সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪৫ অপরাহ্ন

গ্রিসে পুলিশি হেফাজতে বাংলাদেশি যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৬৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে পুলিশি হেফাজতে এক বাংলাদেশি অভিবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ২৯ বছর বয়সী  ওই নাম খালিস মিয়া। গ্রিসের ওমোনিয়া থানা পুলিশ দাবী করছে- রাতে নেশাগ্রস্ত যুবককে আটক করে সেলে রাখা হয়। পরদিন সকালে পুলিশ সদস্যরা আটককৃতকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখতে পান। রহস্যজনক এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছে এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং অভিবাসন সংস্থাগুলো। এ নিয়ে গ্রিসের বিভিন্ন পত্রিকায়ও পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী থানায় ফাঁস লাগিয়ে বাংলাদেশি অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার জালাল উদ্দিনের পুত্র খালিস মিয়াকে এথেন্সের ওমোনিয়া এলাকা থেকে আটক করে নিয়ে যায় ওমোনিয়া থানা পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সেলে তাকে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে জানায় পুলিশ। সেখানে আরও ১১ জন বন্দি ছিলেন। 

অভিবাসীর মৃত্যুর ঘটনা এথেন্সের প্রসিকিউটরকে জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে গ্রিক পুলিশ। এছাড়া একটি মেডিকেল পরীক্ষক এবং ফৌজদারি অধিদপ্তরের একটি ইউনিট বিয়য়টি তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সভাপতি আনোয়ার হোসেন দেওয়ান জানান, ‘স্থানীয় একজন উকিল এবং কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ নিয়ে থানায় পুলিশের কাছে জানতে চাইলে পুলিশ তাদেরকে জানিয়েছে পাটিয়া ভাথিস (যেখানে অনেক বাংলাদেশির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে) সেখানে মারামারির ঘটনায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় ঢোকার পথে গাড়ির দরজায় লাথি মারে এবং পুলিশের গাড়ির কাঁচের আয়না ভেঙে ফেলে সে। নেশাগ্রস্থ থাকায় পুলিশ কোন জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই সরাসরি হাজতে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে কর্তব্যরত পুলিশ তাকে মৃত দেখতে পায়।’

এ বিষয়ে গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনা বলেন, “এ ঘটনায় আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। গ্রিসের মতো দেশে এটি মেনে নেওয়া কষ্টের। কর্তৃপক্ষ আমাদের এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। আমরা তাদের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছি। দূতাবাসের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা দেশে অবস্থানরত তার মায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। পরিবারের সম্মতি মিললে এ ঘটনায় ন্যাবিচার পেতে আমাদের পক্ষ থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হবে।
 
দেশটির অভিবাসন সংস্থা কেরফার পরিচালক এবং এথেন্স মিউনিসিপ্যালিটির কাউন্সিলর পেট্রোস কনস্টান্টিনো বলেন, “গ্রিসে বর্তমানে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশি সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছেন অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীরা। বাংলাদেশি খালিস মিয়াকে আটকের মাত্র দেড় ঘন্টা পর তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা মনে করছি সহিংসতায় তার মৃত্যু হয়েছে।”

পেট্রোস কনস্টান্টিনো আরো বলেন, ‘পুলিশ প্রথমে বলেছিল খালিস মিয়া পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করেছে। আমরা সেই গাড়ি দেখতে চাইলে তারা জানায় সে গাড়ির আয়না ভেঙেছে। তার মানে একটি গাড়ির আয়নার জন্য একজন অভিবাসীর প্রাণ চলে গেল? গত মাসে পাকিস্তানি অভিবাসী কামরানও এভাবে মারা গেল। আমরা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছি এবং প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রত্যাখান করেছি।’ 

এ ঘটনায় সোমবার আটক কেন্দ্র এবং হাজতে মানুষের অধিকার নিয়ে দায়িত্বরত জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেছে কেরফাসহ অভিবাসন ও অধিকার সংগঠনগুলো। 

খালিস মিয়া মৃত্যুর প্রতিবাদে আগামী ১২ অক্টোবর ঘটনাস্থলের সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটি ইন গ্রিস, বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ, অভিবাসন সংস্থা কেরফাসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। 

কিউএনবি/অনিমা/০৮ অক্টোবর ২০২৪,/দুপুর ১:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit