স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ না করে নিজ প্রতিষ্ঠানের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীর সাথে প্রেম করে গোপনে বিয়ে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে সহকারি শিক্ষক আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হবার পর এলাকাবাসীর রোষানল থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ওই শিক্ষক গা ঢাকা দিয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুস সামাদ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক(বাংলা)। তিনি উপজেলার ঢাকুরিয়া গ্রামের শতকত আলীর ছেলে।
জানাগেছে, জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুস সামাদ ইতিপূর্বে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি বিয়ে না করে ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন করেন। এক পর্যায়ে গত সপ্তাহে ৮ম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে যশোরে নিয়ে গোপনে বিয়ে করেন তিনি। বাল্যবিবাহের শিকার ওই ছাত্রী একই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আমানত হোসেনের বেনের মেয়ে(ভাগ্নি)। অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের মধ্যস্থতায় এ বিয়ে হয়। বাল্য বিয়ের এ বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। ফলে এলাকাবাসীর রোষানল থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষক আব্দুস সামাদ স্কুল ছেড়ে পালিয়েছে।মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে আব্দুস সামাদকে স্কুলে পাওয়া যায়নি। এসময় কথা হয় একজন সহকারি শিক্ষকের সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষক আমানত হোসেনের স্ত্রী সন্তান থাকা সত্ত্বেও একজন গৃহবধুর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক করে তাকে বিয়ের পর অন্যত্র সংসার করছেন।
এখন আবার তার মধ্যস্থতায় ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীর সাথে বিয়ে হয়েছে শিক্ষক আব্দুস সামাদের। অবশ্য বাল্য বিয়েতে মধ্যস্থতার অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক আমানত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিয়ের বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন।রবিউল ইসলাম নামে একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধের জন্য সরকার যখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। তখন স্কুলের শিক্ষক হয়ে কিভাবে তিনি এ কাজ(বিয়ে) করলেন। আবার ইসমাইল হোসেন নামে অপর এক অভিভাবক জানান, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করা শিক্ষকের দায়িত্ব। অথচ প্রতিরোধ না করে আব্দুস সামাদ ছাত্রীকে বিয়ে করে বাল্য বিবাহ উষ্কে দিয়েছে। তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
তবে ওই ছাত্রীর পিতা জানান, আব্দুস সামাদের সাথে তার মেয়ের বিয়ের তোজজোড় চলছিল। কিন্তু এলাকার একটি কুচক্রি মহলের কারনে সেটা সম্ভব হয়নি। খেদাপাড়া ইউনিয়ন বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ জানান, ঘটনাটি শোনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে পরামর্শ করে গ্রাম পুলিশ নিয়ে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বিয়ের কোন দালিলিক প্রমান না পাওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, বিষয়টি জানাজানির পর শিক্ষক সামাদ স্কুল ছেড়ে পালিয়েছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউএনবি/অনিমা/০৭.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ১১:০৬