শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০২ পূর্বাহ্ন

‎তিস্তার পানি কমলেও দুর্ভোগে ৫ উপজেলার মানুষ

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি ।
  • Update Time : শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫১ Time View

‎জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,  ‎লালমনিরহাট প্রতিনিধি : ‎উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর তিস্তার পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও দুর্ভোগে পড়েছেন লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার মানুষ। ,‎শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেল ৩টায় হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার নিচে। দুপুর ১২টায় তা কমে দাঁড়ায় ২৪ সেন্টিমিটার নিচে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পানিবন্দি মানুষের পরিস্থিতি।

‎তবে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত থাকায় পাঁচ উপজেলার হাজারো মানুষ এখনো পানিবন্দি। গত ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলায় দেখা দিয়েছে বন্যা। এতে নিম্নাঞ্চলের ৩০টি গ্রামের প্রায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

‎বন্যা সতর্কতা কেন্দ্রের তথ্যমতে, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে এবং ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ‎জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে পাটগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী; আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া এবং সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নে পানি ঢুকেছে।

‎স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি কমা-বাড়ার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না, নষ্ট হয়েছে চাষাবাদ, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। গবাদিপশু নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। দেখা দিয়েছে শিশু খাদ্য ও গবাদিপশুর খাবারের সংকট। প্লাবিত হয়ে আছে রাস্তাঘাটসহ ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

‎খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের মাষ্টারপাড়ার সারমিন সুলতানা বলেন, কয়েক দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। আজকে পানি কিছুটা কমলেও কষ্ট করে খালি পায়ে প্রাইভেটে যাচ্ছি। ত্রাণ নয়, আমাদের তিস্তার স্থায়ী সমাধান চাই। ‎পানিবন্দি ফিরোজ হাসান সুরুজ বলেন, পানি ঢুকে পড়ায় চুলা জ্বালানো সম্ভব হয়নি। গবাদিপশু ও পরিবারের লোকদের নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল। পুকুরের মাছও ভেসে গেছে। সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে আমরা রেহাই পাব।

‎পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হলেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। কোথাও পানি কমায় ভাঙন দেখা দিলে দ্রুত সমাধানের জন্য প্রস্তুত আছি। ‎চলতি মৌসুমে এটি তিস্তায় তৃতীয় দফা বন্যা। ২৯ জুলাই প্রথম দফায় এবং ৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। সবশেষ ১৩ আগস্ট থেকে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা আজ থেকে নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৫ আগস্ট ২০২৫/সন্ধ্যা ৬:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit