ডেসক্ নিউজ : মানুষ যখন প্রবল ক্ষমতার অধিকারী হয়, আর তার ভেতরে আল্লাহর কোনো ভয় না থাকে, তখন সে যাচ্ছেতাই করে থাকে। তার মুখ দিয়ে মধুর বাণী নির্গত হলেও ভেতরটা কালো কুৎসিত। সে জানে না যে আমার অধীনে আল্লাহ তাআলা একজন লোক দিয়েছেন যেন আমাকে পরীক্ষা করার জন্য। বাস্তবে এর বিপরীতও হতে পারত যে আমাকে তার অধীনে দিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলার অপার দয়া এটা আমার প্রতি। আমাকে স্মরণ রাখতে হবে, আমি যদি তার ওপর নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তির বলে জুলুম করি, তাহলে তার পার্থিব জীবনের চুলচেরা হিসাব-নিকাশ হবে পরকালীন জীবনে। এটি চিরসত্য। আর এই জুলুমের প্রতিদান আমাকে দুনিয়াতেও ভোগ করতে হবে।
তাই অধীনস্থ ব্যক্তির ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আমাদের কর্তব্য। এমন অসংখ্য ছোট ছোট ভুলের কারণে কত মানুষ যে অশান্তির অনলে পোড়ে তা বেমালুম। এ জন্য আমাদের আচরণগত দক্ষতা অর্জন করা উচিত। অনেকেই এমন আছেন, যারা নিজের স্ত্রীর সঙ্গে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করেন, আর সেভাবে এটা তার সম্পূর্ণ অধিকার। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যখন কোনো বিষয় প্রত্যক্ষ করবে তখন হয়তো উত্তম কথা বলবে, অন্যথায় চুপ থাকবে। আর নারীদের প্রতি কল্যাণের (ও সদাচরণের) অঙ্গীকার গ্রহণ করো। কেননা পাঁজরের একটি হাড় দিয়ে নারী সৃজিত হয়েছে এবং পাঁজরের সবচেয়ে বেশি বাঁকা হলো তার ওপরের অংশ। তুমি তাকে সোজা করতে গেলে তা ভেঙে ফেলবে। আর তাকে (যথাবস্থায়) ছেড়ে রাখলে তা সদা বাঁকা থেকে যাবে। নারীদের কল্যাণের উপদেশ গ্রহণ ও অঙ্গীকারবদ্ধ হও। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৫৩৯),
সুতরাং অধীনদের সঙ্গে এমন আচরণ করা যাবে না, যে আচরণ কর্তার সঙ্গে অন্য কেউ করলে তিনি নাখোশ হবেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেয়ে যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে চায়, তার মৃত্যু হবে এমন অবস্থায়, সে আল্লাহ ও বিচারের দিনের প্রতি ঈমান রাখবে এবং যেমন আচরণ সে মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে, তেমন আচরণ তাদের সঙ্গেও করবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৮৪৪),
হাদিসে এমন এক মূলনীতি বলে দিয়েছে, যেটি লক্ষ করে চললে, আমাদের জীবনের অনেক কঠিন জিনিস সহজ হয়ে যাবে। কারো ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বা দেওয়ার আগে একবার ভেবে নেওয়া যে আমি যদি তার জায়গায় হতাম তাহলে কেমন সিদ্ধান্ত কামনা করতাম। ব্যস, এতটুকু করলেই সে সবচেয়ে সুন্দর সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে। কেউ তখন অযাচিত কষ্ট পাবে না। আর দোষীদের শাস্তিও যথাযথ হবে। আর মানুষও তাকে স্মরণ রাখবে অনেক দিন। কারণ মানুষ তার সৃষ্টিশীল সৎকর্মের মাধ্যমে পৃথিবীতে বেঁচে থাকে যোজন যোজন।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ জানুয়ারী ২০২৩/সন্ধ্যা ৬:১৮