মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইসরায়েলে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২১ মার্চ, ২০২৫
  • ৮৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তেল আবিব ও জেরুজালেমের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেন। পুলিশ অন্তত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের রাস্তায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।

আয়োজকদের মতে, বিক্ষোভের গতি দেখে মনে হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে আরও বড় আকারে আন্দোলন হতে পারে। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবি জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু সরকার গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে।

বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে। এরপর গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনায় বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাড়ির কাছ থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে চেষ্টা করছে পুলিশ ও অন্য বাহিনীর সদস্যরাছবি: রয়টার্স
যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে বিদেশি সরকারগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে সম্প্রতি আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং গাজায় এখনো হামাসের কাছে জিম্মি থাকা ৫৯ জনের পরিণতি নিয়ে ভাবছে না। ধারণা করা হচ্ছে, জিম্মিদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন।

ব্রাদার্স ইন আর্মস আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী ইতান হার্জেল বলেন, ‘এই সরকার এখন নিজেকে রক্ষা করার জন্য, ইসরায়েলের জনসাধারণকে বিরক্ত করবে, এমন বিষয়গুলো থেকে নজর অন্যদিকে সরানোর জন্য আবারও যুদ্ধ শুরু করেছে। সরকার সম্ভাব্য সব পর্যায়ে সব ধরনের বৈধতা হারিয়েছে। তারা ব্যর্থ হচ্ছে।’

গত বুধবার হাজার হাজার মানুষ জেরুজালেমের মধ্যাঞ্চলে নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের কাছের সড়কগুলোতে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল পতাকা এবং গাজায় এখনো জিম্মি থাকা মানুষদের সমর্থনে লেখা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড। অনেকে ড্রাম বাজাচ্ছিলেন এবং স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘এখনই জিম্মি মুক্তির চুক্তি করুন।’

বিক্ষোভের আয়োজকদের একজন ওরা নাকাশ পেলেড। তিনি নৌবাহিনীর সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি হাইফা শহরের নিকটবর্তী একটি এলাকা থেকে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। জেরুজালেমের উপকণ্ঠে তাঁবুর ভেতর অন্য বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তিনি রাত কাটিয়েছেন। পরে পায়ে হেঁটে শহরটির ভেতর ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কে বিক্ষোভ করেন।

নাকাশ পেলেড বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পেরেছি। আমাদের সংগঠিত হতে হবে, আমাদের অবিচল থাকতে হবে, আমাদের মূল লক্ষ্যে নিবদ্ধ থাকতে হবে। (বিক্ষোভ) সহিংস হওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি এটিকে ভদ্রোচিতও রাখা যায় না।’

বিক্ষোভকারীরা জোরালো কণ্ঠে বলছিলেন, ‘ইসরায়েল তুরস্ক নয়, ইসরায়েল ইরান নয়।’ নেতানিয়াহুর নেওয়া বেশ কিছু সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে ইসরায়েলি গণতন্ত্রের জন্য ‘লাল পতাকা’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এর একটি হলো, বারকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। আরেকটি হলো, অ্যাটর্নি জেনারেল গ্যালি বাহারাভ মিয়ারাকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। মিয়ারা যুক্তি দেখিয়েছেন, বারকে তাঁর পদ থেকে উৎখাত করা হলে তা অবৈধ হতে পারে।

ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের আইনবিশেষজ্ঞ আমির ফুচস বলেন,‘সরকারের বারকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার আছে। তবে এরপরও প্রশাসনিক আইন মেনে চলতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি স্বার্থের সংঘাত দেখা দেয়, তবে সুপ্রিম কোর্ট এটাকে আটকাতে পারে।’

জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিন বেতের বিস্তৃত ক্ষমতা রয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি পুলিশ ‘কাতারগেট’ মামলায় নতুন সন্দেহভাজনদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

এদিকে চলমান দুর্নীতির বিচার শেষে নেতানিয়াহুরও কারাদণ্ড হতে পারে। ৭৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এখন সপ্তাহে দুবার করে আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।

যেসব ভুলত্রুটির কারণে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলা হলো, তার জন্য দায়ী বলে বিবেচিত বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। নেতানিয়াহু নিজে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়াবহ নিরাপত্তা বিপর্যয়ের এ ঘটনায় কোনো দায় স্বীকার করেননি। ইসরায়েলে হামাসের ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। এ ঘটনায় একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো হলেও নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।আলাদাভাবে নিউজ আকারে সাজাও

কিউএনবি/অনিমা/২১ মার্চ ২০২৫,/রাত ৮:২০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit