শরীরে পিউরিন নামক একটি যৌগের পরিমাণ বাড়লে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। এবার এই পিউরিন পাওয়া যায় বিভিন্ন কোষকলায়। শরীরে পিউরিন বাড়তে শুরু করলে তখন কিডনি আর এই যৌগটিকে বের করে দিতে পারে না। তখনই এই ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টাল হিসেবে জমতে থাকে।
এখানে বলা দরকার, ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকা হলো একটি বিপাকীয় সমস্যা। এক্ষেত্রে শরীরের বিপাক ক্রিয়া ঠিকমতো না হলে এই জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন।
আসুন জেনে নেয়া যাক ঠিক কী কী কারণে বাড়তে পারে ইউরিক অ্যাসিড-
১. ওজন বেশি: ওজন বেশি থাকা বা ওবেসিটিকে এখন চিকিৎসকরা একটি রোগ হিসেবে দেখেন। ওজন বেশি থাকলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হার্টের রোগের মতো নানা সমস্যা। এ ছাড়া ওজন বেশি থাকার কারণে শরীরে বিপাক ক্রিয়া ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। বিপাক ক্রিয়া নিজের কাজ সঠিকভাবে না করতে পারলে অনেক সময়ই ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। তাই ওজন কমানোর দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।
২. বেশি মাংস খাওয়া: মাংস বেশি খেলে শরীরে বেশকিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনি নিয়মিত মাংস খেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়া স্বাভাবিক। গবেষণায় দেখা গেছে, মাংস বা রেড মিট বেশি খেতে শুরু করলে দেহে পিউরিন বেশি পরিমাণে তৈরি হয়। আর পিউরিন বাড়লে যে ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা বাড়বে, এটা তো মোটামুটি বুঝতেই পারছেন।
৩. দই: দই একটি দারুণ খাবার। এই খাদ্যে ভালো পরিমাণে প্রোবায়োটিক রয়েছে। এই প্রোবায়োটিক খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্তি দিতে পারে। ফলে পেট ভালো রাখার কাজে দই হতে পারে অন্যতম হাতিয়ার। তবে সব খাবার সবার জন্য ভালো নয়। আয়ুর্বেদ বলছে, শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণে বাড়িয়ে দিতে পারে দই। তাই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলে দই কম খান।
৪. মদপান ও ধূমপান: মদ, সিগারেটের মতো নেশা শরীরে নানারকম সমস্যা তৈরি করে। এক্ষেত্রে মদপান বেশি করতে শুরু করলে শরীর থেকে পানি কমে যায়। তাছাড়া এই মদপানের জন্য শরীরে টক্সিন বাড়ে। আর এই দুটি কারণেই বাড়ে ইউরিক অ্যাসিড। অপরদিকে একই বিষয় দেখা যায়, ধূমপানের ক্ষেত্রেও। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ধূমপান বেশি করা মানুষের শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকে। তাই সতর্ক থাকুন। ধূমপান ও মদপানের অভ্যাস ছেড়ে দিন।
৫. ব্যায়াম না করা: ব্যায়াম শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। নিয়মিত ব্যায়াম করতে শুরু করলে মানুষের শরীর থেকে দ্রুত কমে যায় ইউরিক অ্যাসিড। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে চাইলে অবশ্যই করতে হবে ব্যায়াম। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ও সপ্তাহে ৫ দিন ব্য়ায়াম করুন। তবেই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।