বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:২৯ অপরাহ্ন

মানুষের মতো কি প্রাণীরাও ঈর্ষা বোধ করে, কী বলছে গবেষণা!

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ বিস্মিত হয়েছে এই ভেবে যে, মানুষের মতো প্রাণীরাও ঈর্ষা বোধ করে কি না। এদের মধ্যে কি ঈর্ষার মতো অনুভূতি আছে?

সম্প্রতি এই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে’র গবেষণায়। এতে বলেছে, মানুষের মতো প্রাণীরাও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে সাড়া দেয়। তবে এদের আচরণ মানুষের ঈর্ষা বা ন্যায্যতার অনুভূতি থেকে তৈরি নাও হতে পারে।

বানর, পাখি ও কুকুর’সহ ১৮টি প্রজাতির ৬০ হাজারেরও বেশি প্রাণী পর্যবেক্ষণের সঙ্গে জড়িত এমন ২৩টি গবেষণার তথ্য খতিয়ে দেখেছেন ইউসি, বার্কলের গবেষকরা। এ বিশ্লেষণটিকে ‘বৈষম্যর প্রতি বিদ্বেষ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিজ্ঞানীরা, যেখানে অন্যায় আচরণ অপছন্দ বা মেনে না নেওয়ার কথা প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাণীরা কোনোকিছু আশা করে তা না পেলে অবশ্যই সাড়া দেয়। তবে এই সাড়া দেওয়ার বিষয়টি ঈর্ষা বা ন্যায্য আচরণ না পাওয়ার অনুভূতি নয়। অন্য প্রাণী আরও ভাল কিছু পেয়েছে বলে বিরক্ত হওয়ার বদলে এই সাড়াদানের বিষয়টি অপূর্ণ প্রত্যাশা বা হতাশার সঙ্গে যোগ থাকতে পারে প্রাণীদের।

এর আগে প্রাইমেটোলজিস্ট বা জৈবিক নৃবিজ্ঞানী ফ্রান্স ডি ওয়ালের নেতৃত্বে এক আলোচিত গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যায় আচরণের প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় ক্যাপুচিন নামের এক প্রজাতির বানর। এ গবেষণায় একই কাজ শেষ করার জন্য দুটি বানরকে পুরস্কার দেন গবেষকরা। একটি বানর শসা ও অন্যটি পেয়েছিল আঙ্গুর। এরপর শসা পাওয়া বানরটি রেগে গিয়ে তা ছুঁড়ে ফেলে খাঁচা ধরে ঝাঁকুনি দেয়। ওই সময় বানরের এ আচরণকে ঈর্ষা হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন গবেষকরা।

তবে নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, এর অন্য কোনো ব্যাখ্যাও থাকতে পারে। এসব তথ্য আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বলছেন, দুটি বানরকে যখন খালি খাঁচায় রাখা হয়েছিল, যেখানে অন্য কোনও বানর ছিল না তখনও এরা একই রকম সাড়া দিয়েছে। যা থেকে ইঙ্গিত মেলে, এদের প্রতিক্রিয়া অন্যায় বা ঈর্ষার অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং এই অনুভূতি ছিল অপূর্ণ প্রত্যাশা বা হতাশার সঙ্গে জড়িত।

ন্যায্যতা নিয়ে একটি দৃঢ় বোধ রয়েছে মানুষের, যা কেবল অপূর্ণ প্রত্যাশার ওপরই নির্ভর করে না। মানুষের এই ন্যায্যতার বোধ আসলে তৈরি হয় বৈষম্যহীনতার প্রতি অপছন্দ থেকে। এর ফলেই মানুষ তার সম্পদ শেয়ার করে, একে অন্যকে সহযোগিতা করে ও এক পর্যায়ে সমাজের জটিল কাঠামো তৈরি করেছে।

অন্যদিকে প্রাণীরা এদের নিজস্ব চাহিদা বা প্রত্যাশা পূরণ হয় কি না তা নিয়ে আরও বেশি মনোযোগী হতে পারে। এ গবেষণার প্রধান গবেষক ওদেদ রিতভ বলেছেন, প্রাণীদের এই সাড়াদানের বিষয়টি অন্যরা কী পাচ্ছে তা নিয়ে বিরক্ত হওয়ার চেয়ে মানুষের কাছ থেকে এদের খারাপ আচরণ পাওয়ার প্রতিবাদ হিসেবে হতে পারে।

কীভাবে প্রাণী ও মানুষ তাদের সামাজিক আচরণে আলাদা হয় সে সম্পর্কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গবেষণাটিতে। প্রাণীরা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে স্পষ্টভাবে সাড়া দিলেও এদের এসব সাড়াদানের বিষয়টি সম্ভবত ন্যায্যতার গভীর অনুভূতির বদলে তাৎক্ষণিক পরিবেশ ও অতীত অভিজ্ঞতার সঙ্গে যোগসূত্র থাকতে পারে।

গবেষকরা বলেছেন, এসব পার্থক্য আরও ভালভাবে বোঝার মাধ্যমে মানব আচরণের বিবর্তন ও কী আমাদের অন্যান্য প্রাণীদের চেয়ে অনন্য করে তুলেছে সে সম্পর্কে আরও জানা যাবে।

তথ্য সূত্র – স্টাডিফাইন্ডস।

কিউএনবি/অনিমা/১৩ জানুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৩:১২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit