জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাট এয়ারপোর্টের রানওয়ের পাশে ভুট্টা ক্ষেতে এক কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ সময় তাকে মুর্মূষু অবস্থায় উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষিতার বাবা আজিজার রহমান। রনিবার (১৮ জুন) দুপুরে ধর্ষণের অভিযোগ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এরশাদুল আলম।
এর আগে শনিবার (১৭ জুন) রাত ৮টার দিকে গণধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রেমিক সোহাগের বাড়ি সদর উপজেলার বড়বাড়ি চওড়া একালায় বলে ওই কলেজ ছাত্রীকে জানিয়েছে। নির্যাতিত ছাত্রীটি লালমনিরহাট পৌর এলাকার একটি সরকারি কলেজের এইচএসটি ২য় বর্ষের ছাত্রী ও সদর উপজেলার তেলীপাড়া এলাকার আজিজার রহমানের মেয়ে বলে জানা গেছে।
পরিবারের সদস্য ও ধর্ষনের শিকার ওই কলেজ ছাত্রী জানায়, শনিবার বিকেলে তার প্রেমিকের সাথে ঘুরতে আসে লালমনিরহাট এয়ারপোর্টের রানওয়ে এলাকায়। এর পর সন্ধ্যা হলে মেয়েটি তার প্রেমিককে বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু ভুট্টা ক্ষেতে আগে থেকেই লুকিয়ে ছিল প্রেমিক সোহাগের আরও দুই বন্ধু। প্রেমিক সোহাগ তার বন্ধুদের সহায়তায় ভুট্টা ক্ষেতে মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে। পরে প্রেমিক সোহাগ মেয়েটিকে তার বন্ধুদের কাছে রেখে চলে যায়।
প্রেমিক সোহাগের ওই দুই সহযোগীর একজন ওই কলেজ ছাত্রীকে আবারও ধর্ষণ করে। এতে ওই ছাত্রীটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ধর্ষকরা কলেজ ছাত্রীর মোবাইলসহ ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় কলেজ ছাত্রী হাটু গেরে পার্শ্ববর্তী এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কে এসে এক পথচারীর মোবাইল ফোন হতে তার বড় বোনকে ফোন দেয়। পরে পরিবারের সদস্য ও কয়েকজন সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই কলেজ ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভতি করা হয়। বর্তমানে ওই কলেজ ছাত্রটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গণধর্ষণের শিকার ওই কলেজ ছাত্রী রোকসানা আক্তার (ছদ্মনাম) আরও জানায়, প্রায় দুই বছর আগে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকুরী করা সোহাগ নামে এক ছেলের সাথে তাদের মধ্যে প্রেমের সস্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহাগ ঢাকায় ট্রিনিং করায় ফোনেই কথা হতে থাকে তাদের। কয়েকদিন হলো সোহাগ তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার বড়বাড়ী এলাকায় আসে। সে তাকে ফোন করে বলে তার সাথে দেখা করতে। পরে শনিবার বিকেলের পর লালমনিরহাট এয়ারপোর্টের রানওয়ে এলাকায় তাকে ঘুরতে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার এক পর্যায়ে সন্ধা হলে তারই সাথে আসা আরো দুই সহযোগীসহ পার্শবর্তী ভূট্টাক্ষেতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে আমার প্রেমিক সোহাগ ধর্ষণ করে।
পরে তার আরো এক সহযোগী আমাকে জোর করে ধর্ষণ করলে আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে ধর্ষণরত অবস্থায় আমার মোবাইল ফোন থেকে আমার বড় নোন ফোন দিলে তারা বুজতে পেরে আমাকে ফেলে পালিয়ে পায় এবং যাওয়ার সময় আমাকে আরো বলে আমরা চলে যাচ্ছি না কাৎকে কিছু বললে ুোকে জানে মেরে ফেলে হবে। পরে কোন রকমে ফাঁকা পেয়ে রাস্তায় উঠলে সেখানে এক পথচারীকে বিষয়টি খুলে বলি। পরে তার সহযোগীতায় তারই মোবাইল ফোন দিয়ে বড় বোন ও দুলাভাইকে ফোন করলে তারা কয়েকজন সাংবাদিক ও পুলিশসহ এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমি সোহাগসহ তার সহযোগিদের বিচার চাই।
কলেজ ছাত্রীর বাবা আজিজার রহমান বলেন, আমার মেয়ে শহরের একটি কলেজে পড়ে। তার ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা চলছে। আমি গরীব মানুষ আমি কি করব বুজতে পারতেছি না। রাতেই সোহাগসহ তার সহযোগিদের নামে থানায় ধর্ষনের অভিযোগ করব। এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এরশাদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলসহ কয়েকটি জায়গায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া হাসপাতালেও পুলিশের একটি টিম কাজ করছে। আগামীকাল মেয়েটির মেডিকেল পরীক্ষা করানো হবে। অভিযোগ পেয়েছি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৮ জুন ২০২৩,/বিকাল ৩:৩২