বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৭ অপরাহ্ন

মাত্র দুই সপ্তাহ চলার মতো পানি আছে তেহরানের এক কোটি মানুষের

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২৪ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের রাজধানী তেহরানের প্রধান খাবার পানির উৎস দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম।

শহরটির পানি সরবরাহকারী সংস্থার পরিচালক বেহজাদ পারসা বলেছেন, শহরের প্রধান জলাধার আমির কাবির বাঁধে বর্তমানে ‘মাত্র ১৪ মিলিয়ন ( এক কোটি ৪০ লাখ) ঘনমিটার পানি’ রয়েছে। এক বছর আগে সেখানে ৮৬ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি ছিল।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বর্তমান স্তরে এটি ‘মাত্র দুই সপ্তাহ’ তেহরানকে পানি সরবরাহ করতে পারবে।

তেহরান প্রদেশ দীর্ঘমেয়াদী খরার কবলে পড়েছে, যা অঞ্চলটিকে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর পানি সংকটের মুখে ফেলেছে। অক্টোবর মাসে এক স্থানীয় কর্মকর্তা বলেন, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ‘গত এক শতাব্দীর মধ্যে প্রায় নজিরবিহীন’।

ইরানের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ১০ দিনেও সেখানে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। তেহরানে দৈনন্দিন জীবনে এরই মধ্যে খরার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এক নারী বলেন, আমি টয়লেট ও অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য পানির ট্যাঙ্কার কিনতে যাচ্ছি।

তেহরানের প্রধান জলাধার লাতিয়ান বাঁধে এখন ধারণক্ষমতার ১০ শতাংশেরও কম পানি রয়েছে। কারাজ বাঁধের অবস্থাও একই ধরনের শোচনীয়। বাঁধটির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ-আলি মোয়াল্লেম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাত ৯২ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে রিজার্ভারে মাত্র আট শতাংশ পানি রয়েছে। এর বেশির ভাগই ‘ডেড ওয়াটার’ অর্থাৎ ব্যবহার অনুপযোগী।

ইরানের জ্বালানি মন্ত্রী আব্বাস আলি আবাদি বলেছেন, কিছু রাতে হয়তো পানির প্রবাহ শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। অতিরিক্ত পানি ব্যবহারকারীদের জরিমানারও পরিকল্পনা করছে সরকার।

তিনি আরও জানান, তেহরানের শতবর্ষ পুরোনো পাইপলাইন ও অবকাঠামো থেকে পানি লিকেজ এবং সাম্প্রতিক ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো সংকটকে আরও গভীর করেছে।

ইরানজুড়ে পানি সংকট এবং ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনমনে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। রাজধানীর বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে খুজেস্তান এবং সিস্তান-বালুচিস্তানের গ্রাম পর্যন্ত, জীবনযাত্রা এমনভাবে ব্যাহত হচ্ছে যাকে অনেকেই বলছেন অসহনীয়।

টানা পাঁচ বছর শুষ্কতা এবং রেকর্ড তাপের পর, তেহরান পৌরসভার কলগুলো শুকিয়ে যাওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বাসিন্দাদের পানির ব্যবহার কমপক্ষে ২০ শতাংশ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, জুলাই মাসে চাহিদা গত বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ কমেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে যে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর জুড়ে সরবরাহ সচল রাখতে আরও ১২ শতাংশ হ্রাস প্রয়োজন।

তেহরান এবং অন্যান্য শহরের সরকারি ভবনগুলো জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য নিয়মিত বন্ধ থাকে, যার ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনৈতিক ক্ষতির অভিযোগ করে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১০ নভেম্বর ২০২৫,/রাত ১০:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

November 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit