ডেস্ক নিউজ : এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়েই চলছে। এই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ছিলেন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তথ্য দেয়। কিন্তু ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েও অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হন না।
অনেকে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে যান। ফলে বিভিন্ন ল্যাবরেটরি বা ক্লিনিকে পরীক্ষা করে যাদের ডেঙ্গু পজেটিভ শনাক্ত হচ্ছে, সেই তথ্য দিতে পারছে না সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ। এ কারণে দেশে ঠিক কত মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সেই তথ্য জানা যায় না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৯ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৯ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিনজন রয়েছেন। এ সময় ৩৭৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছরে এ যাবৎ মোট ১৯ হাজার ৩২৯ রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। ৩০ জুলাই পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৫৮ দশমিক সাত শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক তিন শতাংশ নারী রয়েছেন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে এ যাবৎ ডেঙ্গুতে মোট ৮১ জন মারা গেছেন।
ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে এক বছরে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ২০২৩ সালে। এর পরের বছর ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং আগের বছরগুলোর মধ্যে ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২ জন, ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯ জন, ২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ জন এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ৬ হাজার ১৪৪ জন এবং মারা যায় ৫৬ জন। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার একই সময়ে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ২৩৭ শতাংশ বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া গত বছরের তুলনায় এবার একই সময়ে ৪৪ শতাংশের বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যুগান্তরকে বলেছেন, বৃষ্টি-পরবর্তী জমে থাকা পানি এবং বাড়তি তাপমাত্রা মশার বংশবৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে, যা ডেঙ্গুর বিস্তার বাড়িয়ে তুলছে। তাই শুধু সরকারি ব্যবস্থার ওপর না ভরসা করে, ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনতা বজায় রাখা জরুরি।
কিউএনবি/আয়শা/৩০ জুলাই ২০২৫,/রাত ১০:৩০