রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

স্বপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে গীতা এখন আয়শা

খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২
  • ৯৯৬ Time View

খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : দীর্ঘ ৪০ বছর সনাতন হিন্দু ধর্মের দিক্ষিত ছিলেন গীতা রায়। হিন্দু পরিবার, প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ঘৃণা, অবহেলা পেয়ে ও বিভিন্ন ভাবে প্রতারিত হয়ে আসছিলেন তিনি। জীবনে যতটুকু সহায়তা ও সুপরামর্শ পেয়েছে তা প্রতিবেশী মুসলিমদের কাছ থেকে। এক পর্যায়ে সন্তানদের ইচ্ছার গুরুত্ব দিতে গিয়ে স্বপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলিম হয়েছে পরিবারটি। ইতোমধ্যে তারা হলফ নামার মাধ্যমে নাম পরিবর্তণ করেছেন। হুজুরের মাধ্যমে কালিমা পড়েছে। এখন তারা নামাজ রোজা পালনের পাশাপাশি ইসলামের রীতি নীতি মেনে চলছেন। ধর্মান্তরিত এই পরিবারটি মুসলিমদের কাছ থেকে সার্বিক সহায়তা কামনা করছেন।

গীতা রায় (আয়শা) প্রদত্ত হলফ নামা থেকে জানা গেছে, গীতা রায় (৪০) ভেদরগঞ্জ উপজেলার সিঙ্গাচুরা গ্রামের স্বপন রায়ের স্ত্রী ছিলেন। স্বামীর অত্যাচার ও পরিবারের নির্যাতনে তিনি দিশেহার হয়ে পড়েন। তখন প্রতিবেশী মুসলিমদের কাছ থেকে সহযোগীতা ও সহানুভূতি পেয়েছেন। স্বামী ও পিতার পরিবার যখন তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তখন সে ও তার সন্তানেরা সিদ্ধান্ত নেয় ধর্মান্তরিত হওয়ার। সেই সিদ্ধান্তমতেই কাজ করে আজ স্বপরিবারে মুসলিম আয়শা।আয়শা (গীতা) জানায়, বিয়ের পূর্বে থেকেই সে দর্জি কাজ শিখেছিলেন। ২০০৩ সালে স্বপন রায়ের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। স্বপন রায় নরসুন্দরের কাজ করতেন। এর পূর্বেও তার স্ত্রী ছিল এবং জুয়া সহ অনেক খারাপ নেশা ছিল। বিভিন্ন সময় স্বপন স্ত্রী গীতার মাধ্যমে উচ্চ সুদে টাকা ধার করে জুয়া খেলতেন। এক পর্যায়ে স্বপন ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমাকে তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারির কাছে বন্ধক রাখে।

বিষয়টি স্বামী স্বপনকে জানিয়েও কোন ফল পায়নি গীতা। বিয়ের দীর্ঘ ১৫ বছর পরে সন্তানদের নিয়ে সে স্বামীর সংসার থেকে চলে আসে। পরে তিনি শরীয়তপুর শহরে একটি টেইলার্স দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এখন তিনি ধার নেওয়া অনেক টাকা পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন সন্তানদের পরামর্শে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ইসলাম গ্রহণের পরে ছেলের নাম সয়ন রায় থেকে মো. ইব্রাহীম ও মেয়ে স্বর্ণা রায় থেকে মোসা. ফাতেমা ইসলাম আয়া হয়েছেন।মো. ইব্রাহীম ও ফাতেমা জানায়, বুঝতে শেখার পর থেকে দেখেছি মায়ের উপর পিতার অত্যাচার। আমাদেরও অত্যাচার করত। অনেকবার মেরে ফেলতেও চেয়েছে আমাদের।

আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে কোন প্রতিবাদ বা ন্যায় বিচার পাইনি। যতটুকু সহায়তা ও সহযোগিতা পেয়েছি তা মুসলিমদের কাছ থেকে। তাই আমরা মাকে মুসলিম হওয়ার জন্য প্রস্তাব করি। মা আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। পরে আইন ও ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। কালেমা পড়ে আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। এখন আমরা নামাজ পড়ি ও রোজা রাখি। ইসলামী বিধান মতে জীবন চালাতে চেষ্টা করছি। যেহেতু আমরা ধর্মান্তরিত সেহেতু মুসলিদের কাছ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা কামনা করি।

কিউএনবি/অনিমা/১৬ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৪:৩৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit