ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ‘নো ওয়েজ বোর্ড নো মিডিয়া’ নীতি কার্যকরসহ ২১ দফা দাবি জানিয়েছে। শনিবার সকালে কক্সবাজারে সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সভায় এসব দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— সাংবাদিকদের সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি ও সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী কালাকানুন বাতিল এবং সাংবাদিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন।
বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি একেএম মহসিন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, এহতেশামুল হক শাওন, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক মো. আবু বকর, প্রচার সম্পাদক শাজাহান সাজু, নির্বাহী সদস্য শাহীন হাসনাত, অপর্ণা রায় ও মো. আবু হানিফ প্রমুখ।
এছাড়া বিভিন্ন আঞ্চলিক সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন— ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল ইসলাম হেলালী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাফর, ময়মনসিংহ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আনিসুজ্জামান, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আকরামুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সাঈদ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল আউয়াল, দিনাজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম রিপন, সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মাহফুজুর রহমান, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এইচ এম দেলোয়ার, মুন্সিগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন মানিক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ভূঁইয়া ও ফেনি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সিদ্দিক আল মামুন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জন্য একটি সমন্বিত জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান। তারা বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ৫০টি আইন, নীতিমালা ও বিধিবিধান রয়েছে, কিন্তু এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত গণমাধ্যম নীতিমালা তৈরি হয়নি, যা বাস্তবায়ন ও অনুসরণ করা সহজ হবে।
সভায় বলা হয়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাংবাদিকদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে, অথচ নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে। তাই দ্রুত নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন এবং দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে প্রিন্ট, টেলিভিশন, রেডিও, অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া—সব গণমাধ্যমের জন্য অভিন্ন ওয়েজ বোর্ড করতে হবে।
সভায় সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন নির্ধারণের দাবিও জানানো হয়। বক্তারা বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো সাংবাদিকদেরও সপ্তাহে দুই দিনের ছুটি থাকা প্রয়োজন, কারণ তাদের কাজের সময়সীমা অনির্দিষ্ট এবং মানসিক চাপ দিন দিন বাড়ছে। অন্য এক প্রস্তাবে বলা হয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। আইনি কাঠামো দিয়ে সুরক্ষা না দিলে সাংবাদিক সমাজ রাষ্ট্রযন্ত্রের নিপীড়নের শিকার হতে থাকবে।
সভায় আরও বলা হয়, সংবাদপত্রের ওপর আরোপিত ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ করপোরেট ট্যাক্স হার এই শিল্পকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলছে। যেখানে তৈরি পোশাক শিল্পে করপোরেট ট্যাক্স হার ১৫ শতাংশ। এ অবস্থায় উচ্চ করহার ও অগ্রিম কর আদায় অব্যাহত থাকলে অনেক সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বিএফইউজের সভায় বলা হয়,সংবাদপত্রের ওপর আরোপিত করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহার (২৭ দশমিক ৫ শতাংশ) এই শিল্পকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করে কমিশন। তারা বলছে, তৈরি পোশাকশিল্পে এই হার ১৫ শতাংশ। করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহার ও অগ্রিম কর আদায়ের ধারা অব্যাহত থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্র আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে। এটি শক্তিশালী গণমাধ্যম গড়ে তোলার পথে বড় ধরনের প্রতিবন্ধক। এ জন্য তা অচিরেই অপসারণ করা উচিত।
কিউএনবি/আয়শা/২৫ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১০:৪৪