এম এ রহিম, চৌগাছ (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় কাজু বাদাম চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন মাহাবুবুর রহমান।কাজু বাদাম একটি দারুণ সম্ভাবনাময় ও অর্থকরী ফসল। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বৃক্ষ জাতীয় ফলের মধ্যে এর স্থান তৃতীয় আর বাদাম জাতীয় ফসলে প্রথম স্থানে রয়েছে। পুষ্টি গুণাগুণের বিবেচনায় এ বাদামকে সুপার ফুড বলা হয়। পাহাড়ী অঞ্চলের বৃক্ষ জাতীয় ফসল চৌগাছায় পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে ব্যাপক সম্ভাবনাময় বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। আগামীতে এই ফসলটি হতে পারে উপজেলার অন্যতম লাভজন চাষ। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের চেষ্টায় এক বছরে সার ও কীটনাশকবিহীন পাহাড়ী অঞ্চলের অর্থকরী ফসল কাজুবাদাম চৌগাছার সমতলভূমিতে উৎপাদন হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে সমতলভূমিতে কাজুবাদাম ও কফি চাষ প্রকল্পের আওতায় কাজুবাদাম চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। যে কারনে এখন ব্যাপক ভিত্তিতে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকদের কাজুবাদাম চাষে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। উপজেলার পাতিবিলা গ্রামের যুবক মাহাবুবর রহমান খেতের নিরাপত্তা বেড়া হিসেবে চাষ করেন। সেখানে সফলতা দেখে তিনি মূল ফসল হিসেবে চাষ করার উৎসাহ পান। তিনি এবছরে বাণিজ্যিকভাবে কাজু বাদাম চাষ করবেন বলে জানান।
চাষী মাহবুবুর রহমান জানান, গাছগুলোর বয়স দুই বছর হয়েছে। দুই বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিস পরীক্ষামূলকভাবে তাকে বিনামূল্যে গাছের চারাগুলো দেয়। বর্তমানে তার খেতে ৩৩টি কাজুবাদাম গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছেই ফুল ও ফল এসেছে। এর মধ্যে কয়েকটি গাছে ফল এসেছে যা ৫ থেকে ৬ কেজি বাদাম হবে বলে আশা করছেন তিনি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৭/৮ হাজার টাকা। মাহবুবুর রহমান জানান, কাজুবাদাম চাষে তার অতিরিক্ত কোনো সার, পানি বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়নি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন জানান, কাজুবাদাম মূলত পাহাড়ী ফসল। সমতলভূমিতে কাজুবাদাম ও কফি চাষ প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালের আগস্ট মাসে উপজেলার দুইজন চাষীকে কাজুবাদামের চারা দেয়া হয়। এরপর বিপুল বৃষ্টিপাতে গাছগুলো নষ্ঠ হয়ে যায়। পরে মাহাবুবুর রহমানকে উপজেলা কৃষি অফিসে থাকা ৩০ টি কাজুবাদামের চারা দেয়া হয়। তিনি নিজের দুই বিঘা পেয়ারা বাগানের চারপাশে নিরাপত্তা বেড়া হিসেবে গাছগুলো রোপণ করেন। গাছগুলোতে গত বছরই ফুল আসে। তবে চলতি মৌসুমে বেশ কয়েকটি গাছে ফল এসেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, পাহাড়ী ফসল কাজুবাদাম সমতলভূমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালে যশোরের চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় কাজুবাদামের গাছ প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়। এতেই সফলতা এসেছে। তিনি বলেন, এটি বেশ লাভজনক ফসল। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হলে এটি স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে রফতানি করা যেতে পারে।
কিউএনবি/আয়শা/২৪ মে ২০২৩,/রাত ৯:১৪