মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন

কি আছে পাঠানে?

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১০৪ Time View

বিনোদন ডেস্ক : বলিউড কাঁপছে ‘পাঠান’-ঝড়ে। কাঁপছে বিশ্বের অনেক দেশ। সেই সঙ্গে উত্তেজিত শাহরুখ ভক্তরা। মোটকথা ‘পাঠান’ যা করল তাতে চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। এ সিনেমার হাত ধরেই দীর্ঘ চার বছর পর রুপালি পর্দায় লিড রোলে ফিরলেন শাহরুখ খান। আর ফিরেই পুরোপুরি সফল অভিনেতা। কিন্তু যে পাঠান নিয়ে এতো মাতামাতি কি আছে এতে?

পাঠান ভারতীয় হিন্দি-ভাষায় নির্মিত অ্যাকশন থ্রিলার চলচ্চিত্র। এটি আদিত্য চোপড়া রচিত ও যশ রাজ ফিল্মস দ্বারা প্রযোজিত এবং সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত একটি তুমুল আলোচিত সিনেমা। এতে প্রধান চরিত্রে আছেন শাহরুখ খান, জন আব্রাহাম এবং দীপিকা পাড়ুকোন। এটি এক থা টাইগার (২০১২), টাইগার জিন্দা হ্যায় (২০১৭) এবং ওয়ার (২০১৯) এর পর ওয়াইআরএফ স্পাই ইউনিভার্সের চতুর্থ কিস্তি।

সংক্ষেপে যদি সিনেমার গল্পটা বলতে হয় তবে তা হচ্ছে-
২০১৯ সালে ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে। এই খবরটি ক্যান্সারে আক্রান্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জেনারেল কাদিরকে প্রভাবিত করে ও তিনি ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি একটি বেসরকারী সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আউটফিট এক্স’-এর নেতৃত্ব দানকারী জিমের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। 

এদিকে, প্রাক্তন ‘র’ এজেন্ট পাঠান এবং তার সিনিয়র অফিসার নন্দিনী ‘জয়েন্ট অপারেশন অ্যান্ড কোভার্ট রিসার্চ’ (জেওসিআর) নামে একটি ইউনিট খোলেন ও ট্রমা বা আঘাতের কারণে অবসর নিতে বাধ্য হওয়া এজেন্টদের নিয়োগ দেন।

কর্নেল সুনীল লুথরার পাঠানের অনুরোধ গ্রহণ করেন এবং একটি বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে আক্রমণ করার আউটফিট এক্সের পরিকল্পনা বন্ধ করতে তার দল দুবাই চলে যায়। তবে তারা বুঝতে পারে যে সন্ত্রাসীদের মূল পরিকল্পনা ছিল দুই বিজ্ঞানীকে অপহরণ করা। জিম বিজ্ঞানীদের গাড়িবহরে আক্রমণ করে এবং পাঠান তাকে থামানোর চেষ্টা করে। ফলে একটি লড়াই শুরু হয়, তবে পরে জিম একজন বিজ্ঞানীর সাথে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। লুথরা জানায় যে জিম হচ্ছে একজন প্রাক্তন ‘র’ এজেন্ট, যাকে কয়েক বছর আগে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। সোমালীয় সন্ত্রাসীরা জিমের স্ত্রী এবং অনাগত সন্তানকে হত্যা করেছিল, এই ঘটনা ঘটতে দেয়ার জিম তার দেশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার মৃত্যুর মিথ্যা কথা প্রচার করে।

এদিকে, পাঠান ‘রক্তবীজ’ নামক কোডওয়ার্ড সম্পর্কে জানতে পারে এবং আরও জানতে পারে যে দুবাইয়ে হত্যা করা ব্যক্তিরা প্রাক্তন এজেন্ট ছিল এবং তাদের অর্থকড়ি স্পেনে রুবিনা মহসিন নামের একজন পাকিস্তানি ডাক্তারের কাছে স্থানান্তরিত হয়েছে। এটি জানার পর পাঠান স্পেনভ্রমণ করে, তবে সে জিমের লোকদের কাছে ধরা পড়ে যায়, সেখানে সে আরও জানতে পারে যে রুবিনা হচ্ছে একজন প্রাক্তন আইএসআই এজেন্ট। জিম যখন তার আস্তানা ছেড়ে যায়, রুবিনা জিমের লোকদের আক্রমণ করে এবং পাঠানের সাথে পালিয়ে যায়। রুবিনা জানায় যে রক্তবিজ মস্কোতে রয়েছে ও জিমের আগে এটি তাদের হস্তগত করতে তারা মস্কোতে যায়। তবে রুবিনা পাঠানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। পরে জানা যায় যে রক্তবীজ চুরি করতে জিম রুবিনাকে ব্যবহার করে পাঠানকে বাধ্য করেছিল। পাঠানকে বন্দী করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে টাইগার এসে তাকে উদ্ধার করে।

তিন বছর পর, পাঠান আফ্রিকায় যায় এবং জিমের সহযোগী রাফিকে ধরে ফেলে। তারপর সে নন্দিনীর সাথে দেখা করে এবং জিম যে দুটি সাবের ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে তা নন্দিনীর কাছে প্রকাশ করে, অন্যদিকে নন্দিনী প্যারিসে রুবিনার অবস্থানের কথা প্রকাশ করে। পাঠান রুবিনার সাথে দেখা করে, রুবিনা জানায় যে রক্তবীজ হল গুটিবসন্তের মতো নকশা করা রূপান্তরিত প্রাণঘাতী ভাইরাস, জিম যে বিজ্ঞানীকে বন্দী করেছিল এটি তার তৈরি। তার দেশ এই ধরনের হামলার পরিকল্পনা করবে তা না জেনেই পাঠানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য রুবিনা পাঠানের কাছে ক্ষমা চায়। তারা জিমের ল্যাবে হানা দেয়, জিম অন্যদের সাথে পালিয়ে যান তবে তারা ভাইরাসযুক্ত একটি অরব পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তারপর পাঠান এবং তার দল ভাইরাসের জন্য ভ্যাকসিন প্রস্তুত করতে একটি ল্যাবে যায়।

এতো গেলো গল্পের কথা, এবার সিনেমাটির সফলতার কথা একটু জানা যাক। 

মুক্তির পরপরই সুনামির মতো ঝোড়ো বেগে ছুটে চলা ‘পাঠান’ বিশ্বজুড়ে বক্স অফিসে একের পর এক রেকর্ড করেই যাচ্ছে। মুক্তির মাত্র তিন দিনে ‘পাঠান’ বেশ কয়েকটি রেকর্ড নিজের নামে করে নেয়। শুধু ভারতেই নয়, বেশ কয়েকটি দেশের ব্ক্স অফিস রেকর্ডে নিজেদের পতাকা উড়িয়েছে ‘পাঠান’। সিনেমা বিশ্লেষকদের ধারণা, খুব শিগগিরই বিশ্বব্যাপী বলিউড রেকর্ডগুলো একজন ব্যক্তির নাম উজ্জ্বল করবে। তিনি শাহরুখ খান। 

‘পাঠান’ হিন্দি চলচ্চিত্রের সর্বকালের সবচেয়ে বড় নন-হলিডে উদ্বোধনী আয়। বলিউডের সর্বকালের সবচেয়ে বড় উদ্বোধনী আয় (৫৭ কোটি রুপি)। সর্বকালের সবচেয়ে বড় একক দিনের আয়। সর্বকালের সবচেয়ে বড় দ্বিতীয় দিনের আয়। ভারতে সবচেয়ে বড় হলিডে কালেকশন (১২৭ কোটি)। বলিউডের প্রথম চলচ্চিত্র, যা পরপর দুই দিনে ৫০ কোটির বেশি আয় করেছে। এক দিনে ৬০ কোটি রুপি আয় করা প্রথম চলচ্চিত্র। এক দিনে ৬৫ কোটি রুপি আয় করা প্রথম চলচ্চিত্র। এক দিনে ৭০ কোটি রুপি আয় করা প্রথম চলচ্চিত্র। ২ দিনে ভারতে ১০০ কোটি রুপির ক্লাবে প্রবেশ করা প্রথম চলচ্চিত্র। ১০০ কোটি রুপির ক্লাবে প্রবেশ করা দ্রুততম চলচ্চিত্র। বিশ্বব্যাপী এক দিনে ১০০ কোটি রুপি আয় করা প্রথম বলিউড চলচ্চিত্র। বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে দ্রুততম ১০০ কোটি রুপি আয়। বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে সবচেয়ে দ্রুত ২০০ কোটি আয়। বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে দ্রুততম ২৫০ কোটি রুপি আয়।

এ ছাড়া পিভিআর, আইনক্স, সিনেপোলিস ও ন্যাশনাল মাল্টিপ্লেক্স চেইনসহ ভারতের সব ধরনের থিয়েটারে প্রথম দুই দিনে সর্বোচ্চ আয় করা চলচ্চিত্র এবং জার্মানি, মধ্যপ্রাচ্য, ইংল্যান্ড, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে প্রথম দিনের আয়ে আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে ‘পাঠান’। বক্স অফিসের বড় ১৫টি রেকর্ডসহ মাত্র দুই দিনেই মোট ৭৫টি রেকর্ড নিজের নামের পাশে করে নিয়েছে সিনেমাটি।

বাণিজ্য বিশ্লেষকদের ধারণা, প্রথম সপ্তাহ শেষে বলিউডের বেশির ভাগ বক্স অফিস রেকর্ডই থাকবে ‘পাঠান’র ঝুলিতে।

কিউএনবি/অনিমা/৩১ জানুয়ারী ২০২৩/বিকাল ৪:০৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit