শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

ঘটনার বর্ণনা দিলেন হেনস্তার শিকার সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হেনস্তার শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু। তিনি বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে ফেনিতে ছেলের বাসায়। সেখান থেকে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

ঘটনার বিচার চেয়ে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন, ‘আমাকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলার জন্য লুঙ্গি ধরে টানাটানি করেছে। আমার সঙ্গে এসব করে দেশের সব মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা ও বিবস্ত্র করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ বিচার সরকার ও জাতির কাছে চাইব।’

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ফেনী শহরে ছেলের বাসায় থেকে এসব কথা বলেন তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু বলেন, ‘শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থবোধ করলে বাজারের গিয়ে ফার্মাসিতে বসি। সেখানে ডায়াবেটিস-প্রেশার পরীক্ষা করার সময় আকস্মিক আবুল হাশেম মজুমদার এসে মোটরসাইকেল থেকে নেমে আমার গলা ধরে টান দেয়। পরে সে বলে- তোরে আজকে ছাড়া যাবে না, জীবনের শিক্ষা দিমু। তুই এই এলাকা থেকে তাড়াতাড়ি চলে যা। পরে টেনে আমাকে কুলিয়ারা স্কুলের মাঠের দিকে নিয়ে যায়।’

ঘটনার সত্য উদঘাটনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন আমি তাকে বলেছি, আমি কেনো চলে যাব? ৯ বছর তো এলাকায় ছিলাম না। তারা আমাকে ৫টার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে। হাশেম বলেছে, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দে, না হয় তোরে টুকরো টুকরো করব। ছুরি তো বসিয়েই দিয়েছিল। ওই ভিডিও এখনো পাননি, হয় তো কোনোদিন ছাড়বে, পাবেন।’

বিচার চেয়ে আবদুল হাই কানু বলেন, ‘ভালো লোক ক্ষতিগ্রস্ত হোক, এটার বিরোধিতা করি। লুটতরাজের বিচার চাই। এ সরকারের সময়ে যদি ভালো লোকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তারা কোথায় দাঁড়াবে? আমি কোথায় দাঁড়াব?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতো এ বয়সের লোককে কেন মাঠে এমন করা হলো? কেন লাথি-ঘুষি দেওয়া হলো? কেন পানিতে চুবাতে বলা হলো? কেন জুতার মালা বানিয়ে গলায় দিল?’

এ সময় হাশেমের সঙ্গে ওহিদুর রহমান মজুমদার, রাসেল, নয়ন মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন ছিলেন বলে জানান তিনি।

এই মুক্তিযোদ্ধার দাবি, তাদের সঙ্গে আমার কোনো ধরনের দ্বন্দ্বের কারণ দেখছি না। আমার হয়ত দোষ একটাই, তা হলো আমি মুক্তিযোদ্ধা। তাদের কোনো নির্দেশ আছে কিনা জানি না। আমি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করি।

ঘটনার দিন বিকালে নিরাপত্তার কারণে বাড়ি ছেড়ে ফেনীতে চলে যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে সেখানেই ছেলের বাসায় আছেন। পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে চৌদ্দগ্রামের নিজ বাড়িতে ফেরার কথা বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করেন স্থানীয় কয়েকজন। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কিউএনবি/অনিমা/২৪ ডিসেম্বর ২০২৪,/দুপুর ১২:১৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit