সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
পর্তুগালে বোরকা পরিধান নিষিদ্ধের প্রস্তাব হৃদয়ে পাবনার আয়োজনে কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাংকন ও নৃত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত দুর্গাপুর আলেম-ওলামাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা। নোয়াখালীতে জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষ,আহত-৪০ ‎কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে শ্যামাপূজায় লালমনিরহাট সীমান্তে দুই বাংলার আবেগাপ্লুত পুনর্মিলন লালপুরে তিন দফা দাবি আদায়ে  শিক্ষকদের বিক্ষোভ মিছিল আইসিসির বিবৃতি নিয়ে আপত্তি পাকিস্তানের ‎কালীগঞ্জে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ জয়পুরহাট চিনিকলের অবসরপ্রাপ্ত  শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মানববন্ধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন জয়পুরহাটে তিন দফা দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিবাদ সমাবেশ

দক্ষিণ আফ্রিকার জুলু রাজা হলেন মিসুজুলু কা জুয়েলথিনি

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২
  • ১৬৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এক বছর ধরে পারিবারিক বিবাদের পর অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় জুলু রাজ্যের নতুন রাজার অভিষেক হয়েছে। ননগোমা প্রাসাদে এক ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রিন্স মিসুজুলু কা জুয়েলথিনিকে স্থানীয় সময় শনিবার জুলু রাজার মুকুট পরিয়ে দেয়া হয়। এই রাজকীয় অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য মিসুজুলু কা জুয়েলথিনি আগের দিন যে সিংহ শিকার করেছিলেন, তার চামড়া তিনি পরিধান করেন।

ওই সিংহ শিকারের মধ্য দিয়ে তাকে প্রমাণ করতে হয়েছে যে, জুলু জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার প্রশ্নে তিনিই উপযুক্ত নেতা। উৎসবের প্রস্তুতি হিসেবে ১০টিরও বেশি গরু জবাই করা হয়। সাবেক রাজার এই ছেলের বয়স ৪৮ বছর, কিন্তু জুলু রাজপরিবারের কিছু সদস্য যুক্তি দেখিয়েছেন যে- তিনি সিংহাসনের সঠিক উত্তরাধিকারী নন, এবং প্রয়াত রাজার উইল জাল করা হয়েছে।

নতুন রাজার অভিষেক
রাজ্যাভিষেকের সময় হাজার হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন। দিনের শুরুতে নতুন রাজা গবাদিপশু রাখার পবিত্র খোঁয়াড়ে প্রবেশ করে তার পূর্ব পুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

আগামী মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাকে বরণ করে নেবে।

কিন্তু আধুনিক দক্ষিণ আফ্রিকায় জুলু রাজার কোনো আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক ক্ষমতা নেই।

kalerkantho

দক্ষিণ আফ্রিকার সর্ববৃহৎ জাতিগোষ্ঠী জুলু
দক্ষিণ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার মধ্যে জুলুরাই সবচেয়ে বড় জাতিগোষ্ঠী এবং এই রাজ্যকে সরকার প্রতিবছর ৪৯ লাখ ডলার বাজেট দেয়। ফলে জুলু রাজতন্ত্র সে দেশে বেশ প্রভাবশালী।

জুলু রাজ্যের রয়েছে এক গর্বিত ইতিহাস। ১৮৭৯ সালে ইসান্ডলওয়ানার যুদ্ধে জুলুরা ব্রিটিশ সৈন্যদের পরাজিত করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছিল।

তবে সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে যেসব যুদ্ধ হয়েছিল তা সবসময় ছিল ভয়ঙ্কর, এবং কখনও কখনও রক্তক্ষয়ী।

কিংবদন্তীতুল্য জুলু রাজা শাকা কা সেনজাঙ্গাখোনা ১৮১৬ সালে সিংহাসন দখলের লক্ষ্যে নিজের ভাইকে খুন করেছিলেন। এর কয়েক বছর তিনি নিজেও তার ভাতিজার চক্রান্তে নিহত হন।

কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময় আগে সর্বশেষ জুলু রাজা গুডউইল জুয়েলথিনি কা ভেকুজুলুর মৃত্যুর পর রাজপরিবারের সর্বসম্প্রতি ঘটনাগুলো জনসাধারণের সামনে এক বিব্রতকর নাটকে পরিণত হয়েছে।

রাজপরিবারে বিরোধ
জুলু রাজপরিবারের মধ্যে বিভিন্ন উপদল বিভিন্নভাবে মামলা দায়ের করেছে এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীদের রাজা বানানোর চেষ্টা করেছে।

সাবেক রাজা জুয়েলথিনির ছিল ছয় স্ত্রী এবং অন্তত ২৮ সন্তান। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে তিনি রাজত্ব করেছেন।

এক বিতর্কিত উইলে, প্রয়াত রাজা তার তৃতীয় স্ত্রী রানি মান্টফোম্বি দলামিনি জুলুকে রাজমাতা হিসেবে মনোনীত করেন। লক্ষ্য ছিল নতুন রাজার অভিষেক পর্যন্ত তিনি রাজ্য পরিচালনা করে যাবেন।

রানি মন্টফোম্বি প্রয়াত রাজার স্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কারণ তিনি নিজে এসেছিলেন আরেকটি রাজকীয় পরিবার থেকে। তার পিতা ছিলেন প্রয়াত রাজা দ্বিতীয় সোভুজা এবং তার ভাই ছিলেন প্রতিবেশী রাজ্য এসওয়াটিনির রাজা কিং তৃতীয় মেসওয়াটি।

জুলু রাজার সাথে রানি মন্টফোম্বির বিয়ের শর্ত ছিল যে তার স্বামীর মৃত্যুর পর তাদের প্রথম পুত্রই হবে সিংহাসনের দাবিদার।

তিন মাস রাজমাতার দায়িত্ব পালনের পর রানি মন্টফোম্বিও যখন মারা যান তখন স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছিল যে তাদের ছেলে মিসুজুলু কা জুয়েলথিনিই ক্ষমতা হাতে তুলে নেবেন। তার মায়ের উইলেও উত্তরসূরি হিসেবে তার নাম রাখা হয়েছিল।

কিন্তু গোল বাঁধল যখন প্রয়াত রাজার আরো দুই ছেলে সিংহাসনে ওপর নিজেদের দাবি তুলে ধরলেন।

রাজপরিবার তিনভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। এবং প্রত্যেক উপদল তাদের পছন্দের রাজপুত্রকে রাজা বানাতে চাইলো – মিসুজুলু কা জুয়েলথিনি, সিমাকাদে কা জুয়েলথিনি এবং বুজাবাজি কা জুয়েলথিনি।

প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতি
গত মার্চ মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে মিসুজুলু কা জুলেথিনিকে নতুন জুলু রাজা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু মিসুজুলুর নিজের ভাই এমবোনিসি জুলু মামলা করে রাজ্যাভিষেক বন্ধ করতে আদালতের আবেদন জানান।

তবে আদালত তার আবেদনটি খারিজ করে দেয় এবং অভিষেক অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়।

জুলু ঐতিহ্য অনুযায়ী মিসুজুলুর অভিষেকের ঠিক এক সপ্তাহ আগে, রাজপরিবারের কিছু সদস্য তার সৎ ভাই প্রিন্স সিমাকাদেকে নতুন রাজার পদে সমর্থন জানান।

তাদের যুক্তি ছিল, প্রিন্স সিমাকাদে প্রয়াত রাজার প্রথম পুত্র সন্তান। কিন্তু জুলু রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মাঙ্গোসুথু বুথেলেজি একে “মূর্খতা-পূর্ণ প্ররোচনা” বলে তাকে নাকচ করে দেন।

ওদিকে গত বৃহস্পতিবার নতুন রাজা জুয়েলথিনির আপন তিন ভাই সংবাদ সম্মেলন ডেকে প্রিন্স বুজাবাজিকে তাদের পছন্দের রাজা হিসেবে ঘোষণা করেন। তাদের দাবি হচ্ছে, সব ছেলের মধ্যে প্রিন্স বুজাবাজির সাথেই রাজার সম্পর্ক ছিল সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ।

তবে অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই গৃহবিবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উপজাতীয় সংঘাত।

নতুন রাজা মিসুজুলুর মা এসেছেন এসওয়াটিনি রাজ্য থেকে, যার অর্থ তার পুত্র শতভাগ জুলু হতে পারেন না। সে কারণে রাজপরিবারের কোনো কোনো সদস্য রানি মান্টফোম্বিকে রাজার মূল স্ত্রী হিসেবে পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারেননি।
সূত্র: বিবিসি।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২১ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ২:২১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit