রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন

বন্দুকের বাজারে বইয়ের দোকান

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৮৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দারা আদমখেল। পাকিস্তানের একটি রক্ষণশীল উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল। পাখতুন ও আফ্রিদি সম্প্রদায়ের মানুষের বসতি। অবৈধ অস্ত্র বিক্রি ও তৈরি করাই এখানকার বাসিন্দাদের মূল ব্যবসা। তবুও শিক্ষার আলো জ্বালাতে অনেক কাঠখর পুড়িয়ে এলাকার ওয়াইল্ড ওয়েস্ট নামে পরিচিত এক রমরমা অস্ত্রের বাজারে গড়ে উঠেছে বইয়ের দোকান। 

এফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , ২৮ বছর বয়সি এক যুবক তার বানানো ভিন্টেজ বন্দুক , ভারী অস্ত্র এবং অত্যাধুনিক ছুরি দেখিয়ে বলেন- এগুলো রাখা আমার শখ। কিন্তু আমি সব সময় আশা করেছি যে আমাদের একটি লাইব্রেরি থাকবে। অবশেষে আমার স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে। লাইব্রেরিটিতে রয়েছে ভার্জিনিয়া ওলফের ক্লাসিক বই মিসেস ডালওয়ে, ভ্যাম্পায়ার সিরিজ টুয়াইলাইট এবং আব্রাহাম লিংকনের লাইফ, স্পিচেস এবং লেটারস নামের বিখ্যাত সব বই। 

৩৬ বছর বয়সি লাইব্রেরিটির প্রতিষ্ঠাতা রাজ মুহাম্মদ বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা এটাকে নিরুৎসাহিত করেছিলাম। লোকজন জিজ্ঞাসা করেছিল দারা আদমখেলের মতো জায়গায় বইয়ের কী প্রয়োজন, কে এখানে বই পড়বে। কিন্তু এখন এখানে ৫০০-এর বেশি সদস্য রয়েছে। দরিদ্রতা, পিতৃতান্ত্রিক মূল্যবোধ, অন্তঃদ্বন্দ্ব ও স্কুল কম থাকার কারণে এখানকার উপজাতিদের শিক্ষার হার পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে কম। কিন্তু চিন্তাধারা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে বলে বিশ্বাস করেন ৩৩ বছর বয়সি লাইব্রেরির স্বেচ্ছাসেবক সাইফুল্লাহ আফ্রিদি। 

তার মতে, যুবক প্রজন্ম অস্ত্রের পরিবর্তে শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। যখন তারা দেখছে যে প্রতিবেশী প্রদেশগুলোতে অনেকেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে ও তাদের সন্তানদের ভালো স্কুলে পাঠাচ্ছে। যদিও তিনি অস্ত্রের বিপক্ষে তার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। পাকিস্তানের গ্রামগুলোতে লাইব্রেরি খুবই কম, যা কয়েকটি রয়েছে সেগুলো শহরের কেন্দ্রে এবং সেখানে খুব কমসংখক বই সংরক্ষণ করা আছে। 

দারা আদমখেলে যেখানে হাজারও অস্ত্রের দোকান সেখানে ২০১৮ সালে একটি রুমে তার নিজের জমানো কিছু বই নিয়ে লাইব্রেরিটি শুরু করেছিলেন। মুহম্মদ নামে স্থানীয় একজন প্রসিদ্ধ স্কলার, কবি ও শিক্ষক বন্দুকধারীর দীর্ঘ লাইন থেকে আসা একজনকে বলেছিলেন যে, তুমি বলতে চাও এই অস্ত্রের স্তূপে আমরা লাইব্রেরি বানাব। যদিও তিনি পরে এখানে প্রতি মাসে ২৫০০ রুপি দিতেন। 

লাইব্রেরি প্রকল্পটি প্রথম দিকে একটি রুম নিয়ে শুরু হয়ে এক বছরের মধ্যে এটিকে একটি একতলা ভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেখানে স্থানীয়রা জমি দান করেছিলেন। এক বছরের জন্য লাইব্রেরির সাধারণ কার্ডের খরচ হবে ১৫০ রুপি বা ০.৬৬ ডলার যেখানে ছাত্ররা ছাড়ে পাবে ১০০ রুপি বা ০.৪৪ ডলারে। তরুণরা স্কুল বিরতিতে এখানে ঢুকতে ও বেরুতে পারবে। পুরুষ সদস্যরা তাদের অর্ধাঙ্গিনীর জন্যও বই সংগ্রহ করতে পারবে।

কিউএনবি/অনিমা/২২ জানুয়ারী ২০২৩/বিকাল ৩:৫৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit