শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন

নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৯৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টীয় নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো জোরদার হোক, সব সংকট দূরীভূত হোক, সব সংকীর্ণতা পরাভূত হোক এবং সবার জীবনে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি-এই প্রার্থনা করি। ’শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘খ্রিষ্টীয় নতুন বছর ২০২৩ উপলক্ষে আমি দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

প্রকৃতির নিয়মেই নতুন বছর মানুষের মনে নতুন আশার সঞ্চার করে এবং নব উদ্যমে সুন্দর আগামীর পথচলায় অনুপ্রেরণা যোগায়। ’তিনি বলেন, ‘২০২২ বাঙালি জাতির জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি। ১৯৭২ সালে এশিয়ার প্রায় সবকটি দেশ, রাশিয়া, তৎকালীন সোভিয়েত ব্লকের অন্যান্য দেশ, ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বেশিরভাগ দেশ, ফ্রান্স, কানাডা, গ্রেট ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অধিকাংশ স্বাধীন রাষ্ট্র নবীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ’

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয় এবং জনগণের কল্যাণ হয়। কারণ একমাত্র আওয়ামী লীগই স্বাধীনতার সুমহান আদর্শকে ধারণ করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে। আসুন আমরা দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি এবং ধর্মীয় উগ্রবাদসহ সন্ত্রাসবাদ ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করে, অসাম্প্রদায়িক চেতনার ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশগুলো ২০২২ সালে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের মাধ্যমে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শূন্য হাতে সদ্য স্বাধীন দেশকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে তুলেছিলেন। তখন ব্যাংকে কোন রিজার্ভ মানি ছিল না, কোন কারেন্সি নোট ছিল না। অবজ্ঞা করে কেউ কেউ বলতো তলা বিহীনঝুড়ি। সেই অবস্থা থেকে মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন এবং জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জন করেন। ’

২০২২ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এক স্বর্ণযুগ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন,  ‘আমরা গত বছর ২৬ জুন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু চালু করেছি। ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার মেট্রোরেল যোগাযোগ চালু করেছি। ২১ ডিসেম্বর দেশের ৫০টি জেলায় উন্নয়নকৃত ১০০টি মহাসড়ক উদ্বোধন করেছি। ’ তিনি বলেন,২৬ নভেম্বর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’-এর দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজ সম্পন্ন করেছি। ৭ নভেম্বর দেশের ২৫টি জেলায় ১০০টি সেতু নির্মাণ করে উদ্বোধন করেছি। ১৯ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-২ এর রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন করেছি। ২১ মার্চ পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (১ম পর্যায়) উদ্বোধন করেছি। আমাদের অন্যান্য মেগা ও মাঝারিসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে। আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচন হতে পরপর তিন দফা জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে গত ১৪ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছি। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিও কিছুটা মন্থর হয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক অবরোধ ও পাল্টা অবরোধ সারা পৃথিবীতে নিরীহ মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই। এই দুর্যোগকালীন সময়ে আমরা দেশের প্রায় সকল মানুষকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা, করোনা ভ্যাক্সিন এবং বিশেষ ক্ষেত্রে খাদ্যদ্রব্যও সরবরাহ করেছি। আমরা ১ কোটি পরিবারকে টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও সাশ্রয়ী মূল্যে ভোজ্য তেল, ডাল ও চিনি ক্রয়ের সুবিধা দিয়েছি। ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল এবং আরো ৫০ লাখ অসহায় হতদরিদ্র পরিবারকে ভিজিডি ও ভিজিএফ-এর মাধ্যমে বিনামূল্যে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ৩৫ লাখ মানুষের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা করেছি। প্রায় ১৮,৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ঔষধ দিচ্ছি। আমাদের ১ কোটি কৃষক ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খুলে সরাসরি সরকারি ভরতুকির টাকা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা ২ কোটি ৫৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি/উপবৃত্তি দিচ্ছি। ইংরেজি বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দেওয়ার কারণে বই উৎসবের সঙ্গে নববর্ষ উদযাপন আজ শিশু-কিশোরদের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং অন্যতম সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্রামাঞ্চলে অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি করেছি। ফলে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি আরো মজবুত হয়েছে, দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টি হচ্ছে, মাথাপিছু আয়সহ অন্যান্য সামাজিক সূচকেও ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছি। ২০২১ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। আমরা ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি।

সূত্র : বাসস

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩১ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:০০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit