রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন

লুট হচ্ছে ইয়েমেনের তেল-সম্পদ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২
  • ১০৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগ্রাসী সৌদি জোট গত চার বছরে ইয়েমেনের সাড়ে নয়শ’ কোটি ডলার মূল্যের জ্বালানী তেল সম্পদ লুট করেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির তেল ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী আহমাদ দারাস। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন।

তিনি আরও বলেছেন, “টোটাল ও শ্লামবার্গারসহ পশ্চিমা কোম্পানিগুলো ইয়েমেনের তেল সম্পদ লুণ্ঠনে এবং কেনা-বেচায় ভূমিকা রেখেছে। এই হিসাবের বাইরেও লুণ্ঠনের  অনেক তথ্য হয়তো এখনও প্রকাশ হয়নি বা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।”

ইয়েমেন সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এতকাল সবার কাছে যেটা স্পষ্ট ছিল তা হল মার্কিন ও পশ্চিমা সরকারগুলো আগ্রাসী এই জোটকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে। এখন এটাও স্পষ্ট যে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন সরকারসহ অর্থনৈতিক ও জ্বালানী সংকটের শিকার পশ্চিমা সরকারগুলো ইয়েমেনের তেল খনিগুলোতে লুণ্ঠনের থাবা বিস্তার করেছে। এইসব পশ্চিমা সরকার ইয়েমেনের নানা অঞ্চলের তেল খনিগুলোতে সরাসরি হানাদার লুটেরাদের পাঠানোর পাশাপাশি স্থানীয় আগ্রাসী সরকারগুলোকেও তেল সম্পদ লুটের সুযোগ করে দিয়েছে যাতে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস ও তেল সরবরাহের যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে তা পূরণ করা যায় ইয়েমেনি তেল লুণ্ঠন করে। তাই আরব আগ্রাসী সরকারগুলোর সঙ্গে পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর সহযোগিতার রহস্যও পুরোপুরি স্পষ্ট।

নানা সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা গেছে ইয়েমেনের গ্যাস ও তেল সম্পদের প্রতি লালসা ছিল দেশটির ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় আরব আগ্রাসী সরকারগুলো এবং তাদের পশ্চিমা সহযোগী ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের পারস্পরিক সহযোগিতার অন্যতম প্রধান নিয়ামক বা চালিকা-শক্তি। আর এ জন্যই আগ্রাসী এই শক্তিগুলো ইয়েমেনের গ্যাস ও তেল-সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোকে দখলে রেখেছে। ফলে ইয়েমেনের জাতীয় মুক্তি মোর্চ্চার সরকার সেখানকার জনগণের জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য আমদানির দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছে যদিও আগ্রাসী সরকারগুলো জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ বা বাহনগুলোকে ওই অঞ্চলে আসতে বাধা দিয়ে আসছে অবরোধের মাধ্যমে। এমনকি যুদ্ধ-বিরতির পরও এ ধরনের বাধা প্রদান বা জ্বালানী তেলের চালান আটকে রাখার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।  

ইয়েমেনে জাতীয় মুক্তি মোর্চ্চার সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত দেশপ্রেমিক সরকার না থাকায় দেশটি দরিদ্র ও অনুন্নতই থেকে গেছে। এ অবস্থায় সৌদি ও আমিরাতি আগ্রাসনের ফলে দেশটির অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়ে। সৌদি-জোটের হামলায় ইয়েমেনের প্রায় চার লাখ মানুষ নিহত  ও কয়েক লাখ আহত হয়েছে এবং শরণার্থী হয়েছে কয়েক মিলিয়ন মানুষ। এ ছাড়াও আগ্রাসী জোটের হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে দেশটির বেশিরভাগ অবকাঠামো যার আর্থিক মূল্য কয়েক হাজার কোটি ডলার। ইয়েমেনি জনগণের প্রায় ৮০ শতাংশই এখন বিদেশী সাহায্যের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ইয়েমেনে খাদ্য সাহায্য নাটকীয় মাত্রায় কমিয়ে দেয়ায় দেশটির এক কোটি ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ এখন অনাহারে রয়েছে। সেখানে প্রায় বিশ লাখ শিশু মারাত্মক অপুষ্টির শিকার ও তিন লাখ ৬০ হাজার শিশু একই কারণে মৃত্যুর মুখোমুখি। ইয়েমেনের নাগরিকদের মাত্র দুই শতাংশ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক টিকা দিয়েছেন। ইয়েমেনের তেল ও জ্বালানী সম্পদ যদি লুট না হতো ও তাদের ওপর পশ্চিমা মদদপুষ্ট আগ্রাসন চাপিয়ে দেয়া না হত তাহলে আজ তাদের এমন মানবীয় বিপর্যয়ের শিকার হতে হত না। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবীয় বিপর্যয় চলছে ইয়েমেনে! 
সূত্র: পার্সটুডে

কিউএনবি/অনিমা/২৩.০৮.২০২২/সকাল ৮.৪৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit