বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন

চৌগাছা পৌরশহর ভয়াবহ অগ্নি ঝুঁকিতে

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি ।
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১১০ Time View

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় পৌর শহরের আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলো ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঝুঁকিতে রয়েছে। নেই রিজার্ভ পানির ব্যবস্থা। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের অগ্নিকান্ড ও প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শহরের আবাসিক এলাকার নিরিবিলি পাড়া ও আ¤্রকাকন পাড়া। স্বর্ণ পট্রি ও কাপুড়িয়া পট্রি মার্কেট এলাকা। চৌগাছা ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান এসব এলাকায় অগ্নি দূর্ঘটনাঘটলে দাড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চৌগাছা শহরে ছোট বড় কয়েক হাজার ভবন রয়েছে। এসব ভবনের কোনোটিতেই অগ্নিনির্বাপনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ভবনের নকশার মধ্যে আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবনের জন্য যে সব নিয়ম রয়েছে এসবের তোয়াক্কা করেননি। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশের মতো ভবনের পাশে কোনো ফাঁকা জায়গা রাখেনি। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী একটি ভবনের চারপাশে ৩ মিটার পরিমাণ জায়গা খালি থাকতে হবে। এক ভবন থেকে আরেক ভবনের দুরত্ব ৪ থেকে ৫ মিটার। অধিকাংশ মালিক এ আইন মানছেন না। এছাড়া শহরের ভবনগুলোতে রিজার্ভ পানির ট্যাংক, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই ।

শহরের প্রাণ কেন্দ্রে বেশ কয়েকটি পুকুর ছিল। পুকুরগুলো ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে ভবন। উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি পুকুর রয়েছে। কিন্তু তাতে নেই পানি। পৌর এলাকার মধ্যে কোথাও কোনো পানির ব্যবস্থা নেই। একমাত্র ভরসা কপোতাক্ষ নদ। সেখানেও চলছে খনন কাজ।ফায়ার সার্ভিসের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক মার্কেট ও ভবনে পানির ট্যাংকি থাকতে হবে। শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভবনগুলোতে নেই কোন পানির ট্যাংকি। শহরে কোন স্থানে আগুনের ঘটনা ঘটলে ফায়ারসার্ভিস কর্মীদের কপোতাক্ষ দন থেকে পানি নিতে হবে। কপোতাক্ষ নদ থেকে পানির ব্যবস্থা করতে করতে অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। যা নিয়ন্ত্রণ করতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের হিমশিম খেতে হবে।

এদিকে শহরের আ¤্রকানন পাড়া ও নিরিবিলি পাড়ায় শহরের সবচেয়ে বেশি আবাসিক ভবন রয়েছে। কিন্তু এ এলাকায় পায়ে হেটে চলা ছাড়া পানি নিয়ে প্রবেশ করার মতো কোনো রাস্তা নেই। এ জন্য উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এই এলাকা দুটি সবচেয়ে অগ্নি ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এছাড়া তারা বলছেন শহরের স্বর্ণপট্রি ও কাপুড়িয়া পট্রি মার্কেট এলাকাও ঝুকিপূর্ণ। উপজেলা সরকারি হাসপাতাল, থানা, উপজেলা ক্লিনিকেও অগ্নিনির্বাপনের কোন ব্যবস্থা নেই।

৮ এপ্রিল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয়ের শহরের নিরিবিলি পাড়ার বাসায় আগুন লেগে লাখ টাকার মালামাল পুড়ে যায়। ১৩ এপ্রিল শহরের বিশিষ্ট কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নানের আ¤্রকানন পাড়ার বাসায় আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ২৩ মার্চ শহরের চৌগাছা-কোটচাদপুর সড়কের ইছাপুর বটতলা মোড়ে রমজান আলী ও রিপন হোসেনের ফার্নিচারের দোকানে আগুন লেগে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছায় হয়ে যায়। অতিসম্প্রতি শহরের চৌগাছা-ঝিকরগাছা সড়কে সাংবাদিক শ্যামলের ভাড়া বাসায় আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষতি হয়।

চৌগাছা উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ রবিউল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর জন্য দক্ষ জনবল থাকলেও সরু রাস্তার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুত সময়ে পৌঁছাতে পারে না। যে সব এলাকায় পৌছাতে পারে সেখানে পানি না থাকার কারনে কিছুই করার থাকেনা। চৌগাছার অধিকাংশ ভবনে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা নেই। পৌর এলাকায় পানির কোনো উৎস নেই। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পানি সরবরাহ সুবিধার জন্য পৌরসভার পানি সাপ্লাই লাইনের সাথে কম পক্ষে ১০/১৫ পয়েন্টে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা রাখা জরুরী। যেখান থেকে জরুরী সময়ে ডেলিভারি হুজ লাগিয়ে খুব দ্রুত পানি নেওয়া যায়। এ ব্যাপারে আমরা পৌর মেয়রকে অবহিত করেছি।উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য শহরের মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত মহড়া দিয়ে জনগনকে স্বচেতন করা হচ্ছে।

চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নুর উদ্দীন আল মামুন হিমেল বলেন, পানির সাপ্লাই লাইনের সাথে ফায়ার সার্ভিসের পানি সরবরাহের বিষয়টি পরিকল্পনায় রয়েছে। পৌর সভার পানির লাইন এখনো নির্মানাধীন। শহরের হাসপাতাল, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, বাসস্ট্যান্ড, নিরিবিলি পাড়া, আ¤্রকানন পাড়া, কাচা বাজার, স্বর্ণট্রি, কাপুড়িয়াপট্রি মর্কে, ছুটিপুর বাসস্ট্যান্ডটসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় খুব সিগরিই ফায়ার সার্ভিসের পানি সরবরাহ লাইন নির্মান করা হবে। এছাড়া যেসব ভবন মালিকরা পৌরভার আইন মানেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২০ এপ্রিল ২০২৩,/রাত ১১:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit