স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে ভোজগাতী ইউনিয়নে ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। এতে পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক, থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়কসহ অন্তত: ১০ নেতাকর্মী আহত হয়। তবে এ ঘটনায় দলের বিবদমান দুই গ্রুপ একে অপরকে দোষারোপ করেছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।জানাযায়, মনিরামপুর থানা ও পৌর বিএনপির সম্মেলনকে সামনে রেখে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন প্রক্রীয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধশতাধীক ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বিপত্তী ঘটেছে দলের কর্তৃত্ব নিয়ে। থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুছা ও বর্তমান কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ভোজগাতী ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত তছির উদ্দিনের বাড়ির পাশে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আবদুস সাত্তার দফাদার। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জিএম মিজানুর রহমান, খান শফিয়ার রহমান ও পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জুলফিকার আলী ভূট্টো। সম্মেলনের সভাপতি আবদুস সাত্তার দফাদার জানান, এক পর্যায়ে উপস্থিতিদের কণ্ঠভোটে সুলতান আহম্মেদ সভাপতি, আতিয়ার রহমান সাধারন সম্পাদক ও হাফিজুর রহমান সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। সম্মেলনের অতিথি থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জিএম মিজানুর রহমান জানান, মূলত এ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে তিনি সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন।
এ দিকে সম্মেলন শেষে বিএনপি কর্মী জামির হোসেন(শহীদ ইকবাল পন্থী) বাইসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। জামির হোসেন অভিযোগ করেন,সন্ধ্যার দিকে পথিমধ্যে চালকিডাঙ্গা গ্রামের পূর্বপাড়ায় পৌছুলে প্রতিপক্ষ জাকির হোসেনের(মুছা পন্থী) নেতৃত্বে তার ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারপিট করা হয়। এতে তার ডান পাটি ভেঙ্গে যায়। অবশ্য হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ জাকির হোসেন অস্বীকার করেন।
পরে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। সেখান থেকে নেতাকর্মীরা জামির হোসেনকে উদ্ধারের পর পৌরশহরের রোকেয়া ক্লিনিকে নেয়ার সময় ক্লিনিকের সামনে পৌছলে প্রতিপক্ষরা হামলা চালিয়ে মারপিট করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে তারেক জিয়া পরিষদের নেতা আরিফ হোসেন ও শামিম হোসেন আহত হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে পৌছলে আবারও প্রতিপক্ষরা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। এ সময় শহরে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আহত হয় পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন, থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ইমরান হোসেন, ইজাজুল ইসলাম, হোসেন আলী, সোহাগ হোসেন, ইব্রাহিম হোসেনসহ বেশ কয়েকজন।
তবে সংঘর্ষের ঘটনায় বিবদমান দুই গ্রুপ মোহাম্মদ মুছা ও শহীদ ইকবাল হোসেন একে অপরকে দোষারোপ করেছেন। শহীদ ইকবাল হোসেন জানান, মোহাম্মদ মুছা গনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরিকল্পীতভাবে বিভিন্ন এলাকায় দলের সম্মেলন বন্ধ করার অপেচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।ফলে তার উষ্কানিতে কতিপয় উচ্ছৃংখল কর্মী এ হামলা করেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মোহাম্মদ মুছা জানান, পকেট কমিটি গঠনে বাঁধা দেওয়ায় শহীদ ইকবালের লোকজন তার পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালায়িছে। মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) নূর ই আলম সিদ্দিকী জানান, দুগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে অনাকাংখিত কোন ঘটনা রুখতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে ।
কিউএনবি/অনিমা/০৮.০৬.২০২২/রাত ১০.৩৪