বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০১ অপরাহ্ন

সরকারি হিসাবেই ছাপা হয়েছে ৭১ শতাংশ বই

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৫৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : একদিন বাদে শুরু নতুন শিক্ষাবর্ষ। শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দিয়ে এ দিন সারা দেশে ‘জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ করার কথা। এ লক্ষ্যে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পৃথক দুটি অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রোববার পর্যন্ত প্রাথমিকের তৃতীয় থেকে পঞ্চম আর মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে ৮০ শতাংশের মতো বই পাঠানো সম্ভব হতে পারে। একই সময়ের মধ্যে প্রাথমিকে প্রথম ও দ্বিতীয় এবং মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বই উপজেলায় যাবে। এসব নিয়েই সরবরাহের হার দাঁড়ায় ৬৫ শতাংশের মতো।

তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আজ-কালের মধ্যে সব মিলে অন্তত ৮৫ শতাংশ বই পৌঁছে যাবে স্কুলে। বছরের প্রথমদিন সব বই বিতরণের প্রয়োজন হয় না। কেননা এদিন শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয় না। এছাড়া নবম শ্রেণিতে প্রথম তিন মাস বিভাগ পছন্দ করতে চলে যায়। তাই যে সংখ্যক পাঠ্যবই পৌঁছানো হচ্ছে, তাতে পাঠ্যপুস্তক উৎসবে কোনো ঘাটতি হবে না। সব স্কুলেই বই পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তবে ভিন্নকথা বলছেন মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল। তিনি যুগান্তরকে বলেন, বোর্ড ৮১ শতাংশ বই পৌঁছে যাওয়ার কথা বলছে ছাড়পত্রের ভিত্তিতে। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠান ৬টি বিষয়ের কাজ পেয়েছে আর ৫টির কাজ শেষ করে ছাড়পত্র নিয়েছে, সেটি বই উপজেলায় পাঠায়নি। কেননা তারা দুবার ট্রাক ভাড়া দিতে চায় না। তাই এখন শেষ বইটির ছাড়পত্র নিয়ে একসঙ্গে পাঠাবে। ফলে এখন পর্যন্ত যেসংখ্যক বই-ই পাঠানো হোক না কেন, শেষ সময়ে সরবরাহ হয়তো বেড়ে যাবে। কিন্তু তা ৮৫ শতাংশ হওয়ার মতো নয়। সব মিলে গড়ে ৬৫ শতাংশের মতো বই সরবরাহ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকের অন্তত ৬০ শতাংশ কাজ বড় ৫টি প্রতিষ্ঠানের কাছে রয়েছে। তাদের হাতে সক্ষমতার বাইরে মাধ্যমিকের কাজও তুলে দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান কত বই সরবরাহ করেছে, সেই তথ্যও রহস্যজনক কারণে এনসিটিবি প্রকাশ করছে না। এসব প্রতিষ্ঠান অবশ্য নিম্নমানের কাগজে বই ছেপে রেখেছে বলে তাদের কাছে অভিযোগ আছে। শেষ সময়ে যেহেতু এনসিটিবি বইয়ের মান দেখে না, সংখ্যা দেখে।

ওই সুযোগেই নিম্নমানের বই চলে যেতে পারে। তিনি দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, ‘ব্র’ আদ্যাক্ষরের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকের আরও ৫-৬টি প্রেস আছে। এখন তারা ৩টির নামে কাজ নিলে বাকিগুলোয় নিম্নমানের কাগজে বই ছাপানোর সমস্যা হয় না। কারণ মনিটরিং টিম সেখানে পরিদর্শনে যায় না। ওই প্রতিষ্ঠানটি কাজ না পাওয়া প্রেসও ভাড়া নিয়ে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপছে বলে জানান তিনি। এনসিটিবি বড়গুলোর পরিবর্তে ছোট প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সূত্র জানায়, যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে এখনো বেশিসংখ্যক বই আটকে আছে, সেগুলোর মধ্যে বারোতোপা, লেটার অ্যান্ড কালার, ব্রাইটসহ আরও কয়েকটি আছে। এগুলোর মধ্যে কয়েকটির বিরুদ্ধে খোদ এনসিটিবিতে নিম্নমানের কাগজ কেনার অভিযোগ দাখিল হয়েছে। এগুলোর একটি পৌনে ২ কোটি বইয়ের কাজ নিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮৫ লাখের মতো বই সরবরাহ করেছে। আরেকটি প্রতিষ্ঠানের কাগজের মান নিয়েও প্রশ্ন আছে।

এমন অভিযোগের সূত্র ধরে এনসিটিবির কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে হাওলাদার, আল আমীন, মেরাজ, আমীন, সরকার আফসেট প্রিন্টিং প্রেসসহ নয়টি ছাপাখানার নিম্নমানের কাগজে ছাপানো বই চিহ্নিত করে নষ্ট করে দিয়েছে। কচুয়া প্রেসের গুদাম থেকে এনসিটিবির অনুমোদনহীন কাগজ সরাতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া দিগন্ত অফসেট ও নয়নমণি প্রিন্টিং প্রেসের কয়েক টন নিম্নমানের কাগজ শনাক্ত করে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে।

দরপত্র আহ্বান ও ক্রয় কমিটির অনুমোদনে বিলম্ব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওপর মুদ্রাকরদের অসন্তোষসহ নানা কারণে এবার প্রাথমিকের বই ছাপাকাজ শুরুতে দেরি হয়। এছাড়া ডলার আর জ্বালানির ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে কাগজ বা কাগজের পাল্প সংকট আছে। যদিও কাগজ সংকট মেটাতে এনসিটিবি রিসাইকেল (ব্যবহৃত) পাল্প সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি ভার্জিন (অব্যবহৃত) পাল্পের সংকটের কারণে উজ্জ্বলতায় ছাড় দেওয়া হয়েছে।

৮৫ শতাংশের পরিবর্তে ৮২ শতাংশ উজ্জ্বলতার কাগজ গ্রহণের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া ৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ সভায় মুদ্রাকরদের দাবি অনুযায়ী এনসিটিবি থেকে বিল দেওয়া এবং আগের বছরের আটকে রাখা জামানত ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবু নিম্নমানের কাগজ আর কাঙ্ক্ষিত উজ্জ্বলতাবিহীন কাগজে বই ছাপানোর অভিযোগ আসছে।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, মুদ্রাকরদের লোকসান ঠেকাতে সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এরপরও শর্ত ভঙ্গ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দরপত্র অনুযায়ী ২০ শতাংশ বিল বাকি রাখা হবে। সেখান থেকে জরিমানার অর্থ আদায় করা হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩০ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:২১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit