মো. সাইদুল আনাম, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অনৈতিক কাজের অভিযোগে ভূমি কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এস. এম. সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ এবং অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে এলাকাবাসী। পরে স্থানীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এ ঘটনা ঘটলে রবিবার (১৬ নভেম্বর ) তাকে অন্য উপজেলায় বদলি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাগপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এস. এম. সোহরাব হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্রাগপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত থাকায় স্থানীয় লোকজনদের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে এবং তিনি নিজস্ব বলয়ও গড়ে তোলেন। ভূমি সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে দাখিলা কিংবা নামজারি নামে নিয়মিত অনৈতিক ও আর্থিক সুবিধা দাবি করতেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, পর্যাপ্ত টাকা না দিলে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নামজারির আবেদন বাতিল করতেন।
এরই সূত্র ধরে স্থানীয় এক নারী সেবাগ্রহীতার সঙ্গে তিনি অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত বৃহস্পতিবার ওই নারীকে অফিসে ডেকে নিয়ে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে অফিস কক্ষে আটকিয়ে রাখে। পরে সন্ধ্যায় স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দেনদরবার শেষে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মহিষকুন্ডি এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, দুই মাস আগে একটি নামজারির জন্য ৩ বার আবেদন করলে তিনি সেটি বাতিল করে দেন। পরে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন সোহরাব হোসেন। তার দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করা হলে নামজারিটি সম্পন্ন হয়।
তবে অভিযুক্ত প্রাগপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এস. এম. সোহরাব হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ ঘটনার বিষয়ে প্রাগপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক জিয়াউর রহমান ও কম্পিউটার অপারেটর সাহাবুল হক বলেন, স্থানীয়রা সোহরাব হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। তখন আমরা কেউ অফিসে উপস্থিত ছিলাম না। কেন অবরুদ্ধ রেখেছিলেন তা আমরা জানি না।
এবিষয়ে দৌলতপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রদীপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তাকে ভেড়ামারা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এক লক্ষ টাকার বিষয়টি জানিনা। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, অনৈতিক কাজের অভিযোগে স্থানীয়রা তাকে অবরুদ্ধ করেছিলেন বলে শুনেছি। তার বিরুদ্ধে অফিশিয়ালি তদন্ত চলছে এবং তাকে ইতোমধ্যে বদলি করা হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৬ নভেম্বর ২০২৫,/রাত ১১:৪০