রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জ্বালানি কিনতে পারলে, ভারত কেন পারবে না: পুতিন

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৮১ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি বাণিজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যেই ভারত সফরে এসে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার প্রশ্ন, যখন ওয়াশিংটন নিজেই রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনছে, তখন ভারত কেন পারবে না? দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লিতে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উষ্ণ আলিঙ্গনে অভ্যর্থনা পাওয়ার পর ভারতীয় টিভি চ্যানেল ইন্ডিয়া টুডে–কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। সফরের মূল লক্ষ্য দুই দেশের বাণিজ্য বাড়ানো এবং লেনদেনে পণ্যের পরিধি আরও বিস্তৃত করা।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, চার বছর পর নয়াদিল্লিতে পুতিনের এ সফরের উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ার তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান বিক্রি বাড়ানো এবং জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতের বাইরে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা। এর মাঝেই রয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মস্কোর সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ।
সোভিয়েত যুগ থেকে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, আর দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়াই ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী। ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সাগরপথে রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হিসেবে উঠে এসেছে ভারত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আর রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় অপরিশোধিত তেল আমদানি এই মাসে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে আসার পথে রয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখনও আমাদের কাছ থেকে নিজেদের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানি কেনে। সেটাও তো জ্বালানি। তাহলে যুক্তরাষ্ট্র যখন পারে, ভারত কেন পারবে না? বিষয়টি পরিষ্কার ব্যাখ্যা দরকার এবং আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেও আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
ভারতও দাবি করেছে, ভারতের ওপর ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক অযৌক্তিক এবং অস্বাভাবিক। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও রুশ জ্বালানি ও নানা পণ্য বিলিয়ন ডলারে আমদানি করছে।
পশ্চিমা চাপের কারণে ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাচ্ছে— এমন প্রশ্নে পুতিন বলেন, ‘এ বছর প্রথম ৯ মাসে বাণিজ্য কিছুটা কমেছে। তবে এটি খুবই সামান্য বিষয়। মোট বাণিজ্য আগের মতোই রয়েছে। ভারতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ও অন্যান্য জ্বালানির বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই চলছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ইস্যুতে পুতিন জানান, ট্রাম্পের উপদেষ্টারা বিশ্বাস করেন এসব শুল্ক নীতিই আমেরিকার জন্য লাভজনক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মভঙ্গের সব অভিযোগ শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়ে যাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে মোদি নিজে গিয়ে পুতিনকে স্বাগত জানান। লাল গালিচায় আলিঙ্গনের পর দুই নেতা একই গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রী মোদির দেয়া নৈশভোজে যান।
পুতিনের সঙ্গে ভারতে এসেছেন রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ও বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল। শুক্রবার মোদি-পুতিন বৈঠকে নানা চুক্তি ঘোষণা করা হতে পারে। মোদি এক্সে লিখেছেন, ‘বন্ধু প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আনন্দিত। ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।’

রাশিয়া ও ভারত দুই দেশের বাণিজ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারে নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ২০২১ সালের প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৪-২৫ সালে তা বেড়ে প্রায় ৬৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়, যার বড় অংশই ভারতের জ্বালানি আমদানি। তবে ২০২৫ সালের এপ্রিল-আগস্টে দুই দেশের বাণিজ্য কমে ২৮.২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। মূলত অপরিশোধিত তেল আমদানি কমে যাওয়ায় বাণিজ্যের পরিমাণও কমে যায়।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৫ ডিসেম্বর ২০২৫,/বিকাল ৩:১৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit