের মুখ দেখার আগেই এ পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়েছে শাহীনকে।

শনিবার সকালে খুলনা-বরিশাল সড়কের ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা গ্রামে মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় যে ১৭ জন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে দুইজন শাহীন (২৮) এবং তার বাবা ছালাম (৭০)। শাহীন এবং তার ছোট ভাই রাসেল তাদের বাবা ছালামকে নিয়ে ভাণ্ডারিয়া থেকে বরিশালে হার্টের চিকিৎসা করানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছিল।

১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়া ভাণ্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পাবনা থেকে রাসেল এবং চট্টগ্রাম থেকে তার বড় ভাই শাহীন বাড়িতে এসেছিলেন। ভোটদান শেষে বাবার চিকিৎসা করিয়ে কর্মস্থলে তাদের ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে শনিবার রাতেই চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে এসেছেন অন্তঃসত্ত্বা নাজমা। আর স্বামী-সন্তানকে হারিয়ে অনেকটাই বাকরুদ্ধ শাহীনের মা শাহিনুর বেগম। এ দুর্ঘটনায় শাহীনের ভাই রাসেলও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।

একই দুর্ঘটনায় নিহত দক্ষিণ ভাণ্ডারিয়া গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী তারেক মাহমুদের বাড়িতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ৭ বছর বয়সি ছেলে মাহাদিকে নিয়ে ভাণ্ডারিয়া থেকে বরিশালে চিকিৎসা করতে যাচ্ছিলেন তারেক। এ দুর্ঘটনায় ছেলেকে বাঁচাতে পারলেও, নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি তারেক। নিহত তারেকের মাহাদি ছাড়াও ৭ মাস বয়সী আরও একটি সন্তান রয়েছে।

শনিবারের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের মধ্যে ৮ জনের বাড়ি ভাণ্ডারিয়া। শনিবার সকালে ভাণ্ডারিয়া থেকে বাশার স্মৃতি নামের বাসটি অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বরিশাল যাচ্ছিল। বাসটি ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ অতিক্রম করার পর এটি রাস্তার পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়। এতে ১৭ জনের মৃত্যু হওয়ার পাশাপাশি আরও ৩৫ জন আহত হন। চালানোর সময় বাসটির চালক পেছন ফিরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন বলে জানা গেছে।

কিউএনবি/অনিমা/২৩ জুলাই ২০২৩,/রাত ১০:২৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit