নিউজ ডেক্স : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নৌবাহিনীর জন্য একটি বিশাল ও সাহসী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এই পরিকল্পনার অধীনে একটি নতুন ও বড় যুদ্ধজাহাজ তৈরি করা হবে, যাকে ট্রাম্প ‘ব্যাটলশিপ’ বলে অভিহিত করছেন। এই উদ্যোগটি তার প্রস্তাবিত ‘গোল্ডেন ফ্লিট’ গঠনের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, এই জাহাজটি হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার আইওয়া-শ্রেণির ব্যাটলশিপগুলোর চেয়ে আরো লম্বা ও বড়।
এতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, রেল গান এবং উচ্চক্ষমতার লেজার বসানো হবে, যেগুলো সবই বর্তমানে এখনও উন্নয়ন পর্যায়ে রয়েছে এবং মার্কিন নৌবাহিনী এখানে কাজ করছে। মাত্র এক মাস আগেই নৌবাহিনী নতুন ও ছোট আকারের একটি যুদ্ধজাহাজ তৈরির পরিকল্পনা বাতিল করে দেয়। বাড়তে থাকা বিলম্ব ও ব্যয় বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। এর বদলে, সম্প্রতি পর্যন্ত উৎপাদন হওয়া একটি কোস্ট গার্ড কাটারের সংশোধিত সংস্করণ ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ছাড়া নৌবাহিনী তাদের অন্যান্য নতুন নকশার জাহাজও নির্ধারিত সময় ও বাজেটের মধ্যে নির্মাণে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন ফোর্ড-শ্রেণির বিমানবাহী রণতরী এবং কলাম্বিয়া-শ্রেণির সাবমেরিন। ঐতিহাসিকভাবে যুদ্ধজাহাজ শব্দটি একটি খুব নির্দিষ্ট ধরণের জাহাজকে বোঝায়। এগুলো বৃহৎ ও ভারী সাঁজোয়া জাহাজ, যা বিশাল অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত থাকে।
এগুলো অন্যান্য জাহাজ বা তীরে লক্ষ্যবস্তুতে বোমাবর্ষণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই ধরণের জাহাজটি খ্যাতির শীর্ষে ছিল এবং মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলির মধ্যে বৃহত্তম আইওয়া শ্রেনীর। জাহাজগুলো প্রায় ৬০ হাজার টন ওজনের ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আধুনিক নৌবহরে যুদ্ধজাহাজের ভূমিকা দ্রুত হ্রাস পায়। মার্কিন নৌবাহিনী ১৯৮০-এর দশকে আধুনিক রাডারের সঙ্গে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত করে চারটি আইওয়া-ক্লাস যুদ্ধজাহাজকে আধুনিকীকরণ করেছিল।
কিন্তু ১৯৯০-এর দশকের মধ্যে চারটিই বাতিল করা হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন নৌবাহিনীর বহরের বিভিন্ন দিক নিয়ে দৃঢ় মতামত প্রকাশ করে আসছেন। অনেক সময় তিনি আধুনিকীকরণের বদলে পুরোনো প্রযুক্তি ধরে রাখার পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন। তার প্রথম মেয়াদে, তিনি নৌবাহিনীর নতুন বিমানবাহী রণতরীতে জেট বিমান উৎক্ষেপণের জন্য ব্যবহৃত আধুনিক ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সিস্টেমের পরিবর্তে আবার বাষ্পচালিত ক্যাটাপল্ট ব্যবহারের আহ্বান জানান। তবে সেই উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি।
নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলোর নকশা ও চেহারা নিয়েও তিনি প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি নৌবাহিনীর অনেক জাহাজে মরিচা পড়া অবস্থা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন। সোমবার ট্রাম্প আরো জানান, এই নতুন যুদ্ধজাহাজের নকশাতেও তার সরাসরি ভূমিকা থাকবে। তিনি বলেন, ‘মার্কিন নৌবাহিনী আমার সঙ্গে মিলেই এই জাহাজগুলোর নকশার নেতৃত্ব দেবে, কারণ আমি একজন খুব নান্দনিক মানুষ।’
কিউএনবি / মহন / ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫,/ দুপুর ১২:২১