শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বাংলাদেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়াচ্ছেন শোয়েব চৌধুরী: প্রেস উইং অর্থনীতির ভিত সমৃদ্ধ করতে টেকসই সমুদ্রনীতি গড়তে হবে: প্রধান উপদেষ্টা সময় এসেছে দেশকে নতুন করে গড়ে তোলার: মির্জা ফখরুল ফরিদপুরে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু ‘রোগীরা শ্বাসকষ্টে ভুগছে’—বিস্ফোরণের ধোঁয়া নিয়ে উদ্বেগ ইরানে মনিরামপুরে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা খিয়ার মির্জাপুর জামে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন  সংঘাত বন্ধে ইরানকে কূটনৈতিক প্রস্তাব দেবে ফ্রান্স ইরানে হাসপাতালে হামলার প্রমাণ আন্তর্জাতিক সংস্থায় পাঠাবে রেড ক্রিসেন্ট ২০২৪ সালে শিশুদের প্রতি সহিংসতা ‘ভয়াবহ মাত্রায়’: জাতিসংঘ

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা কেন জরুরি

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৫ Time View

স্বাস্থ্য ডেস্ক : উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। সময়মতো রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা না করলে উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক প্রাপ্তবয়স্ক লোক উচ্চ রক্তচাপে ভুগলেও তারা সেটা সম্পর্কে অবগত থাকেন না। বিশ্বব্যাপী প্রতি তিনজনে একজন উচ্চ রক্তচাপের ভোগেন কিন্তু তাদের কোন লক্ষণ থাকে না বলে তারা তা জানেন না।

হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপ কী

আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল করে ধমনির মাধ্যমে। রক্ত চলার সময় ধমনীর দেয়ালে যে চাপ সৃষ্টি হয় সেটাই ব্লাড প্রেসার।

১) হার্টের সংকোচনের সময় হার্ট থেকে রক্ত চলাচলের সময় প্রেসার মাপলে যে রিডিং পাওয়া যায় সেটা সিস্টোলিক ব্লাড প্রেসার।
২) হার্টের প্রসারিত হওয়ার সময় যে প্রেশার পাওয়া যায় তাকে ডায়াস্টলিক প্রেসার।

কারো ব্লাড প্রেসার ১২০/৮০ মিমি পারদ। ১২০ সিস্টোলিক ও ৮০ হলো ডায়াস্টোলিক। হাই ব্লাড প্রেসার ধারাবাহিক প্রেসার যদি ১৪০ ও ৯০ মিলিমিটার পারদের বেশি থাকে তখন তাকে হাই ব্লাড প্রেসার বলে ধরে নেয়া হয়।

কেন হয় ব্লাড প্রেসার

১) শতকরা ৯০-৯৫% ক্ষেত্রে কারন জানা যায়নি তাই তাকে বলা হয় অজ্ঞাত কারণে রক্তচাপ।
২) ৫% ক্ষেত্রে অন্যান্য অঙ্গসমূহের অসুখের কারণে ব্লাড প্রেসার বেশি হয় যেমন-কিডনি, হরমোন জনিত রোগ, অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, স্টেরয়েড সেবনের কারণে।

অনিয়ন্ত্রিত প্রেশারের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে-

১) হার্টের সমস্যা- রক্ত চাপের বিপরীতে হার্ট পাম্প করতে থাকলে হার্টের দেয়ালগুলো অস্বাভাবিক ভাবে পুরু হয়ে তার নিজস্ব রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। করোনারি রক্তনালীতে ব্লক দেখা দেয় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা কমে হার্ট ফেইলিউর হবে। শরীর ফুলে যাবে, বুকে পানি জমা হবে। চলাফেরার সময় শ্বাসকষ্ট হবে- ঘুমানোর সময় কাশি ও শ্বাসকষ্ট হবে।

২) আস্তে আস্তে কিডনির কার্যকারিতা কমে যাবে। কিডনি ফেইলুর হলে ডায়ালাইসিস লাগবে। কিডনি বদল করতে হবে যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন বাধাগ্রস্ত হবে।

৩) মস্তিষ্ক- অতিরিক্ত রক্তচাপ পক্ষাঘাতগ্রস্ত (স্ট্রোক) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। মস্তিষ্কের রক্তনালী ব্লক কিংবা রক্তক্ষরণ হয়ে স্ট্রোক হলে মৃত্যু  কিংবা সারা জীবন পঙ্গু হয়ে বেঁচে থাকতে হবে।

৪) চোখ- রেটিনাতে রক্তনালী পরিবর্তিত হয়ে রেটিনোপ্যাথি হলে দৃষ্টি শক্তি কমে যাবে কিংবা অন্ধ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।

৫) প্রান্তিক রক্তনালী – প্রান্তিক রক্তনালী চিকন হওয়ার কারণে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে পায়ে গ্যাংগ্রিন তৈরি করতে পারে।

৬) মহা ধমনী-  বুকের ও পেটের মহা ধমনী অত্যধিক প্রসারিত হয়ে এনিউরিজম সৃষ্টি করে সেটি ফেটে গিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করতে পারে।

করণীয় 

ডাক্তারের চেম্বার ও বাসায় কয়েকদিন প্রেশার মাপার পর যদি ১৪০ বাই ৯০ এর বেশি থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কারণ নির্ধারণ করতে হবে। কিছু কিছু পরীক্ষা যেমন ইউরিন আর/ই,সেরাম ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, সুগার প্রোফাইল টেস্ট করতে হবে ।

ব্লাড প্রেসার হলে কী পরিহার করবেন?

১)ধূমপান পরিহার করুন।
২) ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন।
৩) ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম করুন – যেমন ৩০ মিনিট জোরে হাটা, সাঁতার কাটা ইত্যাদি।
৪) ডাক্তারের নির্দেশিত ঔষধ নিয়মিত সেবন করুন। 
৫) কমপক্ষে সপ্তাহে একদিন প্রেসার মেপে লিখে রাখুন।
৬) প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো শরীরের জন্য ভালো।
৭) খাদ্যে লবনের পরিমাণ কমিয়ে দিন। অত্যধিক লবনাক্ত খাবার পরিহার করুন।
৮) লাল মাংস ও চর্বিযুক্ত খাবার বর্জন করুন।
৯) স্ট্রেস কমিয়ে ফেলুন এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করুন। 
১০) অন্যান্য অসুখ, যেমন হাই কোলেস্টেরল থাকলে খাওয়া নিয়ন্ত্রণ ও ঔষধ সেবন করুন, ডাইবেটিস থাকলে খাদ্যাভাস, ব্যায়াম ও ঔষুধের মাধ্যমে কন্ট্রোল রাখুন। 

আপনি আপনার টার্গেট ব্লাড প্রেসারে আছেন কিনা সেটা খেয়াল করুন। সাধারণত ১৩০/৮০ হলো আইডিয়াল ব্লাড প্রেসার। কিন্তু যদি আপনি কিডনি রোগে ভোগেন অথবা হার্টের রোগে ভোগেন তাহলে ১২০ বাই ৭৫ হলো আইডিয়াল প্রেসার।

ফলো আপ- তিন থেকে ছয় মাস পর ব্লাড সুগার, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করুন এবং প্রয়োজনে ইসিজি পরীক্ষা করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

বয়স ৩৫-৪০ হলে ৩-৬ মাস পর প্রেসার চেক করুন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিন।

সর্বশেষ কথা সামান্য সচেতনতা, লাইফস্টাইলের কিছু পরিবর্তন, প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম ও ডাক্তার নির্দেশিত ঔষধ নিয়মিত সেবন করলে ভালো থাকবেন।

লেখক: অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০, ঢাকা।

কিউএনবি/অনিমা/২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/সকাল ১০:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit