রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন

উন্নত বিশ্বের বিষাক্ত বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে পাকিস্তান?

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০২২
  • ৯০ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উন্নত দেশগুলো তাদের বিষাক্ত বর্জ্য পাকিস্তানে পাঠাচ্ছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সেদেশের পরিবেশবিদ এবং রাজনীতিবিদরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপজ্জনক বর্জ্য ফেলার জন্য কোনো কার্যকর নিরাপত্তা প্রটোকল নেই পাকিস্তানের।

পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সিনেটের স্থায়ী কমিটিতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি দেশ পাকিস্তানে বিপুল পরিমাণ বিষাক্ত বর্জ্য পাঠাচ্ছে।

কমিটির সদস্য মোহাম্মদ হুমায়ূন মোহমান্দ বলেছেন, ‘‘আমাদের এখানে সাধারণ বর্জ্য এবং বিষাক্ত বর্জ্য আলাদা করার প্রযুক্তি নেই। আমাদের বলা হয়েছে, এসব বর্জ্যের ১৪ শতাংশে বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে।”

সরকার কেন এই বর্জ্য আমদানির অনুমতি দিয়েছে? সে বিষয়ে তিনি সরাসরি কিছু না বলে বলেছেন, কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংক্রান্ত সবধরনের তথ্য রয়েছে, সেগুলো এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কমিটির অন্য সদস্য তাজ হায়দারও এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন, কিন্তু বর্জ্যে কী ধরনের বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি।

বর্জ্যের মধ্যে কিছু বিষাক্ত উপাদান থাকে, যেগুলো সহজে নষ্ট করা যায়, কিন্তু এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলোকে সাধারণ প্রযুক্তির সাহায্যে নষ্ট করা যায় না। 

পাকিস্তানে কীভাবে এসব বর্জ্য আসছে?

পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা সৈয়দ মুজতবা হুসেইন জানান, পাকিস্তান বিষাক্ত বর্জ্য সংক্রান্ত বাসেল কনভেনশনে সাক্ষর করেছে, যার আওতায় দেশটিতে বিষাক্ত বর্জ্য আমদানি এবং বিনষ্ট করা নিষিদ্ধ।

কিন্তু অনেক সময় সাধারণ বর্জ্যের সাথেই বিষাক্ত বর্জ্য চলে আসছে, যা আলাদা করা কঠিন বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৬২৪টি কনটেইনারে করে প্লাস্টিক বর্জ্য পাকিস্তান আমদানি করেছিল, সবগুলোতেই বিষাক্ত পদার্থ ছিল। সেই সময় পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগও করেছিল।

পাকিস্তান উন্নত দেশ থেকে বর্জ্য আমদানি করে। কারণ এসব বর্জ্যে যেসব ধাতব পদার্থ থাকে, সেগুলো ফ্যান, ধাতব তার, মোটর, দরজা-জানালা তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে।

জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা জাইঘাম আব্বাস জানালেন, ‘‘বর্জ্য আমদানি আইনের ক্ষেত্রে একটা ফাঁক রয়েছে, তা হলো সেখানে ‘অন্যান্য আইটেম’ নামে একটা ক্যাটাগরি আছে। সেটার আওতায় যারা বর্জ্য পাঠাচ্ছে, তারা এই ক্যাটাগরিতে কী জিনিস আসছে সে বিষয়ে তথ্য না-ও জানাতে পারে।” 

তিনি আরো জানান, এসব বিষাক্ত পদার্থ খুব সহজে পানি আর মাটিতে মিশে যায়, আর এটি পোড়ালে বায়ু দূষণ হতে পারে। সেইসব বিষাক্ত পদার্থের তালিকা চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন।

সিন্ধু প্রদেশে সরকারের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাকিস্তানে বিষাক্ত বর্জ্য আলাদা করার কোনো প্রযুক্তিই নেই। ফলে ঠিক কী পরিমাণ বিষাক্ত বর্জ্য জমা হয়েছে তা তাদের জানা নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি এবং বেসরকারি রিসাইক্লিং কোম্পানিগুলোর কারণেই এসব বিষাক্ত বর্জ্য পাকিস্তানে প্রবেশ করছে।

করাচির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী আহমাদ সাব্বার বলেন, চীন বিষাক্ত বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ করার পর পাকিস্তানসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিষাক্ত বর্জ্য রপ্তানি বেড়েছে। পাকিস্তানে কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় এসব বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে, অথবা পোড়ানো হচ্ছে, যার ফলে উচ্চমাত্রায় পানি ও বায়ু দূষণ হচ্ছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৮ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit