আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির সাম্রাজ্য টালমাটাল করে দেওয়া হিনডেনবার্গ রিসার্চ আগেই জানিয়েছিল তারা আরেকটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এরপর থেকেই কৌতূহল ছিল কে হতে পারে মার্কিন আর্থিক গবেষণা সংস্থাটির নিশানা? বিষয়টি এখন প্রকাশ্যে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা ব্লক ইনকরপোরেশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি লুকানোর অভিযোগ করেছে হিনডেনবার্গ। আর তারপর থেকেই ভরাডুবি শুরু হয়েছে এর প্রধান নির্বাহী (সিইও) জ্যাক ডরসির।
তবে ডরসি একা নিজে ডুবছেন তা নয়, প্রতিবেদন প্রকাশের পর ধস নেমেছে ব্লক ইনকরপোরেশনের শেয়ারেও। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সংস্থাটির যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শেয়ারের ১৫ শতাংশ দরপতন হয়। পরদিন অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক শেয়ারের দর কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জ্যাক ডরসির ব্লক ইনকরপোরেশন ব্যবহারকারীদের মেট্রিক্স (ইউজার মেট্রিক্স) বাড়িয়ে দেখিয়েছে। ব্লক ইনকরপোরেশনের সাবেক কর্মচারীদের যত অ্যাকাউন্ট তারা পর্যালোচনা করেছে, তার মধ্যে ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশই ভুয়া অথবা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত অথবা একই ব্যক্তির সঙ্গে সংযুক্ত অতিরিক্ত অ্যাকাউন্ট ছিল।
অবশ্য হিনডেনবার্গের তোলা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে ব্লক ইনকরপোরেশন কর্তৃপক্ষ। আদানি গ্রুপের মতো তারাও সংস্থাটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। টুইটারের অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি। তবে তার বেশিরভাগ ব্যক্তিগত সম্পত্তি এখন ব্লক ইনকরপোরেশনের সঙ্গে সম্পর্কিত। বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থাটির বর্তমান মূল্যমান প্রায় ৩০০ কোটি ডলার। এর বাইরে টুইটারে ৩৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার মূল্যের শেয়ার রয়েছে ডরসির।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুরো পৃথিবীতে তোলপাড় ফেলে দেয় হিনডেনবার্গ। আর্থিক গবেষণা সংস্থাটি অভিযোগ করে, কারচুপির মাধ্যমে ধনী হয়েছেন গৌতম আদানি। কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বাড়িয়েছে তার মালিকানাধীন ব্যবসায়ী গোষ্ঠী। প্রতারণা করা হয়েছে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে। দুই বছর ধরে গবেষণা করে, আদানি গ্রুপের সাবেক শীর্ষস্থানীয় নির্বাহীদের সঙ্গে কথা বলে, আর হাজার হাজার নথি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে তারা।
তবে শুরু থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন গৌতম আদানি। কিন্তু হিনডেনবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পর আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ভয়াবহ প্রভাব পড়ে। হু হু করে কমে যায় গৌতম আদানির ব্যক্তিগত সম্পত্তি। তিনি ছিটকে পড়েন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তির তালিকা থেকে।
কিউএনবি/আয়শা/২৪ মার্চ ২০২৩,/রাত ১০:০৮