আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর কয়েক দিন আগে কাশ্মীর নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন আসিম মুনির। তার এসব মন্তব্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান ও আঞ্চলিক উত্তেজনায় তাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিবিসি
জেনারেল মুনিরের বক্তব্য যদিও প্রত্যক্ষভাবে পহেলগাঁওয়ের হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, তবু তার বক্তব্য বিশ্লেষণ করে এটিকে বেশি আগ্রাসী মনোভাবের হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল আসিম মুনিরকে বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়। দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ, সরকারকে ক্ষমতায় বসানো ও অপসারণে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনী নানা ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করা হয়ে থাকে। 
এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী প্রতিবেশী এ দুই দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন তিনি। ২০২২ সালের নভেম্বরে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন জেনারেল মুনির। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাকে প্রকাশ্যে তেমন কথা বলতে শোনা যায়নি। তবে তার একটি বক্তব্য ব্যাপকভাবে মনোযোগ কেড়েছে।
ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’ মুনিরের এ বক্তব্যের মাত্র পাঁচ দিন পর ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের ওই হামলা হয়।
 
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ জশুয়া টি হোয়াইট বলেন, তার (আসিম মুনির) এ বক্তব্য তথাকথিত বাগাড়ম্বর নয়। এটি পাকিস্তানের আদর্শিক অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ঠিক, কিন্তু যে সুরে, বিশেষ করে হিন্দু–মুসলিম পার্থক্য তুলে ধরে তিনি কথা বলেছেন, তা এটিকে বিশেষভাবে উত্তেজক করে তুলেছে।
এর আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে মুজাফফরাবাদে জেনারেল মুনির কাশ্মীর সংহতি দিবসে এক বক্তৃতা দেন। সেখানে তিনি ঘোষণা করেন, কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তান এরই মধ্যে তিনটি যুদ্ধ করেছে। যদি ১০টি যুদ্ধের প্রয়োজন হয়, পাকিস্তান সেটিও করবে।এখন ভারতীয় কর্মকর্তারা জেনারেল আসিম মুনিরের এসব বক্তব্যের সঙ্গে পহেলগাঁওয়ে হামলার যোগসূত্রতার দিকে ইঙ্গিত করছেন। যদিও এ নিয়ে তারা কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি, তবু তার ওই বক্তব্যে ভারতে পাকিস্তানের ব্যাপারে অবিশ্বাস আরও গভীর হয়েছে।
 
 
কিউএনবি/আয়শা/০১ মে ২০২৫, /রাত ১১:৩৩