খোরশেদ আলম বাবুল খোরশেদ আলম বাবুল : ছেলেকে বিয়ে দিয়ে শেষ বয়সে সুখ-শান্তির প্রত্যাশা করে প্রতিটি বাবা-মা। যার ব্যতিক্রম হয়েছে শরীয়তপুর পৌরসভার রূপনগর এলাকায়। শখের পুত্রবধুকে ঘরে এনে শান্তির বদলে অশান্তি বেড়েছে। আক্ষেপ করে এমন কথা বললেন ওই এলাকার তোতা মোল্যার স্ত্রী শাহিদা বেগম।
এই বৃদ্ধ দম্পতি জানায়, পুত্র রুবেল মোল্যা সিঙ্গাপুর প্রবাসে থাকতেন। সেখানে বড় অংকের (২ লাখ টাকা) বেতন পেতেন। তাদের সংসার ভালই চলছিল। আনুষ্ঠানিক ভাবে ২ বছর পূর্বে মাদারীপুর পুরাতন বাজার এলাকার লুৎফর রহমান খানের মেয়ে নিশির সাথে রুবেলের বিয়ে দেন। কণে পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার দিয়ে ধুমধাম করে আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
নিশি পুত্রবধু হয়ে তোতা-শাহিদা দম্পতির ঘরে আসে। বিয়ে পরবর্তী শ্বশুর পরিবারে কিছুদিন ভালই কাটে নিশির। তার পরই নিশি তার পিতা-মাতার পরামর্শ গ্রহণ করে। তাদের কথামতো চলতে গিয়ে স্বামীর সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করতে থাকে নিশি। ইউরোপে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করা সহজ তাই স্বামী রুবেলকে সিঙ্গাপুর থেকে এনে ইউরোপে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাদের সিদ্ধান্তমতে রুবেল ইউরোপের একটি দেশ লিথোনিয়ায় যায়। তারপর থেকে নিশি তার পিত্রালয়ে থাকতে শুরু করে।
শ্বাশুরী শাহিদা বেগম আরো জানায়, পুত্রবধু শ্বশুরালয়ে ২-৪ দিনের জন্য বেড়াতে আসে। শপিং ব্যাগে করে কাপড়চোপর আনে। অথচ তাকে ছোট-বড় দুটো লাগেজ দেওয়া হয়েছে। সেই লাগেজ সে ব্যবহার করে না। যাতায়াত করে ভাইদের মোটর সাইকেলে। যে কয়দিন শ^শুরালয়ে থাকে ততদিন তার কক্ষেই থাকে। আবার যখন তার পিত্রালয়ে যাওয়ার ইচ্ছা হয় তখন ভাইদের খবর দেয়। তারা এসে নিশিকে নিয়ে যায়। আমাদের অনুমতিও নেয় না। নিশি এখন অন্তস্বত্তা। তার সেবা ও বিশ্রাম দরকার। সেজন্য আমাদের কাছে রাখতে চাই। অথচ সে এখন বাচ্চা চায় না তাই রুবেলের সাথে ঝগড়া করে। মাঝে মধ্যে বাচ্চা এ্যাভোশন করতে চায়। রুবেল তাকে দূরের পথে মোটর সাইকেলে যেতে নিষেধ করেছে তাও সে মানে না।
সকল গহনা ও লাগেজ সে তার পিত্রালয়ে রাখে। শাহিদা বেগম বলেন, গত কয়েকদিন হলো নিশি আমাদের বাড়ি বেড়াতে আসে। গত রোববার সকালে পুত্রবধু নিশি, তার ভাই নিয়ন ও ইমন আমার সামনে পড়ে। কখন এসেছে জিজ্ঞেস করতে জানায় কিছুক্ষণ আগে এসেছে। এখন নিশিকে নিয়ে চলে যাবে তারা। আমার সামনে না পড়লে আমাকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজনও মনে করত না। তখন তাদের হাতে থাকা কাপড়ের ব্যাগ আমার সামনে ছুরে ফেলে। বলে ব্যাগ চেক করে দেখেন আমরা কিছু নিয়ে যাচ্ছি কিনা? তখন তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। আমার গাঁয়ে হাতও দিতে চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে আমি তখন দরজা বন্ধ করে দেই।
রুবেলের খালু মোশারফ হোসেন বলেন, বিয়ের সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত ও আনুষ্ঠানিকতা আমার মাধ্যমে হয়েছে। কণে পক্ষের চাহিদা মতে কাবিনের দেনমোহর, স্বর্ণালংকার ও যাবতীয় কিছু দেওয়া হয়েছে। তখন আমরা বুঝতে পারিনি মেয়ের পরিবার এতো লোভী ও চতুর। পরবর্তীতে তাদের আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে। তারা মেয়ে বিয়ে দিয়ে জামাইকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। রুবেল তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পারায় আজ নিশি ও তার পরিবার এই ধরণের আচরণ করে।
কিউএনবি/আয়শা/২০ আগস্ট ২০২৫/সন্ধ্যা ৭:৪৪