স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে হরিহরনগর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামি ১৭ জুলাই। শেষ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীসহ মোট চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ৪২ জন ইউপি সদস্য প্রার্থীদের প্রচারনায় নির্বাচন জমে উঠছে।তবে ভোটদান পদ্ধতি ব্যালটের পরিবর্তে ইভিএম(ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন)করায় স্বচ্ছতা ও গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সন্দেহ ও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব কথা জানাগেছে এলাকার ভিন্ন ভিন্ন শ্রেনিপেশার ভোটারদের সাথে কথা বলে। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে বার বার বলা হচ্ছে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন অত্যন্ত স্বচ্ছতা হবে এবং কারচুপির কোন সুযোগ থাকবেনা।
রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় থেকে জানাযায়, ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে হরিহরনগর ইউপিতে মোট ভোটার রয়েছে ২১ হাজার ২২৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটর ১০ হাজার ৬৭৫ এবং মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৫৫১ জন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছে চারজন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম(নৌকা), বিদ্রোহী প্রার্থী মাষ্টার ফরিদ উদ্দিন স্বতন্ত্র হিসেবে আনারস প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
অপরদিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিএনপি এ নির্বাচনে না আসার ঘোষনা দিলেও হরিহরনগর ইউপিতে হয়েছে তার ব্যতিক্রম। দলিয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপির দুইজন নেতা প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এরা হলেন হরিহরনগর ইউনিয়ণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম তুহিন (মোটরসাইকেল) ও আবদুর রাজ্জাক বিশ্বাস(চশমা)। যদিও ইতিমধ্যে বিএনপির হাই কমান্ড থেকে তরিকুল ইসলাম তুহিন ও আবদুর রাজ্জাককে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ থেকেও বিদ্রোহী প্রার্থী মাষ্টার ফরিদ উদ্দিনকেও সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি থেকে বহিষ্কারাদেশ হাতে পাবার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী তরিকুল ইসলাম তুহিন ও আবদুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মাষ্টার ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি এখনও কোন বহিষ্কারাদেশ হাতে পাননি। যদিও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন জানিয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে গত ২৬ জুন ফরিদ উদ্দিনকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সাধারন ভোটারদের মাঝে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে নানাধরনের সন্দেহ আর সংশয়। ইভিএম নিয়ে সংশয় শুধু ভোটরদের মধ্যে নয়, সংশয় রয়েছে অনেক প্রার্থীর মধ্যে। তবে ভোটারদের সন্দেহ তাদের ভোট হয়ত সঠিকভাবে গন্য না করে কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল ঘোষনা করা হবে। বিনোদকাটি গ্রামের মৎস্যখামারী শামছুদ্দিন জানান, শুনেছি ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট কারচুপি করা যায়। আবার একই সংশয় প্রকাশ করেন শৈলী গ্রামের গৃহবধু রজনি খাতুন, কৃষক রবিউল ইসলাম, মদনপুরের মুনছুর আলী, বজলুর রহমান, ডুমুরখালির সিদ্দিকুর রহমানসহ অধিকাংশ ভোটাররা।
তবে রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবদুর রশিদ জানান, ইভিএম মেশিনে ভোট প্রদান করা হলে কোন অবস্থাতেই তা গরমিল করার কোন সুযোগ নেই। তিনি জানান, ৯৪ টি ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহন করা হবে। তবে ইভিএম নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় দুর করতে এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এলাকায় প্রতিনিয়ত সভা সমাবেশ করা হচ্ছে। মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান আশা প্রকাশ করেন, এ নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ অবাধ ও শান্তিপূর্ন ভাবে। আর এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৩ জুলাই ২০২৩,/রাত ৮:৫৮