বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন

রহস্যময় ‘বয়া’ কৌতুহলী মানুষ

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৩২৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : রহস্যময় ‘বয়া’ নিয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠেছে মানুষ। ফসলি জমিতে পাশাপাশি দুটি গোলাকার এই লোহার ‘বয়া’র ৭৮ বছরে এসেও রহস্য কাটেনি। লক্ষ্মীপুর সদরের তেওয়ারীগঞ্জের চরউভূতি গ্রামে এ বয়াগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এখনো। বয়াকে ঘিরেই ওই চরের নামকরণ করা হয়েছে ‘বয়ারচর’। কয়েক যুগ আগে ‘বয়া’কে ঘিরে ছিল রূপকথা। বর্তমান যুগে এসেও ইতিহাস আর বিশ্বাস নিয়ে মনোবাসনা পূর্ণতায় ছুটছেন কেউ কেউ। তবে স্মৃতিময় এ বয়া সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, বহুবছর ধরে খোলা আকাশের নিচে মাথা উঁচু করে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে লোহার দুটি ‘বয়া’। পাশাপাশি অবস্থিত লোহার হাতল ও গোলাকার মোটকা সদৃশ এ বস্তুটিকে ঘিরে কৌতূহলী হয়ে উঠেছে মানুষ। স্থানীয় চরউভূতি গ্রামের এই স্থানে এক সময়ে নদী থাকলেও এখন চারিদিকে বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠে ঘেরা। চরের মাঝামাঝি বছরের পর বছর পড়ে আছে এ বয়াগুলো। বয়ার অবস্থানের পর থেকে চর জেগে উঠায় মানুষের মুখে মুখে রটে যায় ‘বয়ারচর’ হিসেবে।

স্থানীয় বয়োবৃদ্ধসহ এলাকাবাসী জানায়, এই অঞ্চলে এক সময়ে প্রমত্তা ভূলুয়া নদীর অবস্থান ছিল। নদীতে বড় বড় জাহাজ চলাচল করতো। ১৯৪৭ সালে ভয়াবহ ঝড়ে দুটি বয়া এসে আটকে যায় এই স্থানে। এর পর পূর্ব দক্ষিণ দিকে নদীটি সরে গিয়ে এদিক দিয়ে চর জেগে উঠে। বয়াগুলোর অস্তিত্ব ফুটে উঠে। তবে এই বয়া দুটো এখানে আসার পর থেকেই নদী সরে যায় বলে ধারণা করে অলৌাকিক মনে করতেন। বয়াগুলোর অস্তিত্ব মাটির ঠিক কত নিচ থেকে ফুটেছে তা জানা নেই কারও। বয়াগুলো মানুষের কাছে ছিল রহস্যাবৃত। তাই এগুলো নিয়ে রূপকথাও ছিল মুখেমুখে।

রহস্যঘেরা এই বয়া দুটি নিয়ে স্থানীয়দের কাছে কৌতুহলের শেষ নেই। এগুলো কীভাবে কোথা থেকে আসলো অনেকেরই জানা নেই। স্থানীয় অনেক বয়স্করাও ছোটবেলা থেকেই গোলাকার এই দুটি বয়া দেখে আসছেন বলে জানান। তাদের বাপ-দাদার মুখ থেকেই নানান রহস্যময় কাহিনী শুনে আসছেন বলে জানান।
কয়েকজন এলাকবাসী বলেন, ৮০ এর দশকে স্বপ্ন দেখে এক নারী (ধইন্যার মা) ওই এলাকায় বাড়ী নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে বয়ার খেদমত শুরু করেন। তার দেখাদেখি অলৌকিক ভেবে এগুলো ঘিরে মানত আর মিলাদ করতেন অনেকে। উরস পালনও শুরু করা হয়। নগদ টাকাও রেখে যেতেন কেউ কেউ। এসব টাকা রাখালরা নিয়ে খরচ করতেন। পরে স্থানীয়রা লোহার শিকল ভেঙ্গে ফেলে নিয়ে যান।

সম্প্রতি ওই নারী ও তার স্বামী মারা যাওয়ার পর এখন আর দেখার কেউ নেই। তবে এখনো দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ মনোবাসনা পূর্ণ করতে এখানে ছুটে আসেন। কেউ মানত করে বয়ার পাশের মাটি খেয়ে ফিরে যান বলে জানান বয়ার পাশে থাকা বাসিন্দারা।
স্থানীয় শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী সানাউল্যা সানু বলেন, বয়া হলো নেভিগেশন ইকুয়েপমেন্ট। এগুলো লোহার তৈরি শিকল ও অ্যাঙ্কর দিয়ে আটকানো থাকে। যা জাহাজ চলাচলের জন্য বিপজ্জনক ও বিপদমুক্ত পথের নির্দেশনা দিত। এগুলো ১৯৪৭ সালের এক ঝড়ে কোথাও থেকে ছিড়ে এসে এখানে আটকে যায়। এই স্মৃতি চিহ্নটিকে গবেষণার জন্য সংরক্ষণ করা জরুরি বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

কিউএনবি/অনিমা/১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫,/দুপুর ২:৩২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit