মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন

ভয়াবহ বন্যার ৪ কারণ জানালেন আবহাওয়াবিদ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ১০৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : অতি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বাংলাদেশের মোট ১২টি জেলায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। যার ফলে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। এমনকি পানি উঠেছে মহাসড়ক ও রেললাইনে। এমতাবস্থায় ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। পানিবন্দি ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন ৩৬ লাখ মানুষ। 

জেলাগুলো হলো- ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। বন্যার্তদের সহায়তায় পাঁচ জেলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণ করছেন সেনাসদস্যরা। দেশে হঠাৎ ভয়াবহ বন্যার বিষয়ে চার কারণ জানালেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। 

এগুলোর মধ্যে প্রথমত হচ্ছে- মৌসুমী লঘুচাপটি বাংলাদেশের উপর স্থায়ী হয়ে আছে। বুধবার (২১ আগস্ট) বিকালেও এ লঘুচাপটি চট্টগ্রামের অংশে অবস্থান করছিল যা পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছিল না। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানা গেছে।

দ্বিতীয়ত, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে খুবই শক্তিশালীভাবে ম্যাডেন-জুলিয়ান অসিলেশন (এমজেও) অবস্থান করছে। এর ফলে সাগরে নিয়মিত গরম ও আর্দ্র বাতাস তৈরি হচ্ছে, যা উপকূলের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। তৃতীয়ত, মধ্য এশিয়ার উপরিভাগে এখন ‘জেট স্ট্রিম’ অবস্থান করছে। এর ফলে ভারতসহ বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

চতুর্থত, বন্যা ভয়াবহ রূপ নেয়ার পিছনে ভারতের বাঁধ খুলে দেয়াটা অন্যতম কারণ। ভারতীয় অংশেও ভারী এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বিপৎসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় উজানের এই দেশটিও বন্যার কবলে পড়েছে। প্রতি বছর ভারত বন্যার আক্রান্ত হলেই বাঁধ খুলে দেয়। এ বছরও তারা কোথাও কোথাও বাঁধ খুলে দিয়েছে এবং কিছু জায়গায় অতিরিক্ত পানির কারণে বাঁধের গেটগুলো ভেঙে গেছে।

মোস্তফা কামাল পলাশ ব্যাখ্যা করেছেন, ওপরের তিনটি কারণ একই সঙ্গে ঘটলে তখন ওই এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে যায় এবং এর ফলে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার সৃষ্টি হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে পলাশ সতর্ক করে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১০০-৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আগামী শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে এই বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

দেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ আগস্ট থেকে টানা তিন দিন দেশের পূর্বাঞ্চলে অতি ভারি বৃষ্টি হয়েছে, যা গত ৫৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে বাংলাদেশের আটটি জেলা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। অনেকের মতে, হঠাৎ অতিভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢল, জলাশয় ভরাট এবং পানি সরে যাওয়ার জলপথ সংকুচিত হওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি খুব দ্রুত ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে সাধারণত পূর্বাঞ্চলে এত ভারি বৃষ্টি হয় না। বিশেষ করে মাসের শেষের দিকে টানা বৃষ্টি হলেও তা মূলত দেশের উপকূলীয় এলাকা থেকে মধ্যাঞ্চলজুড়ে থাকে। আগস্টে এর আগেও ফেনী ও কুমিল্লায় অতিভারি বৃষ্টি হয়েছে; কিন্তু তা এক–দুই দিনের বেশি স্থায়ী হয়নি। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে গত এক মাসে থেমে থেমে অতি ভারি বৃষ্টি হয়েছে। গত মাসের শেষ সপ্তাহে ওই অঞ্চলের বেশির ভাগ জেলায় ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও ভারি বৃষ্টি ঝরেছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৩ অগাস্ট ২০২৪,/দুপুর ১২:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit