রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ০৩:২৭ অপরাহ্ন

টঙ্ক আন্দোলনের সৈনিক কুমুদিনী হাজংয়ের পাশে ইউএনও – রাজীব

তোবারক হোসেন খোকন দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি ।
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১০৭ Time View

তোবারক হোসেন খোকন দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : বৃটিশ শাসনামলে ঐতিহাসিক টঙ্ক আন্দোলন ও হাজং বিদ্রোহের অকুতোভয় সৈনিক কুমুদিনী হাজং। এক সময় জমিদারদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এই নেত্রীর এখন হাঁটাচলা করতেও কষ্ট হয়। কয়েকদিন ধরে আরও বেশি দুর্বল হয় পড়েছেন তিনি। উন্নত চিকিৎসাসেবা পেলে খানিকটা ভালো থাকতে পারবেন বলে মনে করছেন স্বজনরা।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্তে তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। বহেরাতলী গ্রামের একটি পাহাড়ি টিলায় থাকেন তিনি। সঙ্গে থাকেন মেজ ছেলে অর্জুন হাজং ও তার পরিবার। এখন চোখে কম দেখেন এবং কানেও কম শোনেন সেইসাথে শ্বাস ফেলতেও ভীষণ কষ্ট হয়। গত কয়েকদিনের ঠান্ডায় শ্বাসকস্ট সহ নানা অসুখে ভোগছেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুর গড়িয়েছে প্রায়, কুমুদিনী হাজং অসুস্থ্য এমন খবরে দুর্গাপুরের মানবিক ইউএনও নামে খ্যাত রাজীব -উল-আহসান, উপজেলা আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার তানজিরুল ইসলাম, প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, স্থানীয় ইউপি সদস্য সহ শুকনো খাবার, চাল-ডাল ও স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয় ঔষধ-পথ্য নিয়ে ছুটে যান ওনার বাড়ীতে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওনার হাতে তুলে দেন সংসারের অন্যান্য কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী।

তৎকলীন ময়মনসিংহের সুসং জমিদারের খাজনা টঙ্ক আদায়ের প্রথা চালু ছিল। জমিতে ফসল হোক আর নাই হোক, পাওনা খাজনা জমিদারকে দিতেই হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হতো না তখন। খাজনা না দিলে চরম শাস্তি দেওয়া হতো। ১৯৩৭ সালে শোষিত কৃষকেরা এ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন, যা টঙ্ক আন্দোলন নামে পরিচিত। ২০০০ সালে কুমুদিনীর স্বামী লংকেশ্বরের মৃত্যু হয়। তাদের তিন ছেলে, দুই মেয়ে যে যার মতো অন্যত্র বসবাস করেন। সরকারিভাবে থাকার জন্য কুমুদিনী হাজংকে ঘর করে দেওয়া হয়েছে।

সমাজসেবায় অবদানের জন্য ২০১৯ সালে কুমুদিনী হাজংকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয় বাংলা একাডেমি। এ ছাড়া তিনি অনন্যা শীর্ষ দশ (২০০৩), ড. আহমদ শরীফ স্মারক (২০০৫), কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি পদক (২০০৭), সিধু-কানু-ফুলমণি পদক (২০১০), জলসিঁড়ি (২০১৪) ও হাজং জাতীয় পুরস্কার (২০১৮) পেয়েছেন। কালের স্বাক্ষি এই নারীকে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন।

দুর্গাপুরের সিনিয়র আইনজীবী মানেশ চন্দ্র সাহা বলেন, টঙ্ক আন্দোলনে হাজং সম্প্রদায়ের অনেক ত্যাগ আছে। তারা বৃটিশদের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছিলো। এই অবদানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে কুমুদিনী হাজংকে একুশে পদক বা স্বাধীনতা পদক দেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-রাজীব-উল আহসান এ প্রতিনিধি কে বলেন, টঙ্ক আন্দোলনের কালের স্বাক্ষি কুমুদিনী হাজংকে ইতোমধ্যে সরকারি ভাবে ঘর করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকার ভাতা পান তিনি। ওনার অ-সুস্থতার কথা শুনে আমি সরাসরি দেখতে গিয়েছি। চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছি প্রতিনিয়ত। এই নেত্রীর সুস্থ্যতার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল সহায়তা করে যাবো।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/সন্ধ্যা ৭:১৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit