শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন দ্বীপ বালিতে ফেরি ডুবে ৫ জনের মৃত্যু, বহু নিখোঁজ বড় অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে দেশ, এখনই নিয়ন্ত্রণ জরুরি স্ত্রীর কিডনিতে জীবন ফিরে পেয়ে পরকীয়ায় জড়ালেন স্বামী! চকবাজারে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত শিক্ষার্থীর মৃত্যু দৌলতপুরে তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত : আটক-১ মনিরামপুরে ফ্যাসিষ্ট মাদকবিক্রেতা সন্ত্রাসীরা কোন প্রকার ছাড় পাবেনা মনিরামপুরে শিক্ষককের ১৫ দিনব্যাপী আইসিটি প্রশিক্ষনের সমাপনী অনুষ্ঠান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় চৌগাছা পৌরসভায় বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি জুমার নামাজ পড়তে না পারলে করণীয় ‘গরুর মাংস খান রণবীর’, ভারতজুড়ে বির্তকে-সমালোচনার ঝড়

উখিয়ার আঞ্জুমান সীমান্তে মিয়ানমারের গোলার শব্দ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২৭৪ Time View

ডেস্কনিউজঃ ২০১৭ সালে সর্বপ্রথম দলে দলে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার আঞ্জুমান সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রোহিঙ্গারা। উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের সেই আঞ্জুমান সীমান্তে এবার নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার পর মর্টার শেলের মতো ভারী অস্ত্রের গোলার শব্দে কেঁপে ওঠে পালংখালী এলাকা। থেমে থেমে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর চৌধুরী চৌধুরী। তিনি বলেন, ঘুমধুম সীমান্তের পর এবার নতুন করে আমার ইউনিয়নের আঞ্জুমান সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে ভারী গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমি এই মুহূর্তে ঢাকায় আছি। সকালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে আমার এক ইউপি সদস্য কল করে জানান। পরে আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি।

পালংখালী আঞ্জুমান সীমান্তের বাসিন্দা খালেদা বেগম বলেন, ‘এতদিন পত্রিকায় ও টেলিভিশনে শুনেছি সীমান্তে গোলাগুলি চলছে। আজ সকালে আমাদের আঞ্জুমান সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের এলাকার মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।’

তবে এ বিষয়ে বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে ২৮ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে মিয়ানমার থেকে দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে।

এদিকে, তুমব্রু বাজারে মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ইয়াসমিন আক্তারের সাথে কথা হয়। সে জানায়, ‘গোলা এসে পড়ার পর থেকে ভয়ে আছে। পরীক্ষা দেয়ার মতো মানসিক পরিস্থিতিও নেই। তারপরও পরিবারের চাওয়াতে পরীক্ষার কেন্দ্রে যাচ্ছে।’

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে ইয়াসমিন আক্তার। তার বাড়ি তুমব্রু সীমান্তের উত্তরপাড়ায়। সেখানে সকাল থেকে মিয়ানমার বাহিনীর গোলাবর্ষণের শব্দ ভেসে আসছিল।
সেই শব্দ শুনতে শুনতে বাড়ি থেকে বের হয় ইয়াসমিন। বাজার পর্যন্ত আসার পরও থামেনি গোলার শব্দ।

সে আরো জানায়, বাড়ি থেকে তার কেন্দ্র ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। মিয়ানমার বাহিনীর মর্টার শেল ছোড়ার ঘটনায় সেই কেন্দ্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে ১০ কিলোমিটার দূরের কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রথম দিকে কেউ কেউ পরিবহনের ব্যবস্থা করলেও আজ সেই গাড়ির দেখা নেই।

আরেক ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসের বাড়ি তুমব্রুর পশ্চিমপাড়ায়। সে বলে, ‘সকাল থেকে কয়েক দফা গোলার শব্দ শুনেছি। এখনো চলছে। হেঁটে যাচ্ছিলাম গাড়ির স্টেশন পর্যন্ত। এর ভেতরেই দুই দফা গোলার শব্দ শুনলাম।’

জান্নাতুল আরো বলে, ‘গেল রাতেও গোলার শব্দ ভেসে এসেছে। ঘুমানোর কোনো সুযোগ নেই। মুহুর্মুহু গোলার শব্দ আসছে বাড়ির কাছে। মনে হচ্ছিল এই বুঝি পড়ছে।’

ইয়াসমিন ও জান্নাতুলের স্বরে কথা বলেছে ফাতেমা বেগমও। তার ভাষ্য, ‘এত দূরের কেন্দ্রে যাব কী করে, তা ভাবা হয়নি। প্রথম দিন লোকদেখানো বাসের ব্যবস্থা করলেও এখন তা আর দিল না। এখন লোকাল গাড়ির অপেক্ষায়। ঠিকমতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারব কি না ভাবছি।’

তুমব্রু বাজারের দোকানদার মোহাম্মদ আতিক বলেন, ‘ভোর ৫টার পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ বার ভারী গোলার শব্দ ভেসে এসেছে। মানুষ প্রতিদিন এসব শব্দ শুনতে শুনতে অভ্যস্ত। তাই তেমন সাড়া নেই, তবে স্কুলশিক্ষার্থী বা শিশুরা ভয় পায়।’

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘৩০০ পরিবারের প্রায় দেড় হাজার মানুষ সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের কোথায় রাখা হবে, সেই স্থান নির্ধারণে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঘুমধুমে এসেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভিন।’

তিনি আরো বলেন, ‘সকালেও গোলার শব্দ ভেসে এসেছে। কোনোভাবে যাতে মিয়ানমারের কোনো নাগরিক আসতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।’

মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে সীমান্তের শূন্যরেখায় এক রোহিঙ্গা নিহতের পর টানা তিন দিন তুমব্রু সীমান্তে গোলার শব্দ শোনা যাচ্ছে।

প্রায় এক মাস ধরে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল, গোলাগুলিসহ নানা ভারী অস্ত্রের আওয়াজে এপারের ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু ও বাইশপারী এলাকার মানুষ দিন কাটাচ্ছে আতঙ্কে।

বেশ কয়েকবার মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডেও এসে পড়েছে।

সবশেষ গত শুক্রবার রাতে তুমব্রুর কোনারপাড়া সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেলে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক যুবক নিহত হন। আহত হয় রোহিঙ্গা শিশুসহ ৫ জন।

এর আগে একই দিন দুপুরে এই সীমান্তেই হেডম্যানপাড়ার ৩৫ নম্বর পিলারের ৩০০ মিটার মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে আহত হন বাংলাদেশী এক যুবক।

গত ২৮ আগস্ট তুমব্রু উত্তরপাড়ায় একটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ে। সেদিনই সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমানকে চক্কর দিতে দেখা যায়।

এরপর ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া দুটি গোলা ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পড়ে। সেগুলো অবিস্ফোরিত থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এর তিন দিন পর ফের ওই সীমান্তে ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ ভেসে আসে।

কিউএনবি/বিপুল/২০.০৯.২০২২/ রাত ৯.৪৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit