শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
পরিবারে সুখ ফেরাতে বিদেশে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শার্শার রনি শার্শায় গৃহবধূকে গনধর্ষণের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু মনিরামপুর প্রেসক্লাবের দাতা সদস্যের বোনের ইন্তিকাল মনিরামপুরে রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা আটোয়ারীতে কিন্ডারগার্টেনের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ পাঁচদোনা টু ডাঙ্গা চারলেন সড়ক অপরাধীদের অভয়ারণ্যে  চৌগাছায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত দৌলতপুরে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন চৌগাছায় ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপি নেতাকে পিটিয়েছে প্রতিবেশী পুলিশ সদস্য

সিলেটে বন্যায় কৃষিতে এক হাজার ১১৩ কোটি টাকার ক্ষতি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২
  • ১২৩ Time View

ডেস্কনিউজঃ সিলেটে তিন দফা বন্যায় বোরো, আউশের বীজতলা, আউশের ফলন, সবজি, বোনা আমন ও চিনাবাদামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে এক হাজার ১১৩ কোটি ৮৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা চার লাখ ২৯ হাজার ৪০১ জন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ মোশাররফ হোসেন খান বাসসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আউশ ধান ও বীজতলার সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে। আউশে ৫৬১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, সবজিতে ৩৬৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে ১১৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা, বোনা আমনের ক্ষতি ৫৭ কোটি ৩৪ লাখ, আউশের বীজতলায় ১০ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং চিনাবাদামে ৮৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকার ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।

মে মাসের বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় আউশের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে এই দুই জেলায় আবাদ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় গড়ে আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৪৭ শতাংশ। যদিও, বিভাগের অন্য দুই জেলায় জুন মাসে বন্যার ভয়াবহতায় মোট আবাদের ৬৩ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট বিভাগের চার জেলায় আউশের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ সাত হাজার ৩৫১ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদ হয়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ৬৭২ হেক্টর জমিতে। সিলেট জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮ হাজার ৪৮০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৪৬ হেক্টর। সুনামগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৮০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৮১৩ হেক্টর। হবিগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩ হাজার ৩৩১ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ২৭৭ হেক্টর। মৌলভীবাজারে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৬ হাজার ৪৩০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৩০৫ হেক্টর। হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি অর্জন থাকায় গড়ে ৭১ দশমিক ৯৩ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে।

এবার চার জেলায় ৬৯ হাজার ১৪ হেক্টর আউশের ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় পানিতে তলিয়ে গেছে ৪০ হাজার ৬৫২ হেক্টর জমির ফসল, যা দুই জেলায় মোট আবাদের ৮৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। নিমজ্জিত ফসলের মধ্যে ২৯ হাজার ৫২৪ হেক্টর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মোট আবাদের ৬৩ শতাংশ।

মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যায় ২৮ হাজার ১২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। চার জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের এলাকা ৫৪ হাজার ১০০ হেক্টর। এ জমি থেকে স্বাভাবিক হারে ১৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হতে পারত। আর্থিক হিসাবে ক্ষতি ৫৬১ কোটি ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।

গত মে মাসের বন্যায় সিলেট বিভাগে ১৮৬২ হেক্টর বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেবল জেলায় এক হাজার ৬৬০ হেক্টর বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মোট ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯৩৬ টাকা।

দুই দফা বন্যায় বোনা আমনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হবিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারে এ বছর ১৭ হাজার ৭৮ হেক্টর বোনা আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৯৮৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা আর্থিক হিসাবে ৫৭ কোটি ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৩৭৫ কৃষক। ১৫ হাজার ১৬৭ মেট্রিক টন চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন দুই জেলার বাসিন্দারা। সিলেট জেলায় ২০৫০ হেক্টর বোনা আমন আবাদ হলেও ক্ষয়ক্ষতির খবর নিরূপন করা যায়নি।

এবার শাকসবজিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৬২ হাজার ১৯০ জন কৃষক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। মোট ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ৮০৫১ হেক্টর। এর মধ্যে সিলেট জেলায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর, ক্ষতির পরিমাণ ২০২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, হবিগঞ্জে ১৭২১ হেক্টর, ৫১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, সুনামগঞ্জে ১১৪১ হেক্টর, ৮৭ কোটি ৫১ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং মৌলভীবাজারে ৯৭ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা টাকার হিসেবে দুই কোটি ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে বিভাগে সবজিতে ক্ষতি ৩৬৭ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এবার বন্যার প্রথম ধাক্কা ছিল বোরোতে। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে উজানের ঢলে ফসল রক্ষাবাঁধ ভেঙ্গে হাওরের বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। দ্বিতীয় দফায় মে মাসে আবারো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আবারো ক্ষতির মুখে পড়ে বোরো ফসল। প্রথম দফায় সুনামগঞ্জে পাঁচ হাজার ৭৭৫ হেক্টর, সিলেটে ৫৬৫ হেক্টর এবং হবিগঞ্জে ৮০ হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় সিলেটে এক হাজার ৭০৪ হেক্টর, সুনামগঞ্জে ৯০৫ হেক্টর এবং মৌলভীবাজারে পাঁচ হেক্টর বোরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবমিলিয়ে নয় হাজার ৩৪ হেক্টর বোরো ধান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর্থিক হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ১১৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

এছাড়া দ্বিতীয় দফা বন্যায় সুনামগঞ্জে ৮২ হেক্টর চিনাবাদাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর্থিক হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

সিলেট জেলা কৃষি কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা জানান, তৃতীয় দফা বন্যায় সিলেট জেলায় ক্ষতির পরিমাণ ৩৭৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। দ্বিতীয় ও প্রথম দফায় বোরো, আউশের বীজতলা ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিন দফা বন্যায় জেলায় দুই লাখ ২২ হাজার ১২৪ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন, জেলায় তিন দফা বন্যায় বোরো ফসল আবাদকারী ২৬ হাজার ১৩০ জন কৃষক, আউশে ২৮ হাজার ৯৯৩ জন কৃষক, সবজিতে সবজিতে ১৬ হাজার ৯৯৯ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে জেলায় ক্ষতির পরিমাণ ২৪৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

তিনি আরো জানান, এ বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭ হাজার ৫৭০ জন কৃষককে আমন মৌসুমের জন্য পাঁচ কেজি সার, ১০ কেজি বিওপি এবং ১০ কেজি এমপিও সার প্রদান করা হবে।

সূত্র : বাসস

কিউএনবি/বিপুল/০৪.০৭.২০২২/ রাত ১১.২৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit