কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রাম জেলা সদরস্থ খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিয়োগবিধি লঙ্ঘন, আর্থিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, ভুয়া সনদ ব্যবহার এবং সরকারি বরাদ্দ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের একটি অংশ এসব অভিযোগের তদন্ত দাবি করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানের তিন সাবেক অধ্যক্ষ রীতা রানী দেব, এস এম সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম।
নতুন আলোচনায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামঃ সূত্র অনুযায়ী, কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম ১ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি গভর্নিং বডি গঠন, ব্যাংক হিসাব পরিচালনা এবং আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নিয়মবহির্ভূত পদক্ষেপ নেন।
অভিযোগকারীরা দাবি করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার সুযোগ নিয়ে শহিদুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ বন্ধু খন্দকার গোলাম ফারুককে এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনয়নের চেষ্টা করেন, যদিও ফারুক প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী বা অভিভাবক নন। জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে এ বিষয়ে সুপারিশ তালিকা নতুনভাবে প্রেরণ করা হলেও, অভিযোগকারীদের দাবি, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা “পরোক্ষ তদবির” ও আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ফারুকের মনোনয়ন অনুমোদিত হয়। এসব অভিযোগের স্বতন্ত্র সরকারি যাচাই চলমান ।
এডহক কমিটির বৈঠক নিয়ে প্রশ্নঃ অভিযোগ রয়েছে, শহিদুল ইসলাম অবসরের ঠিক আগের দিন একাধিক রেজুলেশন অনুমোদন করান, যা নিয়ম অনুযায়ী পূর্ব ঘোষণা এবং সময়সীমা না রেখেই সম্পন্ন করা হয়। এতে ব্যাংক হিসাবের যৌথ স্বাক্ষর পরিবর্তনসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে অভিযোগকারীদের দাবি।
ব্যাংক লেনদেন নিয়েও অভিযোগঃ অভিযোগ অনুযায়ী, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে দুই দিনে জনতা ব্যাংক, ত্রিমোহনী শাখা থেকে মোট ১১ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৪ টাকা উত্তোলন করা হয়। অভিযোগকারীরা দাবি করেন, এর মধ্যে একটি তারিখে উত্তোলন করা হয়েছে শহিদুল ইসলামের অবসরের পরের দিন; ফলে লেনদেনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
“দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান”: প্রতিষ্ঠানের একাধিক শুভানুধ্যায়ী জানান, প্রায় ২০ বছরে শিক্ষার মানোন্নয়ন না হলেও বিভিন্ন সময় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়মিত উঠেছে। তাদের দাবি, তিন সাবেক অধ্যক্ষ মিলিয়ে প্রায় সাত কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে যার সবগুলোই যথাযথ তদন্ত প্রয়োজন।
তদন্ত দাবি ও পরবর্তী পদক্ষেপঃ অভিযোগকারীরা বলেন,“প্রতিষ্ঠানের অর্থ শিক্ষক–কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যবহার হতে হবে। অতীতের সব অনিয়ম তদন্ত করে প্রকৃত সত্য বের করতে হবে এবং যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হন—তাহলে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
মুঠোফোনে যোগাযোগের পরেও এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
কিউএনবি/রাখি/০৫.১২.২০২৫/বিকাল ৫.২৫