শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৯ পূর্বাহ্ন

জীবনের ৪০ বছরই কাটল বাঁশিতে সুর তুলে, বাঁশি ফেরি করে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৪৫৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : বয়স ষাট পেরিয়েছে। এ বয়সেও তৈরি করেন নানা প্রকারের বাঁশি। এসব বাঁশি বিভিন্ন জেলার হাট-বাজার, মেলায় ও সপ্তাহের প্রতি শনিবার হাটের দিন দেখা গেলেও সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে বাঁশি বাজিয়ে বিক্রি করেন তিনি। বলছি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার আসমা ইউনিয়নের কৈলাহাটি গ্রামের বাঁশিপাগল আমির হোসেনের কথা।

দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা রোজগারে চলে তার পাঁচজনের সংসার। তাকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আমির হোসেন বাঁশির সুরে মুগ্ধ করেন মানুষকে। নিজের তৈরি বাঁশি পথে পথে বিক্রিও করেন। ৪০ বছর ধরে পথ থেকে পথে ঘুরে বাঁশিতেই জীবিকা খোঁজেন আমির হোসেন। একসময় যে বাঁশি বাজানো ছিল তার নেশা, ভাগ্য পরিক্রমায় আজ তা পেশা। জীবিকার তাগিদে কখনও রেলস্টেশন, কখনও ফুটপাত কিংবা বাজারে ফেরি করে চলেন বাঁশি।  

মধ্যনগর বাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন বছর ধরেই আমির হোসেন মধ্যনগর বাজারে সপ্তাহের প্রতি শনিবারে ফেরি করে বাঁশি বিক্রি করে আসছেন। এই বাঁশি বিক্রি করেই তিনি তার জীবনের পুরোটা সময় পার করেছেন। তার বাঁশির সুর শুনে ছোট থেকে বড় সবাই ছুটে আসেন। তার পাশে বসে বাঁশির সুর শোনে। এ ছাড়া পথে পথে বাঁশি বাজিয়ে নিজের তৈরি করা বাঁশি বিক্রি করেন তিনি। সেই বাঁশিগুলো ৬০ থেকে ১০০ টাকায় কিনে বাড়িতে নিয়ে যান ক্রেতারা।  

আমির হোসেনের স্ত্রী মোছা শামসুন্নাহার কালের কণ্ঠকে জানান, সংসারের অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে বাঁশি তৈরির কাজে আমি আমার স্বামীকে সহযোগিতা করি। প্রস্তুতকৃত বাঁশিতে রং-বার্নিশ দেওয়া, তা পোড়ানো ও রোদে শুকাতে দেওয়ার কাজ আমি করি। সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০টা বাঁশি তৈরি করে তা বিক্রির জন্য আমার স্বামী জেলায় জেলায় নিয়ে যান। কোনো দিন ১০ থেকে ১২টা আবার কোনদিন ১৫টা থেকে ২০টা বাঁশি বিক্রি করেন তিনি।

বাঁশির ফেরিওয়ালা আমির হোসেন বলেন, ছোটবেলায় থেকেই আমার বাঁশির প্রতি টান ছিল। তারপর এক ওস্তাদের কাছে বাঁশি বাজানো ও বাঁশি তৈরির কাজ শিখি। বাবা মারা যাওয়ার পর আমি নিজেই বাঁশি তৈরি করে  বিক্রি শুরু করি। তা  দিয়ে সংসার চালাই। জীবনের শেষ ইচ্ছা, বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান বাঁশিশিল্পী হওয়ার। তাই এখন পর্যন্ত বাজিয়ে চলেছেন আর বিক্রি করে যাচ্ছেন বাঁশি।

মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, বাংলা সংস্কৃতির প্রাচীন নিদর্শন হচ্ছে বাঁশি। আমাদের প্রাচীন ও আধুনিক সংগীতে বাঁশির ব্যবহার রয়েছে। আমরা যদি আন্তর্জাতিক দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পারব, ভারতে হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, বৃটেনের গ্রেমস জেলওয়ে ও বাংলাদেশের বারী সিদ্দিকী নামকরা বংশীবাদক ছিলেন। আমি শুনেছি যে, মধ্যনগর বাজারে আমির হোসেন নামে একজন বংশীবাদক প্রতি শনিবারে বাঁশিতে সুর তোলেন এবং বাঁশি বিক্রি করেন। আমির হোসেনকে আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৩:০৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit