ডেস্ক নিউজ : লাল রঙের মখমলের কাপড়ে আবৃত ও বিচিত্র অলংকারে সাজানো ‘জায়েদ খান’ নামের মোটাতাজা এই ষাঁড়টিই এখন খামারের মধ্যমণি। পাশে আছে একই ধরনের সাজে সজ্জিত ও কালো রঙের কাপড়ে আবৃত শক্তিশালী ‘পাঠান’। শরীরের গঠন ও চলন ভঙ্গিতেও নামকরণের মিল পাওয়া যায়। এই জায়েদ খান ও পাঠানকে নিয়ে জেলা জুড়ে চলছে তোলপাড়। প্রতিদিনই আদর যত্নের পাশাপাশি জায়েদ খান ও পাঠানকে বর্ণিল সাজে সাজিয়ে ক্রেতাদের সামনে প্রদর্শন করছেন খামার কর্তৃপক্ষ। বিচিত্র নামের বিশাল আকৃতির এই ষাঁড় দুটোকে ঘিরে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। গেলো সপ্তাহে মেসি-নেইমার বিক্রির পর জায়েদ খান ও পাঠানই এখন ক্রেতা দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় আর.কে এগ্রো খামারে গত দেড় বছর যাবত পরম আদর যত্নে লালন পালন করা হচ্ছে সিংদী জাতের জায়েদ খান ও শাহীওয়াল জাতের পাঠানকে। তাদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে ভুসি, সবুজ ঘাস ও খড়সহ পুষ্টিকর দেশীয় দানাদার খাবার। লাল ও কালো রঙের ১৮ মণ ওজনের জায়েদ খান লম্বায় ১০ ফুট ও উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুট ছাড়িয়েছে। প্রায় একই রঙের ২০ মণ ওজনের পাঠান লম্বায় ১০ ফুট এবং উচ্চতায় সাড়ে পাঁচ ফুট। এবারের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে প্রস্তুত করা জায়েদ খানের দাম আট লাখ এবং পাঠানের দাম ১০ লাখ টাকা হাঁকাচ্ছেন খামারি। সাধারণ ক্রেতাদের পাশাপাশি মেসি, নেইমার, শাহরুখ ও জায়েদ খান ভক্তরা সহ কৌতুহলী মানুষও আসছেন এই খামারে।
খামারটিতে সিংদী, শাহীওয়াল ছাড়াও ব্রাহমা, নেপালি বলদ, দেশাল ও ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের এক হাজারের বেশি গরু লালন পালন করা হচ্ছে। চার মণ থেকে ৩০ মন ওজনের বিক্রি উপযোগী গরু এই খামারে আছে। দাম ৮০ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ লাখ পর্যন্ত। পাশাপাশি দুম্বা এবং ভেড়াও রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ গরু বিক্রিও হয়ে গেছে। তবে জায়েদ খান ও পাঠান নামের ষাঁড় দু’টোর এমন বিচিত্র নামকরণের পেছনে মজার গল্পের কথা জানান খামারের ব্যবস্থাপক আবদুস সামাদ।
সময় সংবাদকে এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আদর করে গরুটির নাম পাঠান রেখেছি, কারণ তখন ‘পাঠান’ ছবি মুক্তি পেয়েছিল। গরুটির গঠন অনেকটা পাঠানের মতো। এ ছাড়া পাঠান বলে ডাক দিলে গরুটি সাড়া দেয়। আর জায়েদ খান নাম রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, যখন পাঠান ছবি নিয়ে আলোচনা চলছিল, তখন জায়েদ খান এই ছবিতে অভিনয় করতে চান। ‘পাঠান’ এর পাশে যখন এই গরুটিকে রাখা হতো, তখন এটি গুঁতো দিত পাঠানকে। তাই চিন্তা করলাম এই গরুর নাম জায়েদ খানই রেখে দেই। তাই ভালোবেসে জায়েদ খান নামেই গরুটির নাম রেখেছি। এটি এখন জায়েদ খান নামেই খামারে ব্যাপক পরিচিত।
খামারে ব্রাহমা, সিংদী, শাহীওয়াল, নেপালি বলদ, দেশাল, ফ্রিজিয়ান জাতের এক হাজারের বেশি গরু লালন-পালন করা হয়। পাশাপাশি দুম্বা, ভেড়াও রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ বিক্রি হয়ে গেছে। বিক্রি হওয়া এই পশুগুলো ক্রেতাদের ইচ্ছামতো সময়ে ডেলিভারি দেয়া হবে। পশুদের বৈচিত্র্যময় সাজ ও ক্রেতা সমাগমের কারণে খামারগুলোর পরিবেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার। সময় সংবাদকে তিনি জানান, এবারের ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে কোরবানির এক লাখ পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রায় দশ হাজার খামারে এক লাখ দশ হাজার গবাদি পশু প্রস্তুত করেছেন। যা চাহিদার চেয়েও দশ হাজার বেশি।
কিউএনবি/আয়শা/২৫ জুন ২০২৩,/রাত ৯:২১